শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পরিচালক আবু রায়হান মো. মোহতাছিন বিল্লাহকে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার ভোরে পটুয়াখালীর বাউফলে এ অভিযান চালানো হয়। তিনি বিএসইসি ভবনে হট্টগোল এবং চেয়ারম্যানসহ কমিশনারদের অবরুদ্ধ করার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার ওসি আবদুল কাইয়ুম সমকালকে বলেন, গ্রেপ্তারের পর শুক্রবার দুপুরে তাকে ঢাকায় আনা হয়। এরপর তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। ওই মামলায় এজাহারভুক্ত ১৬ আসামির বাকি ১৫ জনই জামিনে রয়েছেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, গত ৪ মার্চ রাতে হঠাৎ বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর আদেশ জারি করা হয়। সাইফুর বিএসইসির অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনেরও সভাপতি। পরদিন সকালে এ খবর শুনে কিছু কর্মকর্তা বিক্ষুব্ধ হন। যদিও কিছু অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের আগস্টে তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিডি) করে কমিশন। তারপরও সেদিন এ নিয়ে নজিরবিহীন বিক্ষোভ হয়। প্রথমে সকাল ১১টায় কমিশনের কিছু কর্মকর্তা বিএসইসি ভবনের ছয়তলায় জড়ো হয়ে হট্টগোল শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা পাঁচতলায় চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করে তাদের পদত্যাগ দাবি করেন। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ওই তলায় প্রবেশের সব রাস্তা বন্ধ করে দেন। কমিশন কার্যালয়ের বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থা ও মূল ফটক বন্ধ করে দেন। পুলিশকে খবর দিলে তারা ঢুকতে পারেনি। পরে সেনাবাহিনীর একটি দল এসে বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তাদের ওপর  লাঠিচার্জ করে। এতে অন্তত পাঁচ কর্মকর্তাসহ সাতজন আহত হন। শেষে সেনাবাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতায় বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা ভবন ত্যাগ করেন।

শেরেবাংলা নগর থানার এসআই সামিউল হক শিপন সমকালকে বলেন, বিএসইসির কমিশনারদের সঙ্গে অশোভন আচরণ ও অরাজকতার অভিযোগে ৬ মার্চ চেয়ারম্যানের গানম্যান আশিকুর রহমান বাদী হয়ে মামলা করেন। সেখানে ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ আরও অনেককে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এসইস কর মকর ত ব এসইস র

এছাড়াও পড়ুন:

পুঁজিবাজারে আস্থা ফেরাতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নেবে বিএসইসি

শেয়ার সূচকের নিয়মিত পতনের মূল কারণ খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সেই সঙ্গে যেসব শেয়ারের অস্বাভাবিক বিক্রির চাপ দেখা যাচ্ছে, বাজার তদারকির মাধ্যমে সেসব শেয়ার চিহ্নিত করা হবে বলেও জানিয়েছে তারা।

দেশের পুঁজিবাজারে সাম্প্রতিক নিম্নমুখী প্রবণতার পরিপ্রেক্ষিতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। গতকাল মঙ্গলবার এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে তাৎক্ষণিক কিছু কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী  আনিসুজ্জামান চৌধুরী। এ ছাড়া সভায় বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক, বিএসইসির কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী, মো. আলী আকবর, ফারজানা লালারুখ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব দেলোয়ার হোসেন, পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের প্রতিনিধি ও বিএসইসির নির্বাহী পরিচালকেরা উপস্থিত ছিলেন।

সভার সিদ্ধান্ত হয়, বিনিয়োগকারীদের জ্ঞান ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় টক শো ও বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। পাশাপাশি বিআইসিএম ও বিএএসএম পুঁজিবাজার-বিষয়ক শিক্ষণীয় ভিডিও তৈরি করবে। ফেসবুক ও ইউটিউবের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে পুঁজিবাজার সম্পর্কে ইতিবাচক বার্তা প্রচার ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সচেতন করা হবে।

প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানির শেয়ার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রমালিকানাধীন লাভজনক কোম্পানির শেয়ার অফলোড করা, বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তিতে উৎসাহিত করা এবং টেক্সটাইল ও ওষুধ খাতের দেশী লাভজনক কোম্পানিগুলোর শেয়ার পুঁজিবাজারে নিয়ে আসা হবে।

যেসব কোম্পানি এখনো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়নি, তাদের তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহিত করার জন্য আকর্ষণীয় করছাড় দেওয়া হবে। পাশাপাশি ব্যাংকিং খাত থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের সুযোগ সীমিত করা এবং পুঁজিবাজারকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের প্রধান উৎস হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, পুঁজিবাজারের উন্নয়নের স্বার্থে দেশের আর্থিক খাতের অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে সমন্বয় বাড়ানো হবে। সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা হবে। এ ছাড়া আসন্ন জাতীয় বাজেটে বিনিয়োগকারীদের জন্য করছাড়ের সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করা হবে। এর মধ্যে লভ্যাংশ আয়ের ওপর করছাড় এবং পুঁজিবাজারের বিনিয়োগের ওপর বিশেষ করছাড়ের সুবিধা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শেয়ারবাজারে ভালো কোম্পানি আনতে করসুবিধা দেবে সরকার
  • বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একসঙ্গে কাজ করার নির্দেশনা চেয়ারম্যানের
  • কর্মীদের নতুন উদ্যমে কাজ করার আহ্বান জানালেন রাশেদ মাকসুদ
  • ২১ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করে বিএসইসির আদেশ জারি
  • ২১ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করল বিএসইসি
  • পুঁজিবাজারে আস্থা ফেরাতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নেবে বিএসইসি
  • বাজেটে লভ্যাংশ আয় ও বিনিয়োগে কর ছাড় থাকবে: বিএসইসি
  • বাজেটে লভ্যাংশ আয় ও বিনিয়োগে কর ছাড় থাকবে
  • পুঁজিবাজারে আস্থা বাড়াতে ৬ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ
  • এপ্রিলজুড়ে দর পতন, আস্থা ফেরানোর উদ্যোগ নেই