ছাত্র হত্যা মামলার আসামি গোলাম মর্তুজা গ্রেপ্তার
Published: 4th, March 2025 GMT
ছাত্র হত্যা মামলার আসামি পল্লবী থানা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য গোলাম মর্তুজাকে (৫৫) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় দায়ের করা একটি মামলায় সোমবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মঙ্গলবার সকালে তাকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি মো. হাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গোলাম মর্তুজা উত্তরা পশ্চিম থানায় দায়ের করা ৮ নম্বর মামলার ১৪৮ নম্বর আসামি।
জানা যায়, গোলাম মর্তুজাকে পল্লবীর আলাদ্দিটেক সরকার আবাসিক এলাকা হতে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১ এর একটি দল। উত্তরা পশ্চিম থানার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কর্তৃক অধিযাচনপত্রের আলোকে এজাহারনামীয় আসামি তিনি। জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে উত্তরা পশ্চিম থানার অধিযাচনপত্রের মামলার সঙ্গে সব তথ্য মিলে যায় ও নাম-ঠিকানা প্রকাশ করে।
মঙ্গলবার র্যাব-১ এর পক্ষ থেকে এসআই শেখ মো.
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গ্রেপ্তার গোলাম মর্তুজা পল্লবীতে জমি দখল এবং চাঁদাবাজির জন্য আলাদা কিশোর গ্যাং পরিচালনা করে আসছিলেন। গোলাম মর্তুজার বাবা হাজী কাবিল হোসেন সরকার পল্লবীর মুসলিম বাজারের সভাপতি ছিলেন। মুসলিম বাজারের সভাপতি থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে দুদকসহ কয়েকটি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। ইলিয়াস মোল্লার অন্যতন সহযোগী গোলাম মর্তুজা।
প্রসঙ্গত, পল্লবী থানা এবং ক্যান্টনমেন্ট থানার আওতাধীন জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত নিরপরাধ ছাত্র-জনতার ওপর বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের পক্ষ থেকে যত হামলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির নেপথ্যে গোলাম মর্তুজা অন্যতম ইন্ধন ও অর্থদাতা বলে অভিযোগ রয়েছে। গত ৫ আগস্ট হত্যাযজ্ঞকে কেন্দ্র করে ঢাকার বিভিন্ন থানায় মর্তুজার নামে ৪টি মামলা হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।