শেরপুরে বৈদ্যুতিক ফাঁদে হাতির মৃত্যু কৃষক গ্রেপ্তার
Published: 21st, March 2025 GMT
শেরপুরের নালিতাবাড়ী গারো পাহাড়ের পূর্ব সমশ্চুড়া এলাকায় ধানক্ষেতের পাশে দেওয়া বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে একটি বন্যহাতির মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে জমির মালিক জিয়াউর রহমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এর আগে ৩১ অক্টোবর একইভাবে পার্শ্ববর্তী বাতকুচি গ্রামের টিলাপাড়া এলাকায় একটি বন্যহাতি প্রাণ হারায়। মাত্র পাঁচ মাসের ব্যবধানে মানুষের পাতা ফাঁদে দুটি হাতির মৃত্যু হলো।
বন বিভাগের মধুটিলা ইকোপার্কের রেঞ্জার দেওয়ান আলী এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, রাতেই ঘটনাস্থল থেকে জেনারেটরের জিআই তার জব্দ করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, এক সপ্তাহ ধরে ২০-২৫টি বন্যহাতির পাল উপজেলার গারো পাহাড়ের বিভিন্ন টিলা ও জঙ্গলে অবস্থান করছে। দিনে টিলা বা জঙ্গলে অবস্থান করলেও সন্ধ্যার পর তারা দল বেঁধে ধানক্ষেত এবং লোকালয়ে নেমে আসে।
পূর্ব সমশ্চুড়া গ্রামে গুচ্ছগ্রাম-সংলগ্ন এলাকায় পাহাড়ের ঢালে ৭০-৮০ একর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। গারো পাহাড়ে অবস্থানরত বন্যহাতির দলটি সম্প্রতি পাহাড়ি এলাকার বোরো ধানক্ষেতে প্রতিনিয়ত খাবারের সন্ধানে হানা দিচ্ছিল। কৃষকরা ফসল রক্ষায় মশাল জ্বালিয়ে এবং হৈহুল্লোড় করে হাতির পাল প্রতিরোধের চেষ্টা করেন। অনেকেই বন্যহাতির কবল থেকে ফসল রক্ষায় ধানক্ষেতে জেনারেটরের মাধ্যমে তার দিয়ে ঘিরে রাখেন।
বৃহস্পতিবার রাতেও অন্যান্য দিনের মতো পূর্ব সমশ্চুড়া গুচ্ছগ্রাম-সংলগ্ন লাল টেঙ্গর এলাকায় পাহাড়ের ঢালে থাকা জিয়াউর রহমানের বোরো ধানক্ষেতে হানা দেয় বন্যহাতির পাল। এ সময় একটি মাঝ বয়সী পুরুষ হাতি ক্ষেতের পাশে দেওয়া জেনারেটরের জিআই তারে জড়িয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়। এ সময় সঙ্গে থাকা অন্য হাতিরা ক্ষিপ্ত হয়ে সেখানে তাণ্ডব চালায় ও মৃত হাতিটিকে ঘিরে রাখে। এ কারণে ভয়ে ফসল রক্ষায় বা হাতিটি উদ্ধারে কেউ এগিয়ে আসতে সাহস পায়নি। রাত ১১টার দিকে বন বিভাগের মধুটিলা রেঞ্জের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। রাতেই কৃষক জিয়াউরকে নন্নী বাজার থেকে আটক করে পুলিশ।
গতকাল দুপুরে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ শেরপুরের রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল আমিন ওই কৃষকসহ অজ্ঞাতনামা দু’জনের বিরুদ্ধে বন্যহাতি হত্যার অভিযোগ এনে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা করেন।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আ ন ম আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, আমরা বারবার বুঝাতে চেষ্ট করছি, হাতির কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের শতভাগ ক্ষতি পূরণ দেওয়া হবে। তবু তারা যেন হাতির ওপর আক্রমণ না করে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এল ক য়
এছাড়াও পড়ুন:
আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত
আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।
আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।
আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।
ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫