জাতীয় স্মৃতিসৌধে স্বেচ্ছাসেবক দলের দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২
Published: 26th, March 2025 GMT
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনকে কেন্দ্র করে বিএনপির অঙ্গ সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র দুই নেতা আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার সকালে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে এসে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক বদরুল আলম সুমন ও সাভার পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব দেলোয়ার হোসেন মাতবর।
অভিযুক্তরা হলেন, ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আব্দুল হালিম বাবু ওরফে হৃদয় দয়াল ও মো.
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ফেরার পথে বেদীর কিছুটা সামনেই হট্টগোল শুরু করে স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই পক্ষ। এ সময় দুইপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারি শুরু হয়। এক পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা দেলোয়ার হোসেন মাতবরকে এলোপাতাড়ি মারধর করতে দেখা যায়। কিছুক্ষণ পরেই জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রধান ফটকে আবারও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের মাঝে হট্টগোল শুরু হয়। এ সময় ঢাকা জেলা বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক দলের আরেক নেতা বদরুল আলম সুমনকে মারধরের ঘটনা ঘটে।
ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক বদরুল আলম সুমন বলেন, ফুল দেওয়ার সময় বেদীর সামনে একটু ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। ওখানে তেমন কোনো গ্যাঞ্জাম হয়নি। কিন্তু পরে ওই ঘটনার জের ধরে পরিকল্পিতভাবে আমাদের ওপর ওরা হামলা করেছে। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় এক নেতাকে বিদায় দেওয়ার জন্য আমি তাকে নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছিলাম। তখন স্মৃতিসৌধের মূল গেটে পেছন থেকে আশুলিয়া থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আব্দুল হালিম ওরফে হৃদয় দয়াল এসে বলে ‘ওই বদি সুমনরে ধর’। আমি পিছনে তাকানোর পরই, হৃদয় দয়াল আমাকে এলোপাতাড়ি আঘাত করছে। যারা আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে এখন অনুপ্রবেশ করে বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে আমি দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের কাছে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা চাইবো। প্রশাসনের কাছেও আমি এ ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করবো।
সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাভার পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব দেলোয়ার হোসেন মাদবর বলেন, ফুল দেওয়া নিয়ে ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মোহনরা ঝামেলা করে। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান মোহন বলেন, হৃদয় দয়াল আমার অনুসারী। স্মৃতিসৌধে মারামারি তো হয় নাই। একটু ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। আমরা যারা সিনিয়র ছিলাম পরে সেটা সমাধান করে দিয়েছি। তারপরও আমরা এটা নিয়ে বসব। কারণ সুমন ভাই আমার বড় ভাই। আমরা একসাথে রাজনীতি করছি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা
আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।
শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।
অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’
স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।
ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’
আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।