ইউক্রেন সংকট নিয়ে লন্ডনে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে চারটি পদক্ষেপের বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। তিনি বলেন, চারটি পদক্ষেপ ইউক্রেনের পক্ষে নেওয়া হয়েছে।

রোববার লন্ডনের ল্যাংকেস্টার হাউসে সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান। 

সংবাদ সম্মেলনে কিয়ার স্টারমার বলেন, ইউক্রেনকে সহায়তার জন্য নতুন যেকোনো চুক্তি অবশ্যই জোরালো হতে হবে। আর সব দেশকে নিজেদের সর্বোচ্চ সক্ষমতা অনুযায়ী ভূমিকা রাখতে হবে। তাদের দায়িত্ব নিতে হবে এবং নিজেদের দায়িত্ব বাড়াতে হবে।

সম্মেলনে ঐকমত্য হওয়ার চারটি পদক্ষেপ হলো—যুদ্ধ চলাকালে ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে হবে এবং রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক চাপ বৃদ্ধি করতে হবে; স্থায়ী শান্তির ক্ষেত্রে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং যেকোনো শান্তি আলোচনার টেবিলে ইউক্রেনকে অবশ্যই রাখতে হবে; শান্তিচুক্তির ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ ঠেকানোর লক্ষ্যে কাজ করতে হবে ইউরোপের নেতাদের; ইউক্রেনের সুরক্ষার জন্য একটি জোট গঠন করতে হবে এবং দেশটিতে শান্তি নিশ্চিত করতে হবে।

এর পাশাপাশি রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য ইউক্রেনকে ১৬০ কোটি পাউন্ড দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কিয়ার স্টারমার। যুক্তরাজ্যের দেওয়া এই অর্থ খরচ করে ইউক্রেনের জন্য পাঁচ হাজারের বেশি ক্ষেপণাস্ত্র কেনা হবে। ওই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষার কাজে ব্যবহার করা হবে।

তিন বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র এত দিন ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় সহায়তাকারী দেশ হলেও ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। এর মধ্যে গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে জেলেনস্কির বৈঠকে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। ওই বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি হওয়ার কথা থাকলেও হয়নি। বাতিল করা হয় দুই প্রেসিডেন্টের যৌথ সংবাদ সম্মেলন। 

এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেন নিয়ে লন্ডনে এই সম্মেলনে যোগ দেন এত দিন যুদ্ধে কিয়েভকে সমর্থন ও সহায়তা জুগিয়ে আসা দেশটির পশ্চিমা মিত্রদেশগুলো। এই সম্মেলনের আয়োজন করেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। 

আজকের সম্মেলনে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও জোটের নেতাদের পাশাপাশি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো অংশ নেন। সূত্র-বিবিসি 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউক র ন ইউক র ন র পদক ষ প র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ঘুমের ওষুধ খাইয়ে স্বামীকে হত্যা, ফাঁদ পেতে ধরা হলো প্রেমিককে

পাবনার চাটমোহর উপজেলার কাটেঙ্গা গ্রামে ক্যানসার আক্রান্ত স্বামীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে। 
দশদিন পর ঘটনা জানাজানি হলে  অভিযুক্ত স্ত্রী শারমিন খাতুন ও তার প্রেমিককে আটক করে পুলিশ। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে ঘটনাটি জানায়। 

এর আগে গত ৩০ নভেম্বর চাটমোহরের দক্ষিণপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত স্বামী শের আলী (৩৫) দক্ষিণপাড়া গ্রামের ভোলা প্রামানিকের ছেলে। শারমিন খাতুন (২৬) কাটেঙ্গা গ্রামের শাহ আলমের মেয়ে। এবং তার প্রেমিক অনিক (২২) একইগ্রামের মহাজন সরকারের ছেলে। 

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ নভেম্বর শের আলীর মৃত্যু হয়। তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। তার মৃত্যুর পর বিষয়টি স্বাভাবিক হিসেবে শুরুতে মেনে নিলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুকে ঘিরে পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দেয়।
জানা যায়, শের আলীর চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও ইউটিউবারদের মাধ্যমে চিকিৎসা সহায়তার অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে, সেই অর্থের একটি বড় অংশ শারমিন অনিককে দিয়েছেন। 

মৃত শের আলীর ফুপাতো ভাই এনামুল হোমেনের দাবি, শারমিন ও অনিকের মধ্যে ফেসবুক মেসেঞ্জারে হওয়া কথোপকথন ঘেঁটে টাকা লেনদেনের একাধিক তথ্য পাওয়া গেছে। সেখান থেকেই প্রথম সন্দেহের সূত্রপাত। 

এরপর ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে পরিবারের সদস্যরা কৌশল অবলম্বন করেন। শারমিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে অনিককে টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আসতে বলে মেসেজ পাঠানো হয়। অনিক এই ফাঁদে পা দেন।  

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে অনিকে টাকা নিতে এলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে অসংলগ্ন বক্তব্য ও পরস্পরবিরোধী তথ্য দিলে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। পরে অনিক ও শারমিন স্বীকার করেন, প্রায় চার মাস ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। 

শারমিন এ সময় জানান, গত ৩০ নভেম্বর একসঙ্গে দশটি ঘুমের ওষুধ শের আলীকে তিনি খাইয়েছিলেন। এতে শের আলীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে এবং কিছু সময়ের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। 

শের আলীর মা শিরীনা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘‘আমার অসুস্থ ছেলেকে ওর বউ ঘুমের ওষুধ খাইয়েছে। সে সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে এসে দেখি আমার ছেলে আর বেঁচে নেই। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’’

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘মৃত ব্যক্তির পরিবারে পক্ষ থেকে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি বা মামলা করেনি। যেহেতু ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে আটক করা হয়েছে, সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাদের পাবনা আদালতে সোপর্দ করেছে।’’ 

ঢাকা/শাহীন//

সম্পর্কিত নিবন্ধ