সন্তানদের ভবিষ্যতের জন্য আবদুস সামাদরা গুলির সামনে বুক পেতে দিয়েছিলেন: হাসনাত আবদুল্লাহ
Published: 5th, March 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘সন্তানদের একটি ভালো ভবিষ্যতের জন্য আবদুস সামাদরা বুক পেতে দিয়েছিলেন গুলির সামনে। তাই দেশকে গড়ার দায়িত্ব আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে নিতে হবে। এটা একজন–দুজনের কাজ নয়। যে যেই ব্যানারেই হোক না কেন, যে মতাদর্শের লোকই হোক না কেন, দিন শেষে আমরা সবাই দেশকে ভালোবাসি। এই যে সামাদ ভাই দেবীদ্বারকে ধারণ করে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন, আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সামাদ ভাইদের স্বপ্ন, ফ্যাসিবাদমুক্ত একটি সুন্দর দেবীদ্বার গড়তে হবে।’
কুমিল্লার দেবীদ্বারে গত ৫ আগস্ট গুলিবিদ্ধ আবদুস সামাদের হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর পর আজ বুধবার সকালে জানাজার আগে দেওয়া বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন হাসনাত আবদুল্লাহ।
আবদুস সামাদ (৫২) ছিলেন দেবীদ্বার উপজেলার ধামতী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের দিন দেবীদ্বার থানা ঘেরাওকালে স্থানীয় রেয়াজ উদ্দিন সরকারি মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে পায়ে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। এর পর থেকে সাত মাস হাসপাতাল ও বাড়িতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মঙ্গলবার বিকেল তিনটার দিকে রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। আজ সকালে ধামতী এলাকার হাবিবুর রহমান উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
হাসনাত আবদুল্লাহ তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘নিহত সামাদ ভাইয়ের পরিবারের দায়িত্ব আমরা নিচ্ছি। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে তাঁর পরিবারের যেসব সুযোগ-সুবিধা দরকার তা নিশ্চিত করব। শহীদ পরিবারের জন্য যে ফান্ড গঠন করা হয়েছে জুলাই ফাউন্ডেশন, সেটি থেকে তাদের যে প্রাপ্য রয়েছে সেগুলো নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব করা হবে।’
জানাজায় কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এ এফ এম তারেক মুন্সী, উত্তর জেলা জামায়েত ইসলামীর সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম (শহীদ), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হাসনাত খান, দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছসহ রাজনৈতিক, সামাজিকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ স স ম দ
এছাড়াও পড়ুন:
বিবিসির বিশ্লেষণ: শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় কেন ভারতকে বিব্রত করবে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ভারতকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিবিসির গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স রিপোর্টার অ্যানবারাসান ইথিরাজান।
তিনি লিখেছেন, এখন আশা করা হচ্ছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হাসিনাকে ফেরানোর জন্য প্রত্যর্পণের অনুরোধ পাঠাবে। ২০২৪ সালের আগস্টে দেশ ছাড়ার পর থেকে তিনি ভারতে বসবাস করছেন।
আরো পড়ুন:
শেখ হাসিনার রায় নিয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া
বিচার স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিকমানের, প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই: জামায়াত
ঢাকার আগের দাবিগুলোর জবাব ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে দেয়নি। দুই দেশের মধ্যে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তিও রয়েছে।
তবে আইনি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি মনে হয় হাসিনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা সৎউদ্দেশ্যে করা হয়নি, তাহলে ভারত সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারে।
ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়ে তিনি ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। ভারতে তাকে ফেরত না পাঠানোর ব্যাপারে দেশটির সর্বদলীয় রাজনৈতিক পর্যায়েও এক ধরনের ঐকমত্য রয়েছে।
দিল্লির কাছে বাংলাদেশ শুধু প্রতিবেশী নয়, এটি কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য।
অ্যানবারাসান ইথিরাজান লিখেছেন, ভারত যেন টানটান করে বাঁধা দড়ির ওপর হাঁটছে; কারণ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে অস্বীকার করলে তা কূটনৈতিক অবজ্ঞা হিসেবে দেখা যেতে পারে, যা দুই দেশের সম্পর্ককে আরো খারাপ করতে পারে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে মামলায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এর আগে গত ১৩ নভেম্বর রায় ঘোষণার জন্য আজকের তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত।
ঢাকা/রাসেল