প্রতিদিন ৪০-৫০ কিলোমিটার বাইসাইকেল চালিয়ে হাঁস-মুরগির ছানা বিক্রি করেন মাহিদুর
Published: 25th, March 2025 GMT
প্রতিদিন বাইসাইকেলে ৪০-৫০ কিলোমিটার এলাকা ফেরি করে মুরগি ও পাতিহাঁসের ছানা বিক্রি করেন মাহিদুর (৪২)। এ আয়েই বয়স্ক মা, স্ত্রী, দুই ছেলে ও দুই মেয়েসহ সাত সদস্যদের সংসার চালান। মাহিদুর জানায়, ফজরের আজানে ঘুম ভাঙার পরপর তাঁর কর্মব্যস্ততা শুরু হয়। আর শেষ হয় রাত ১১টা নাগাদ।
মাহিদুরের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের খরিয়াল গ্রামে।
চৈত্রের খরদুপুরে বরেন্দ্রভূমির গহিন গ্রাম রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার কোলদের বাবুডাইং গ্রামে বসে গত শনিবার কথা হয় মাহিদুরের সঙ্গে। তিনি জানান, ওই এলাকা থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে তাঁর গ্রাম। বিভিন্ন গ্রামে এসব ছানা বিক্রি করতে করতে এ গ্রাম চলে আসেন। আবার বিভিন্ন গ্রামে ফেরি করতে করতে বাড়ির দিকে রওনা হবেন। রাতে বাড়ি থেকে চার কিলোমিটার দূরে মহাজনের বাড়িতে ছুটবেন। সেখান থেকে আবার আগামীকাল বিক্রির জন্য হাঁস-মুরগির ছানা নিয়ে প্লাস্টিকের ঝুড়িতে সাজিয়ে বাড়ি ফিরবেন। মহাজনকে বিক্রির টাকা দিলেই চলে। এ ব্যবসায় কোনো পুঁজি লাগে না।
কথায় কথায় মাহিদুর জানান, প্রায় তিন বছর আগে থেকে এসব ছানা বিক্রি করছেন। এর আগে একটি রিকশাভ্যান কিনে ২০ হাজার টাকা পুঁজি খাটিয়ে প্লাস্টিকের হরেক মাল বিক্রি করতেন। তিন বছর আগে ১৮ বছর বয়সী বড় ছেলে আমগাছ থেকে পড়ে গিয়ে মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যায়। তখন হরেক মালসহ রিকশাভ্যান বিক্রির টাকা দিয়ে ছেলের চিকিৎসা করান। কিন্তু ভালো হয়নি। বাড়িতেই শুয়েবসে ছেলের দিন কাটে। অল্প কিছুদিন থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছোট ছেলেকে রাজমিস্ত্রির জোগালির কাজে পাঠাচ্ছেন। এদিকে একার আয়ে সাতজনের সংসার চলছে না। প্রতিদিন নিজের আয় হয় ৪০০-৫০০ টাকা। এই টাকা দিয়ে চলতে খুব কষ্ট হয়।
বাবুডাইং গ্রামের নারী মাকুয়া কোল টুডু (৫৫) প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাঝেমধ্যেই মাহিদুর এ গ্রামে হাঁস–মুরগির ছানা বিক্রি করতে আসে। হামরা কাছ থাকিই কিনি। মাহিদুর বাড়ি বহ্যা দিয়া যায়। হাটের দামেই পাই। হামারঘে ভালোই উপকার হয়। খাটনি থাকি বাঁচিয়া যায়। হাঁস-মুরগি পোষা হয়। পাতিহাঁসের বাচ্চা কিনি ৪০ টাকায়, সোনালি মুরগির বাচ্চা ৫০-৬০ টাকা করি।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।
দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।
ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।
৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।
ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট