সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার যথাযথ প্রয়োগ চায় জনতার দল
Published: 24th, March 2025 GMT
সশস্ত্র বাহিনী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার যথাযথ ব্যবহার করলে ১৫ দিনের মধ্যে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির পরিবর্তন সম্ভব বলে মনে করেন জনতার দলের আহ্বায়ক শামীম কামাল। তিনি বলেন, কোনো এক অজ্ঞাত কারণে এটাকে ব্যবহার করা হচ্ছে না।
আজ সোমবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন শামীম কামাল।
জনতার দলের আহ্বায়ক বলেন, অনেক নিরীহ মানুষ রাষ্ট্রের কাছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা পাচ্ছে না। বিশেষ করে গত বছরের ৫ আগস্টের পর ছাত্র–জনতাকে হত্যার যে মামলাগুলো হয়েছে, সেখানে অনেক নিরপরাধ মানুষকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলার তালিকা ধরে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল চাঁদাবাজি করছে।
এ বিষয়ে শামীম কামাল বলেন, নিরপরাধ মানুষকে ধরে এনে আদালতে তাদের জামিন দেওয়া হচ্ছে না। এসব নিরপরাধ মানুষ কোথায় যাবে? সশস্ত্র বাহিনীকে যেহেতু ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার (বিচারিক ক্ষমতা) দিয়ে মাঠে নিয়োগ করা হয়েছে, তাদের যথাযথভাবে ব্যবহার করলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির পরিবর্তন আনা সম্ভব।
জনতার দলের আহ্বায়ক বলেন, ‘প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে সশস্ত্র বাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দিয়ে মাঠে মোতায়েন করা হয়েছে। কিন্তু আমরা অবাক বিস্ময়ে দেখতে পাচ্ছি, সশস্ত্র বাহিনীকে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় বসিয়ে রাখা হচ্ছে, তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে না। এতে সশস্ত্র বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। আমাদের দাবি, সশস্ত্র বাহিনীকে যথাযথ ব্যবহার করা হোক, না হয় তাদের ব্যারাকে ফিরিয়ে আনা হোক।’
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) বাতিলের বিষয়ে নতুন এ রাজনৈতিক দলটির শীর্ষ নেতা বলেন, বাংলাদেশে সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের চাকরি শেষ হওয়ার তিন বছর পার না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা শুধু সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেন না। এমন নিয়ম পৃথিবীর কোনো সভ্য দেশে নেই।
শামীম কামাল আরও বলেন, ‘এই আইন (আরপিও) বাতিল চেয়ে আমরা হাইকোর্টে রিট করেছিলাম, বিগত স্বৈরাচারী সরকার এটিকে খারিজ করে দিয়েছে। ৫ আগস্টের পর নির্বাচন সংস্কার কমিশনে আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছি আমরা। তারাও আইনটি বাতিলের সুপারিশ করেনি।’
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন জনতার দলের সদস্যসচিব আযম খান, মুখপাত্র ও মুখ্য সমন্বয়ক ডেল এইচ খান, নারী সদস্য নাজনীন খান প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সশস ত র ব হ ন ক ব যবহ র কর
এছাড়াও পড়ুন:
‘কৃষির উন্নয়নে জাপানের অংশীদারিত্ব আরও বৃদ্ধি করা হবে’
স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, “জাপান বাংলাদেশের উন্নয়নে অন্যতম প্রধান অংশীদার ও পরীক্ষিত বন্ধু। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)-এর মাধ্যমে দেশটি বাংলাদেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে ব্যাপকভাবে সহায়তা করে আসছে। আগামী দিনে বাংলাদেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে জাপানের অংশীদারিত্ব আরও বৃদ্ধি করা হবে।”
বুধবার (৩০ এপ্রিল) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাঁর অফিসকক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত Saida Shinichi-এর সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন।
বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে কৃষি খাতে সহযোগিতা বিশেষ করে কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণ, ফসলের পোস্ট হার্ভেস্ট ম্যানেজমেন্ট ও সংরক্ষণ, জলবায়ু ও স্মার্ট কৃষি, সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা, ২০২৭ সালে জাপানের ইয়োকোহামাতে অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক হর্টিকালচার এক্সপো’তে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ, কৃষি বিষয়ক জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভা, নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, পুলিশ সংস্কার, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা, জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইস্যু সহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকের শুরুতে রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “জাপান বাংলাদেশের অন্যতম ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আগামী দিনগুলোতে এ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।”
উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, “২০২৭ সালে জাপানের ইয়োকোহামা'তে ‘আন্তর্জাতিক হর্টিকালচার এক্সপো’ অনুষ্ঠিত হবে। আন্তর্জাতিক এ এক্সপো'তে বাংলাদেশকে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ।”
উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ। আর জাপান কৃষি খাতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারী দেশ। তাই জাপান বাংলাদেশের কৃষি খাতে বিশেষ করে কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণ, ফসলের পোস্ট হার্ভেস্ট ম্যানেজমেন্ট ও সংরক্ষণ, জলবায়ু ও স্মার্ট কৃষি, সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি খাতে সহযোগিতা করতে পারে।”
তিনি বলেন, “জাপান বাংলাদেশের কৃষি পণ্য সংরক্ষণে আধুনিক হিমাগার স্থাপন ও কুলিং ভ্যান সরবরাহ করে সহযোগিতা করতে পারে। তাছাড়া জাপান আমাদেরকে আধুনিক কৃষি সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি দিয়ে সহায়তা করতে পারে।”
তিনি এসময় রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশে আধুনিক কৃষি সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি তৈরির জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত বলেন, “কৃষি বিষয়ক দু'দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সর্বশেষ সভা ২০২৪ সালের মে মাসে জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দ্রুত এ সংক্রান্ত পরবর্তী সভা আয়োজন করা দরকার।”
উপদেষ্টা জানান, জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের পরবর্তী সভা এ বছরের অক্টোবর বা নভেম্বর মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ সভা আয়োজনের বিষয়ে বাংলাদেশ সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূতের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, “বর্তমানে ঢাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে। তবে এটির আরও উন্নতির সুযোগ রয়েছে এবং আমরা এ ব্যাপারে চেষ্টা করে যাচ্ছি।”
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন হবে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, “তখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির কোনো সুযোগ নেই, বরং দিন দিন এটির উন্নতি ঘটবে বলে আমি আশা করছি।”
পুলিশের সামর্থ্য ও গ্রহণযোগ্যতা বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, “৫ আগস্ট পরবর্তী পরিস্থিতির তুলনায় বর্তমানে পুলিশের সামর্থ্য, মনোবল ও বিশ্বাসযোগ্যতা অনেক বেশি বেড়েছে।”
তিনি এসময় আধুনিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় জাপানের সহায়তা কামনা করেন। তাছাড়া তিনি নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ডকে পেট্রোল ভেসেল ও আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে সহযোগিতা এবং অধিক সংখ্যক পুলিশ সদস্যকে জাপানে উন্নত প্রশিক্ষণে প্রেরণের জন্য রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করেন।
রাষ্ট্রদূত জানান, আগামী ইন্টারপোল নির্বাচনে নির্বাহী কমিটির সদস্য পদে জাপানের পক্ষ থেকে মনোনয়ন প্রদান করা হবে। উপদেষ্টা এ পদে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জাপানকে পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস প্রদান করেন।
বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয় ও জাপান দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এস