মাগুরায় ধর্ষণের ঘটনার নিহত শিশুটির মরদেহ রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল-সিএমএইচ থেকে গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয়েছে। মরদেহ মাগুরা পৌঁছানোর পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শহরের নোমানী ময়দানে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেয় হাজারো মানুষ। পরে মরদেহ গ্রামে নেওয়া হয়। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে রাতেই তাকে স্থানীয় গোরস্থানে দাফন করার কথা রয়েছে।

এর আগে আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে রাজধানীর তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর থেকে সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার শিশুটির মরদেহ নিয়ে রওনা হয়। সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে মাগুরা স্টেডিয়ামে পৌঁছায়।

এ সময় সঙ্গে ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠন হাসনাত আব্দুল্লাহ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, মাগুরা জেলা প্রশাসক অহিদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা প্রমুখ।

দীর্ঘ কয়েকদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় আট বছর বয়সী শিশুটি।

হাসপাতালের শিশু বিভাগের শিশুরোগের চিকিৎসাসংক্রান্ত নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (পিআইসিইউ) চিকিৎসা চলছিল তার। গতকাল বুধবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারবার ও বৃহস্পতিবার আরও দু‘বার ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ (আকস্মিকভাবে হৃৎস্পন্দন বন্ধ) হয় শিশুটির।

আট বছরের শিশুটি ৫ মার্চ মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে গভীর রাতে ধর্ষণের শিকার হয়। শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে স্থানান্তর করা হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তার অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। পরে বৃহস্পতিবার রাতে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার রাতে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। অবস্থার আরও অবনতি হলে শনিবার (৮ মার্চ) বিকেলে শিশুটিকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার চিকিৎসা চলছিল। 

ধর্ষণের ঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে চারজনের নামে মামলা করেন। ধর্ষণের অভিযোগে শিশুটির ভগ্নিপতি সজিব (১৮), সজীবের ভাই রাতুল (১৭), তাদের বাবা হিটু মিয়া (৪২) ও মা জাবেদা বেগমকে (৪০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অবস থ র মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে লুক্সেমবার্গও

নিউইয়র্কে আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা কয়েকটি দেশ আগেই দিয়েছে। এবার সে তালিকায় যুক্ত হয়েছে ইউরোপের দেশ লুক্সেমবার্গ।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার এ প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। গাজায় প্রায় দুই বছর ধরে চলা ইসরায়েলের আগ্রাসনের কারণে দেশটির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনা তীব্র হওয়ার প্রেক্ষাপটে তিনি এ পদক্ষেপ নিয়েছেন।

গত সোমবার রাতে লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী লুক ফ্রাইডেন সাংবাদিকদের বলেন, গত কয়েক মাসে (গাজায়) মাঠপর্যায়ের পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য অবনতি হয়েছে। তিনি বলেন, এখন ইউরোপসহ বিশ্বের নানা প্রান্তে একটি আন্দোলন গড়ে উঠছে। আন্দোলনকারীরা দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান নীতিকে (ইসরায়েল–ফিলিস্তিন সংকটে) এখনো প্রাসঙ্গিক হিসেবে দেখার দাবি করছেন। লুক্সেমবার্গ সরকার ওই সব দেশের দলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে, যারা দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের নীতিতে আগামী সপ্তাহের অধিবেশনে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে।

আরও পড়ুনগাজায় জাতিগত নিধন চালাচ্ছে ইসরায়েল: জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদন২০ ঘণ্টা আগে

ইসরায়েল ও তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্র এ উদ্যোগের (ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি) তীব্র সমালোচনা করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সোমবার বলেছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ হামাসকে আরও ‘উদ্দীপ্ত’ করছে।

এএফপির হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবরে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের ইসরায়েলে হামলায় ১ হাজার ২১৯ জন নিহত হন।

ইসরায়েল ও তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্র এ উদ্যোগের তীব্র সমালোচনা করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও গত সোমবার বলেছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ হামাসকে আরও ‘উদ্দীপ্ত’ করছে।

এ হামলার অজুহাতে ওই দিন থেকেই গাজায় তাণ্ডব শুরু করেছে ইসরায়েল, যা এখনো চলছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৬৪ হাজার ৯০৫ জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। হতাহতের পরিসংখ্যানের ক্ষেত্রে জাতিসংঘ গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্ভরযোগ্য সূত্র হিসেবে বিবেচনা করে।

আরও পড়ুনফ্রান্স কয়েক মাসের মধ্যে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে: মাখোঁ০৯ এপ্রিল ২০২৫

ইতিমধ্যে গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘ প্রথমবারের মতো বলেছে, গাজায় ফিলিস্তিনিদের ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে তাঁদের ওপর জাতিগত নিধন চালিয়েছে ইসরায়েল। জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের এর উসকানিদাতা বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।

গত কয়েক মাসে (গাজায়) মাঠপর্যায়ের পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য অবনতি হয়েছে।লুক ফ্রাইডেন, লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যে দেশগুলো ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে, সেগুলোর মধ্যে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও বেলজিয়ামের নামও আছে।

আরও পড়ুনফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীকে ২২১ আইনপ্রণেতার চিঠি২৬ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে লুক্সেমবার্গও