সিদ্ধিরগঞ্জে বৈষম্য বিরুধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা চেষ্টার আসামি ওসমান গ্রেপ্তার
Published: 5th, March 2025 GMT
সোনারগাঁ থানায় দায়ের করা বৈষম্য বিরুধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা চেষ্টার মামলার অন্যতম আসামি ওসমান গনীকে সিদ্ধিরগঞ্জে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ডিউটি অফিসার জানায়, সোনারগাঁও থানা থেকে পুলিশ এসেছিলো। তারা এবং সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পুলিশ মিলে ওই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। আটককৃত ওসমান গনীকে আবার সোনারগাঁও থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওসমান গনী সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় এলাকায় মৃত আব্দুল আলীর ছেলে
জানা গেছে, গেল ২০২৪ সালের ২০ জুলাই ঢাকা সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুর সেনপাড়া এলাকায় সিনহা গার্মেন্টস এর সামনে রুহুল আমিনকে হত্যা চেষ্টা মামলায় এজহারভুক্ত আসামি ওসমান গণী।
এ মামলায় প্রধান আসামী করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে আসামী করে রুহুল আমিন বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন। মামলা নাম্বার-১০। মামলায় ওসমান গনী ১৫৯ নাম্বার এজহার ভুক্ত আসামি।
এদিকে ওসমান গনি গ্রেপ্তারের পর তাকে ছাড়িয়ে নিতে একটি পক্ষ সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় গিয়ে নানাভাবে চেষ্টা চালিয়েছে বলে জানা গেছে। আওয়ামীলীগে তার কোন পদ না থাকলেও আওয়ামী কর্মী হিসেবে সকল মিছিল-মিটিংয়ে সক্রিয় ছিল ওসমান গনি।
সে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের আহবায়কও সাবেক নাসিক ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহাজালাল বাদলের অন্যতম সহযোগী। আওয়ামী দোসর বাদল, শাহ নিজাম, মহিউদ্দিন মোল্লার ঘনিষ্ঠ সহচর ছিল ওসমান গনি।
বিগত সরকারের আমলে বাদল, মহিউদ্দিন মোল্লার হয়ে ৩নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় নির্বিঘ্নে ভূমিদস্যূতা চালিয়েছে ওসমান গনি। তার বিরুদ্ধে এলাকায় ভূমিদস্যুতার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। ভূমিদস্যুতা করে অঢেল সম্পত্তি বানিয়েছে তিনি।
সানারপাড় এলাকার বাসিন্দা আফরাফ উদ্দিন জানান, ওসমান গনী এলাকায় একজন ভুমিদস্যু হিসেবে পরিচিত। জাল দলিল করে মানুষের জমাজমি দখল করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি।
এছাড়া নিরীহ লোকদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তিনি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের তিন নাম্বার ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শাহজালাল বাদলের সহযোগী।
মামলার বাদি রুহুল আমিন জানান, আমি কাঁচপুর সিনহা গার্মেন্টস এলাকা থেকে আসার সময় ওসমান গনীর নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা স্বশস্ত্র অবস্থায় আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি চালায়। এসময় ওদের ছোড়া গুলি আমার পায়ে লাগে। আজও আমি এই পা নিয়ে বিছানায় কাতরাচ্ছি। আমি ওসমান গণীর সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাই।
সোনারগাঁ থানার অফিসার্স ইনচার্জ আব্দুল বারী জানান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা চেষ্টা মামলায় ওসমান গনীকে সিদ্ধিরগঞ্জ সানারপাড় এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ মামলার বাদী রুহুল আমিন। তাকে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় এজহার ভুক্ত আসামী ওসমান গনী।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ থ ন গ র প ত র কর র হ ল আম ন ওসম ন গ এল ক য়
এছাড়াও পড়ুন:
ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি।
লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
ঢাকা/অনিক/রফিক