জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, ভারত বিরোধিতার আওয়াজ তুলে ভারতের স্বার্থরক্ষার রাজনীতির পুনরাবৃত্তি চলছে। বাংলাদেশে অন্য কোনো রাষ্ট্রের আধিপত্যবাদ চলবে না। নিজেদের স্বার্থরক্ষায় অন্য সব দেশের আধিপত্যের বিরুদ্ধে লড়তে হবে।

শনিবার রাজধানীর শাহবাগে ছাত্র-জনতার সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। অবিলম্বে জুলাই গণহত্যার তদন্ত ও বিচার, নারী ও শিশু ধর্ষণের বিচার, ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনের ১২ ছাত্রনেতার নামে করা মামলা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে এই সমাবেশ হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার তপন।

আনু মুহাম্মদ বলেন, দিল্লি, ইসলামাবাদ, মস্কো, ওয়াশিংটনসহ যে কোনো শক্তির আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধেই স্লোগান দিতে হবে। দিল্লি আমাদের দেশে কীভাবে আধিপত্য বিস্তার করছে, তা তুলে ধরতে হবে। ভারতের সঙ্গে হওয়া সব অসম চুক্তি বাতিল করতে হবে।

তিনি অভিযোগ করেন, বৈষম্যবাদী গোষ্ঠীর তৎপরতা আরও বেড়ে গেছে। যারা বিগত সরকারের সময় বিভিন্ন সুবিধা নিয়েছে, তারা এখনও সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে। জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে জীবন বাজি রেখে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন শ্রমিকরা। তাদের মধ্যে নতুন করে লক্ষাধিক শ্রমিক বেকার হয়েছেন। গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা বর্তমানে আমাদের সরকারপ্রধান হলেও ওই প্রতিষ্ঠানের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা পথে পথে ঘুরছেন সুবিচারের জন্য। তিন বছরেও তাদের চাকরি স্থায়ী হয়নি। সরকার তাদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

ঘুমের ওষুধ খাইয়ে স্বামীকে হত্যা, ফাঁদ পেতে ধরা হলো প্রেমিককে

পাবনার চাটমোহর উপজেলার কাটেঙ্গা গ্রামে ক্যানসার আক্রান্ত স্বামীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে। 
দশদিন পর ঘটনা জানাজানি হলে  অভিযুক্ত স্ত্রী শারমিন খাতুন ও তার প্রেমিককে আটক করে পুলিশ। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে ঘটনাটি জানায়। 

এর আগে গত ৩০ নভেম্বর চাটমোহরের দক্ষিণপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত স্বামী শের আলী (৩৫) দক্ষিণপাড়া গ্রামের ভোলা প্রামানিকের ছেলে। শারমিন খাতুন (২৬) কাটেঙ্গা গ্রামের শাহ আলমের মেয়ে। এবং তার প্রেমিক অনিক (২২) একইগ্রামের মহাজন সরকারের ছেলে। 

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ নভেম্বর শের আলীর মৃত্যু হয়। তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। তার মৃত্যুর পর বিষয়টি স্বাভাবিক হিসেবে শুরুতে মেনে নিলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুকে ঘিরে পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দেয়।
জানা যায়, শের আলীর চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও ইউটিউবারদের মাধ্যমে চিকিৎসা সহায়তার অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে, সেই অর্থের একটি বড় অংশ শারমিন অনিককে দিয়েছেন। 

মৃত শের আলীর ফুপাতো ভাই এনামুল হোমেনের দাবি, শারমিন ও অনিকের মধ্যে ফেসবুক মেসেঞ্জারে হওয়া কথোপকথন ঘেঁটে টাকা লেনদেনের একাধিক তথ্য পাওয়া গেছে। সেখান থেকেই প্রথম সন্দেহের সূত্রপাত। 

এরপর ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে পরিবারের সদস্যরা কৌশল অবলম্বন করেন। শারমিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে অনিককে টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আসতে বলে মেসেজ পাঠানো হয়। অনিক এই ফাঁদে পা দেন।  

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে অনিকে টাকা নিতে এলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে অসংলগ্ন বক্তব্য ও পরস্পরবিরোধী তথ্য দিলে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। পরে অনিক ও শারমিন স্বীকার করেন, প্রায় চার মাস ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। 

শারমিন এ সময় জানান, গত ৩০ নভেম্বর একসঙ্গে দশটি ঘুমের ওষুধ শের আলীকে তিনি খাইয়েছিলেন। এতে শের আলীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে এবং কিছু সময়ের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। 

শের আলীর মা শিরীনা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘‘আমার অসুস্থ ছেলেকে ওর বউ ঘুমের ওষুধ খাইয়েছে। সে সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে এসে দেখি আমার ছেলে আর বেঁচে নেই। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’’

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘মৃত ব্যক্তির পরিবারে পক্ষ থেকে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি বা মামলা করেনি। যেহেতু ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে আটক করা হয়েছে, সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাদের পাবনা আদালতে সোপর্দ করেছে।’’ 

ঢাকা/শাহীন//

সম্পর্কিত নিবন্ধ