২০ বছর বয়স থেকে মোটামুটিভাবে একজন মানুষ তাঁর নিজের দায়িত্ব নিয়ে নেন। নিজের কর্মকাণ্ডের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকে। এই বয়সের আগপর্যন্ত একই অর্থনৈতিক বলয়ে থাকা সবার জীবন কমবেশি একই ছন্দে চলতে থাকে। বলা হয়, বয়স কুড়ি পেরোলে আপনার নিজেকে প্রস্তুত করার সময়। আর ত্রিশের কোঠাকে বলা হয় উপার্জন ও অর্জনের সময়। মোদ্দাকথা হলো, এই দুই দশক আপনার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। কেননা, এই দুই দশক নির্ধারণ করে দেয় আপনার পরবর্তী জীবন কেমন যাবে।

‘ডোজ অব সোসাইটি’র ইউটিউব চ্যানেলে যুক্তরাজ্যের বেশ কয়েকজন সত্তরোর্ধ্ব মানুষের কাছে জিজ্ঞাসা করা হয়, তাঁরা তাঁদের ‘ইয়ংগার সেলফ’কে কী পরামর্শ দিতে চান? তরুণদের উদ্দেশে কী বলতে চান বা তাঁদের জীবনের সবচেয়ে বড় আক্ষেপ কী? তরুণ বয়সে কী করেননি বলে তাঁরা আফসোস করেন? সেখান থেকে জনপ্রিয় কয়েকটি উত্তর দেখে নিন—

১.

‘নিজেকে নিয়ে আরও আত্মবিশ্বাসী হও। কেননা, আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম না বলে অনেক ঝুঁকি নিতে সাহস করিনি। নিজেকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলাম না বলেই অন্যে কী মনে করবে, সে ভয়ে থেকেছি। দ্বিধা, শঙ্কা নিয়ে দিন কাটিয়েছি। এখন আমি নিজেকে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারি। এখন নিজেকে নিয়ে যতটা আত্মবিশ্বাসী, এটা যদি তরুণ বয়সে হতাম, তাহলে সঠিক সময়ে সঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া আমার জন্য সহজ হতো।’

২. ‘আমি যদি সময়টা ফিরে পেতাম, তাহলে সঙ্গীকে আরও সময় দিতাম। সন্তানদের সঙ্গে আরও কিছুক্ষণ খেলা করতাম। কেননা, সন্তানেরা দ্রুত বড় হয়ে যায়। তারুণ্য সঙ্গীর সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার সেরা সময়। সেই সময়টা আমি অনেক বেশি নিজের পেশাজীবনে ঢেলে দিয়েছি। একটা সময় পার করার পর মনে হয়, জীবনসঙ্গী, পরিবার বা সন্তানদের সঙ্গে কাটানো সময়ের স্মৃতি জীবনের সেরা সম্পদ। কেননা, জীবন একটাই।’

৩. ‘৩০ বছর দমকলকর্মী হিসেবে কাজ করেছি। এর আগে আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ করতাম। একজন বিশ্বখ্যাত ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফারের সহকারী হিসেবে কাজ করার সুযোগও পেয়েছিলাম। তবে আমার বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনদের মতো আমিও সহজ আর নিরাপদ বিকল্পটাকেই বেছে নিই। ফায়ারম্যান হিসেবে চাকরিতে ঢুকি। আমি বিয়ে করেছি। সন্তানেরা এখন তাঁদের সন্তান নিয়ে ভালোই আছে। আমাকে সুখীই বলা চলে। জীবনটা যেমন কাটিয়েছি, খারাপ না। তবে মাঝেমধ্যে মনে হয়, যদি তখন সাহস করে ক্যামেরা নিয়ে বেরিয়ে পড়তাম, জীবনটা অন্যরকম হতো। বন আর বন্য প্রাণীদের সঙ্গে একটা রঙিন উত্তেজনাময় জীবন আমার বুকের ভেতর আফসোস হয়ে বিঁধে আছে।’

আরও পড়ুনবয়স্কদের রোজা রাখার ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদের যেসব বিষয় মনে রাখতে হবে১৭ মার্চ ২০২৫এক সাবেক সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘কোনো অন্যায়, অপরাধ কোরো না। নিজেকে আর নিজের পরিবারকে ছোট কোরো না

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এআই দিয়ে বানানো ছবি ছড়ানো হচ্ছে: কৃষ্ণ নন্দী

খুলনা-১ (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী কৃষ্ণ নন্দী দাবি করেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর বিরুদ্ধে যেসব ছবি ছড়ানো হচ্ছে, সেগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে বানানো। তাঁর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে একটি মহল এগুলো ছড়াচ্ছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবীর মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে কৃষ্ণ নন্দী এ দাবি করেন।

সম্প্রতি কৃষ্ণ নন্দীর কয়েকটি ছবি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। ওয়ার্ল্ড হিন্দু স্ট্রাগলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শিপন কুমার বসুর সঙ্গে কয়েকটি ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর এ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের সঙ্গে তাঁর কয়েকটি ছবি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এ নিয়ে আজ তিনি সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ‘ভারতে অবস্থানরত বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব ওয়ার্ল্ড হিন্দু স্ট্রাগলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শিপন কুমার বসু মিথ্যাচার ও অপপ্রচার করছে। সে একজন আন্তর্জাতিক চাঁদাবাজ। সে আমার মোবাইল নম্বর ম্যানেজ করে বিভিন্ন কৌশলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং জীবননাশের হুমকি দিয়ে বলে, “আমি হিন্দু হয়ে কেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করে হিন্দুধর্মকে বিতর্কিত করছি।”’

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের এই প্রার্থী বলেন, ‘আমাকে প্রার্থী করায় হিন্দুদের মনে শান্তি ফিরে এসেছে। হিন্দুরা মনে করছে, জামায়াত ইসলামী একটা অসাম্প্রদায়িক দল। জামায়াত ক্ষমতায় এলে হিন্দু-মুসলমান সবাই ভালো থাকবে। আমাকে যদি মানুষ সংসদে পাঠায়, তখন হিন্দুদের পক্ষে কথা বলার চেষ্টা করব।’

শিপন কুমার বসু ও বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ‘তাঁর বাসায় গিয়ে খেয়েছি। তবে এরপর যে সে ব্ল্যাকমেল করবে, সেটা বুঝিনি। বিদেশি কোনো গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে আমার আদৌ কোনো সংযোগ নেই। কোনো কথা হয় না।’

লিখিত বক্তব্যে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ‘আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে কিছু স্বার্থান্বেষী শ্রেণির যোগসাজশে আমার ব্যক্তিগত ইমেজ ও জনপ্রিয়তা ক্ষুণ্ন করার জন্য মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যাচারসহ বেশ কিছু ছবি এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি করে অপপ্রচার করছে। আমি এসব অপপ্রচারের জোর প্রতিবাদ জানাই। সাথে এসব অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য দেশবাসীকে অনুরোধ করছি।’

কৃষ্ণ নন্দী আরও বলেন, ‘আমাকে খুলনা-১ আসনে জামায়াত মনোনীত দাঁড়িপাল্লার প্রার্থী হিসেবে ঘোষণার মাধ্যমে আরও স্পষ্টভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে প্রমাণিত হয়, জামায়াতে ইসলামী একটি অসাম্প্রদায়িক দল। দলটির কাছে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, উপজাতি কোনো ভেদাভেদ নেই। সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। আমাকে প্রার্থী করায় সারা বাংলাদেশের হিন্দুদের দাঁড়িপাল্লার পক্ষে ব্যাপক গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। জামায়াত আমাকে মনোনয়ন দেওয়ার পরই একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও মিথ্যা প্রোপাগান্ডা শুরু করেছে, যা প্রমাণ করে, এটা গভীর ষড়যন্ত্রের একটি অংশ।’

মনোনয়ন পরিবর্তন নিয়ে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ‘আমাকে মনোনয়ন দেওয়ার আগে খুলনা-১ আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী ছিলেন বটিয়াঘাটা উপজেলার আমির মাওলানা শেখ আবু ইউসুফ। তাঁকে পরিবর্তন করে আমাকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার পরপরই মাওলানা শেখ মোহাম্মদ আবু ইউসুফ আমাকে সমর্থন করেন এবং আমরা একসঙ্গে নির্বাচনী প্রচারণার কাজ করছি। আমাদের ভেতর কোনো ভুল–বোঝাবুঝি নেই। আমি তাঁর কাছে চিরকৃতজ্ঞ। আমি দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে ব্যাপক জনসমর্থন নিয়ে বিজয়ী হওয়ার প্রত্যাশা রাখি।’

সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ চন্দের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ‘ব্যবসার কারণে মন্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। আমি একজন ব্যবসায়ী, তিনি একজন মন্ত্রী। জামায়াতে ইসলামী করি বলে আমাকে কোণঠাসা করে রেখেছিল।’

সংবাদ সম্মেলনে বটিয়াঘাটা উপজেলার আমির মাওলানা শেখ আবু ইউসুফ বলেন, জামায়াতে ইসলামীর গঠনতন্ত্রে অমুসলিম সম্প্রদায়েরও জামায়াতের রাজনীতি করার সুযোগ আছে। ফলে তাঁদের নির্বাচন করারও সুযোগ আছে। দেশের অনেক জায়গাতেই জামায়াতের অমুসলিম কমিটি আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় হামাসের সিনিয়র কমান্ডার নিহত
  • যুদ্ধবিরতি নিয়ে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন জেলেনস্কি ও মার্কিন প্রতিনিধি
  • ক্যানসার, ৩৬ অস্ত্রোপচার—গানে ফেরার গল্প শোনাবেন ‘বেজবাবা’
  • সিদ্ধিরগঞ্জে ১১০ বোতল ফেন্সিডিলসহ কারবারি গ্রেপ্তার
  • পাবনায় বিষাক্ত মদপানে ২ যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ
  • রংপুরে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর স্ত্রীকে হত্যা মামলায় একজন গ্রেপ্তার
  • বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণাহীনতা: উন্নয়নের সবচেয়ে বড় বাধা
  • বেগম রোকেয়াকে নিয়ে রাবি শিক্ষকের মন্তব্য একাডেমিক নৈতিকতার লঙ্ঘন: আসক
  • কালো পতাকার মানুষ
  • ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এআই দিয়ে বানানো ছবি ছড়ানো হচ্ছে: কৃষ্ণ নন্দী