যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা ২৩ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্যের ওপর শুল্ক কমাতে প্রস্তুত ভারত। দুই দেশের মধ্যে আলোচিত বাণিজ্য চুক্তি প্রথম পর্যায়ে ভারত এই শুল্ক হ্রাস করতে রাজী বলে , দুটি সরকারি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে।

জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে প্রবেশের পরপর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ শুরু করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার শুল্ক আক্রমণের বড় শিকার চীন ও কানাডা। আগামী ২ এপ্রিল থেকে বিশ্বব্যাপী কার্যকর হবে ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ। ভারত তার নিজের ওপর এই শুল্ক আরোপের প্রভাব কমাতে চায়।

দুটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে.

একটি অভ্যন্তরীণ বিশ্লেষণে নয়াদিল্লি অনুমান করেছে যে এই ধরনের পারস্পরিক শুল্ক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তার মোট রপ্তানির ৮৭ শতাংশের ওপর আঘাত হানবে, যার পরিমাণ ৬৬ বিলিয়ন ডলার। এই চুক্তির অধীনে ভারত ৫৫ শতাংশ মার্কিন পণ্যের উপর শুল্ক কমাতে প্রস্তুত, যেগুলো এখন ৫ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কের আওতায় রয়েছে।

একটি সূত্র জানিয়েছে, এই শ্রেণির পণ্যের ক্ষেত্রে ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের আমদানিকৃত পণ্যের উপর ‘যথেষ্ট পরিমাণে’ শুল্ক কমাতে বা এমনকি কিছু সম্পূর্ণরূপে বাতিল করতে প্রস্তুত।

ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং একজন সরকারি মুখপাত্রের কাছে মন্তব্য চেয়ে ইমেইল করা হলে তারা জবাব দেননি।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার তথ্য অনুসারে, সামগ্রিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যেখানে বাণিজ্যভিত্তিক গড় শুল্ক প্রায় ২ দশমিক ২ শতাংশ, সেখানে ভারতের ১২ শতাংশ। ভারতের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি ৪৫ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের।
 

ঢাকা/শাহেদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ল ক কম র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ