মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনকে কেন্দ্র করে বিএনপির অঙ্গ সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র দুই নেতা আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

আজ বুধবার সকালে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে এসে এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন, ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক বদরুল আলম সুমন ও সাভার পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব দেলোয়ার হোসেন মাতবর।

অভিযুক্তরা হলেন, ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আব্দুল হালিম বাবু ওরফে হৃদয় দয়াল ও মো.

শামীম।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ফেরার পথে বেদীর কিছুটা সামনেই হট্টগোল শুরু করে স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই পক্ষ। এ সময় দুইপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারি শুরু হয়। এক পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা দেলোয়ার হোসেন মাতবরকে এলোপাতাড়ি মারধর করতে দেখা যায়। কিছুক্ষণ পরেই জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রধান ফটকে আবারও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের মাঝে হট্টগোল শুরু হয়। এ সময় ঢাকা জেলা বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক দলের আরেক নেতা বদরুল আলম সুমনকে মারধরের ঘটনা ঘটে।

ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক বদরুল আলম সুমন বলেন, ফুল দেওয়ার সময় বেদীর সামনে একটু ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। ওখানে তেমন কোনো গ্যাঞ্জাম হয়নি। কিন্তু পরে ওই ঘটনার জের ধরে পরিকল্পিতভাবে আমাদের ওপর ওরা হামলা করেছে। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় এক নেতাকে বিদায় দেওয়ার জন্য আমি তাকে নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছিলাম। তখন স্মৃতিসৌধের মূল গেটে পেছন থেকে আশুলিয়া থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আব্দুল হালিম ওরফে হৃদয় দয়াল এসে বলে ‘ওই বদি সুমনরে ধর’। আমি পিছনে তাকানোর পরই, হৃদয় দয়াল আমাকে এলোপাতাড়ি আঘাত করছে। যারা আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে এখন অনুপ্রবেশ করে বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে আমি দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের কাছে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা চাইবো। প্রশাসনের কাছেও আমি এ ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করবো।

সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাভার পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব দেলোয়ার হোসেন মাদবর বলেন, ফুল দেওয়া নিয়ে ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মোহনরা ঝামেলা করে। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান মোহন বলেন, হৃদয় দয়াল আমার অনুসারী। স্মৃতিসৌধে মারামারি তো হয় নাই। একটু ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। আমরা যারা সিনিয়র ছিলাম পরে সেটা সমাধান করে দিয়েছি। তারপরও আমরা এটা নিয়ে বসব। কারণ সুমন ভাই আমার বড় ভাই। আমরা একসাথে রাজনীতি করছি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ এ সময়

এছাড়াও পড়ুন:

স্বামী-সন্তানের সঙ্গে বান্দরবানে বেড়াতে যাচ্ছিলেন, মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে বাসের চাকায় মৃত্যু নারীর

চট্টগ্রামের পটিয়ায় মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ার পর বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত নারীর নাম ফজিলাতুন নেসা (২৮)। তিনি মাগুরা জেলার মহম্মদপুর থানার মহেশপুর গ্রামের আলিমুজ্জামান সুজনের স্ত্রী।

পুলিশ জানায়, স্বামীর সঙ্গে মোটরসাইকেলে গতকাল রোববার চট্টগ্রামে বেড়াতে আসেন ফজিলাতুন নেসা। তাঁদের ছয় বছর বয়সী সন্তানও সঙ্গে ছিল। গতকাল চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাটের একটি বাসায় তাঁরা রাত্রিযাপন করেন। সকালে সেখান থেকে মোটরসাইকেলে করে তাঁরা বান্দরবানের উদ্দেশে রওনা দেন। আলিমুজ্জামান মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন এবং তাঁর পেছনে ছয় বছর বয়সী সন্তান হুমায়ের হাম্মাদ, এরপর ফজিলাতুন নেসা বসে ছিলেন।

সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়ার নয়াহাট এলাকায় পৌঁছায় মোটরসাইকেলটি। সেখানে সামনে থাকা একটি লেগুনা হঠাৎ সড়কে থেমে গেলে তাৎক্ষণিক মোটরসাইকেলটির ব্রেক কষেন আলিমুজ্জামান। এ সময় ফজিলাতুননেসা মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়েন। এর পরপরই পেছন থেকে একটি যাত্রীবাহী বাস ফজিলাতুন নেসাকে পিষ্ট করে। তাঁকে উদ্ধার করে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

গতকাল রাতে চট্টগ্রাম নগরের যে বাসাটিতে ফজিলাতুন নেসা ছিলেন, সেটি তাঁর স্বামী আলিমুজ্জামানের বন্ধু রবিউল ইসলামের। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রবিউল ইসলামের বোন আশরিফা আহমদ ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ফজিলাতুন নেসার স্বামী নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির কনিষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক। পরিবার নিয়ে পাহাড় দেখতে বান্দরবানে বেড়াতে যাচ্ছিলেন তিনি। বেড়াতে যাওয়ার পথেই স্বামী-সন্তানের সামনে দুর্ঘটনায় তাঁর প্রাণহানি হয়েছে।

পটিয়া ক্রসিং হাইওয়ে থানার সার্জেন্ট ওয়াসিম আরাফাত দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নিহত নারীর লাশ আইনি–প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। লেগুনা ও বাসের চালককে আটক করা সম্ভব হয়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ