রাবির তথ্য অফিসার পদে নিয়োগ পেলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের 'পৃষ্ঠপোষক'
Published: 3rd, March 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরে অনুসন্ধান কাম তথ্য কর্মকর্তা পদে অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগ পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের ‘পৃষ্ঠপোষক’ রাশেদুল ইসলাম ওরফে রাশেদ রাজন। সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে এ নিয়োগ দেওয়া হয়।
তার নিয়োগের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয়। শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘রাশেদুলকে কোনো কোটায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে।’
অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়, 'রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ দপ্তরে টাকা ২২,০০০-৫৩০৬০/- বেতনস্কেলে মাসিক টাকা ২৩, ১০০/- (তেইশ হাজার একশত) টাকা মাত্র বেতনে অনুসন্ধান কাম তথ্য অফিসার পদে অ্যাডহক ভিত্তিতে ০৬ (ছয়) মাসের জন্য নিয়োগ করা হলো। এ নিয়োগ যোগদানের তারিখ থেকে কার্যকর হবে।'
নিয়োগপ্রাপ্ত রাশেদুল ইসলাম (রাশেদ রাজন) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগ থেকে ২০১৯ সালে স্নাতক (সম্মান) চূড়ান্ত পরীক্ষায় ২.
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ‘কোনো দপ্তরে যদি লোকবল সংকট হয়, তবে সেই দপ্তর থেকে উপাচার্যের কাছে লোকবল নিয়োগের জন্য চাহিদাপত্র দেওয়া হয়। তবে নিয়োগ সার্কুলার দিতে বিলম্ব হলে উপাচার্য জরুরি ভিত্তিতে অ্যাডহক নিয়োগ দিতে পারেন। তবে অবশ্যই যোগ্য ও অভিজ্ঞ কাউকে নিয়োগ দিতে হবে।’
নিয়োগের বিষয়টি সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক মন্তব্য করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি রাকিব হোসেন বলেন, ‘এটি একটি অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের আধিপত্য ধরে রাখার জন্য নিয়োগ দিয়েছে। তাকে কোনো কোটায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে।’
'রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার' নামের ফেসবুক গ্রুপে আহসান হাবিব নামের এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে দুই হাজারের বেশি মানুষের জীবন দিয়ে লাভ কী হলো? মুক্তিযোদ্ধা কোটা বিলোপ করে আবার সমন্বয়ক কোটা চালু করা হলো। কোন বিজ্ঞপ্তি ও পরীক্ষা ছাড়াই কিভাবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ম শ্রেণীর চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয়?’
এই বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাউকে নিয়োগ দেওয়া হলে, তার বিষয়টি বিশেষভাবে খতিয়ে দেখতে হবে। তাকে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখতে হবে। আর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করে অ্যাডহকে এত তড়িঘড়ি করে নিয়োগ দিতে হবে কেন?’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, ‘রাবি প্রশাসন কোন সার্কুলার দিয়েছিল কিনা আমরা জানি না। সমন্বয়কদের কোন কোটায় চাকুরি দিচ্ছে সেটাও আমাদের বোধগম্য নয়। কাউকে পুরস্কৃত করছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখার বিষয়। চাকরির একমাত্র মানদণ্ড হোক মেধা। এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’
এ নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ বলেন, ‘উপাচার্যের আদেশেই রাশেদুল ইসলামকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাকে অ্যাডহক ভিত্তিতে আগামী ছয় মাসের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, মিডিয়ার ব্যাপারে তার যে জানা ও অভিজ্ঞতা রয়েছে সে জায়গা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবদান রাখার সুযোগ রয়েছে। আমি আমার বিবেচনায় রাশেদ রাজনকে নিয়োগ দিয়েছি। আমার ধারণা তিনি তার যোগ্যতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারবেন।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র শ দ ল ইসল ম উপ চ র য অ য ডহক র জন য র সমন
এছাড়াও পড়ুন:
স্বামী-সন্তানের সঙ্গে বান্দরবানে বেড়াতে যাচ্ছিলেন, মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে বাসের চাকায় মৃত্যু নারীর
চট্টগ্রামের পটিয়ায় মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ার পর বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত নারীর নাম ফজিলাতুন নেসা (২৮)। তিনি মাগুরা জেলার মহম্মদপুর থানার মহেশপুর গ্রামের আলিমুজ্জামান সুজনের স্ত্রী।
পুলিশ জানায়, স্বামীর সঙ্গে মোটরসাইকেলে গতকাল রোববার চট্টগ্রামে বেড়াতে আসেন ফজিলাতুন নেসা। তাঁদের ছয় বছর বয়সী সন্তানও সঙ্গে ছিল। গতকাল চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাটের একটি বাসায় তাঁরা রাত্রিযাপন করেন। সকালে সেখান থেকে মোটরসাইকেলে করে তাঁরা বান্দরবানের উদ্দেশে রওনা দেন। আলিমুজ্জামান মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন এবং তাঁর পেছনে ছয় বছর বয়সী সন্তান হুমায়ের হাম্মাদ, এরপর ফজিলাতুন নেসা বসে ছিলেন।
সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়ার নয়াহাট এলাকায় পৌঁছায় মোটরসাইকেলটি। সেখানে সামনে থাকা একটি লেগুনা হঠাৎ সড়কে থেমে গেলে তাৎক্ষণিক মোটরসাইকেলটির ব্রেক কষেন আলিমুজ্জামান। এ সময় ফজিলাতুননেসা মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়েন। এর পরপরই পেছন থেকে একটি যাত্রীবাহী বাস ফজিলাতুন নেসাকে পিষ্ট করে। তাঁকে উদ্ধার করে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
গতকাল রাতে চট্টগ্রাম নগরের যে বাসাটিতে ফজিলাতুন নেসা ছিলেন, সেটি তাঁর স্বামী আলিমুজ্জামানের বন্ধু রবিউল ইসলামের। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রবিউল ইসলামের বোন আশরিফা আহমদ ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ফজিলাতুন নেসার স্বামী নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির কনিষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক। পরিবার নিয়ে পাহাড় দেখতে বান্দরবানে বেড়াতে যাচ্ছিলেন তিনি। বেড়াতে যাওয়ার পথেই স্বামী-সন্তানের সামনে দুর্ঘটনায় তাঁর প্রাণহানি হয়েছে।
পটিয়া ক্রসিং হাইওয়ে থানার সার্জেন্ট ওয়াসিম আরাফাত দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নিহত নারীর লাশ আইনি–প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। লেগুনা ও বাসের চালককে আটক করা সম্ভব হয়নি।