ছিনতাই চেষ্টার অভিযোগে পুলিশের এএসআই সাময়িক বরখাস্ত
Published: 6th, March 2025 GMT
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ছিনতাই চেষ্টার অভিযোগে পুলিশের এক সহকারী উপ-পরিদর্শককে (এএসআই) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বুধবার (৫ মার্চ) দিবাগত রাতে সদর উপজেলার হোসেনডাইং এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার নাম ফিরোজ রানা। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এএনএম ওয়াসিম ফিরোজ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘‘ছিনতাই চেষ্টার অভিযোগ উঠা পুলিশের এএসআই ফিরোজ রানাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া, এ ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার দিবাগত রাতে এএসআই ফিরোজসহ তিন জন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের হোসেনডাইং এলাকায় একটি মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের চেষ্টা করছিলেন। ছিনতাইয়ের কবলে পড়া ওই ব্যক্তি দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গ্রামের লোকজনকে অবগত করেন। পরে গ্রামের লোকজন ধাওয়া দিয়ে ফিরোজকে ধরে ফেলেন। এ সময় পালিয়ে যান তার সঙ্গে থাকা বাকি দুই জন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, ‘‘স্থানীয়রা ফিরোজকে ধরার পরে তিনি নিজেকে পুলিশ সদস্য পরিচয় দেন এবং সঙ্গে থাকা পরিচয়পত্র দেখান। খবর পেয়ে থানা ও গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।’’
ঢাকা/শিয়াম/রাজীব
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ইনব বগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’
ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।
হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।
আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’
গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’
আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই।