চান্দিনায় এনজিও কর্মী নারীকে নগ্ন করে নির্যাতনের অভিযোগে একজন গ্রেপ্তার
Published: 25th, March 2025 GMT
কুমিল্লার চান্দিনায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) দুই কর্মীকে তুলে নিয়ে নির্যাতন ও নারী কর্মীকে নগ্ন করে অর্থ আদায়ের মামলায় এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার ভোরে দেবীদ্বার উপজেলার ভানী ইউনিয়নের খাদঘর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার যুবকের নাম শাওন হোসেন (২৫)। তিনি চান্দিনা পৌর এলাকার তুলাতলি গ্রামের বাসিন্দা এবং এ ঘটনায় করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
শাওনকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর দেওয়া তথ্যে ঘটনার হোতা ও মামলার আরেক আসামি স্বপনের শ্বশুরবাড়ি (চান্দিনার এতবারপুর গ্রাম) থেকে একটি মোটরসাইকেল ও বৈদ্যুতিক শকার উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ১৭ মার্চ ইফতারের পর তুলাতলি গ্রামে একটি এনজিওর পুরুষ ও নারী কর্মীকে আটকে রেখে নির্যাতন চালান কয়েকজন যুবক। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ওই দিন সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত এক নির্জন বাগানে নিয়ে পুরুষ কর্মীকে গাছের সঙ্গে বাঁধেন তাঁরা। এরপর ওই নারী কর্মীকে নগ্ন করে যৌন নির্যাতন করা হয়েছে। এ সময় তাঁদের ‘বৈদ্যুতিক শকার’ দিয়ে শক দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ওই নারী কর্মীর নগ্ন ভিডিও ধারণ করে অর্থ আদায় করেন তাঁরা। স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ঘটনাটি টের পেয়ে ওই যুবকদের ধাওয়া দিলে অপরাধীরা পালিয়ে যায়। পরে এনজিও কর্মীদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ঘটনার পরদিন চারজনের নাম উল্লেখ করে চান্দিনা থানায় মামলা করেন এনজিওটির পুরুষ কর্মী। ঘটনার আট দিন পর এ মামলায় এক আসামিকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা ও চান্দিনা থানার উপপরিদর্শক মিথুন কুমার মণ্ডল জানান, ঘটনার পর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন আসামিরা। ঘটনার আট দিন পর শাওনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি ওই নারী কর্মীকে যৌন নির্যাতন করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন। তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর কর ম ক ঘটন র এনজ ও
এছাড়াও পড়ুন:
ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতি মেয়ে
ফরিদপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা।গত মঙ্গলবার এনসিপির সদস্যসচিব আক্তার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ওই চিঠিতে ফরিদপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক করা হয়েছে মো. আব্দিুর রহমানকে এবং সংগঠক করা হয়েছে মো. রাকিব হোসেনকে।
এছাড়া ফরিদপুর অঞ্চলের পাঁচটি জেলা, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী জেলার দু’জন করে ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফরিদপুর জেলার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে যে দু’জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের একজন হলেন সৈয়দা নীলিমা দোলা। তিনি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে এবং জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোহাম্মদ নাসিরের ভাগনি। দোলার বাবা সৈয়দ গোলাম দস্তগীর পেশায় ব্যবসায়ী।
সৈয়দা নীলিমা ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংগীত বিভাগে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি কিছুদিন একটি মোবাইল ফোন কোম্পানিতে চাকরি করেন। বর্তমানে ‘সিনে কার্টেল’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী।
এ বিষয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা বলেন, ‘আমার পরিবারের সদস্যদের আওয়ামী রাজনীতি করা সংক্রান্ত কিছু পোস্ট আপনাদের সামনে আসতে পারে। আমি নিজে এর একটা ব্যাখ্যা রাজপথের সহযোদ্ধাদের দিয়ে রাখতে চাই। আমি ১০ বছর ধরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন করছি। নো মেট্রো অন ডিইউ মুভমেন্ট, রামপাল বিরোধী আন্দোলন, ডিএসএ বাতিলের আন্দোলন, সুফিয়া কামাল হলকে ছাত্রলীগ মুক্ত করাসহ অন্যান্য সকল আন্দোলনে আমি পরিচিত মুখ। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমার লেখালেখিও পুরনো। ২০১২ সালে পরিবার ছাড়ার পর রাজপথই আমার আসল পরিবার। জুলাইয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অন্যতম মামলা তাহির জামান প্রিয় হত্যা মামলার একজন প্রত্যক্ষদর্শী আমি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরাসরি ছাত্রলীগ করে অনেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। আমি কখনও ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না, তাই আমার নাগরিক কমিটির সদস্য হতে বাধা কোথায়? এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা জেনে-বুঝে এবং আমি ‘লিটমাস’ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরই আমাকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ নেত্রীর মেয়ে দায়িত্ব পেয়েছেন জেলার এনসিপি কমিটি গঠনে-এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব সোহেল রানা বলেন, ‘তার (সৈয়দা নীলিমা) পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড আওয়ামী লীগ। আমরা দেখেছি, গত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে তার মামা গোলাম নাসির কিভাবে আমাদের ওপর নির্বিচার গুলি ছুড়েছিল। তার মায়ের কর্মকাণ্ডও আমাদের অজানা নয়।’
সৈয়দা নীলিমা দোলার সঙ্গে আমাদের পরিচয় পর্যন্ত নেই মন্তব্য করে সোহেল রানা বলেন, ‘আসলে দায়িত্ব দেওয়ার আগে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে নেওয়া হলে ভাল হতো। যাচাই-বাছাই করা হলে এ রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।’