ইউক্রেনের নির্বাচিত ও বৈধ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির চুক্তি স্বাক্ষর করতে চান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এ জন্য দেশটিকে একটি অস্থায়ী প্রশাসনের অধীনে রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। শুক্রবার রুশ বার্তা সংস্থায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।

পুতিন বলেছেন, জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং আমাদের মিত্রদের সহযোগিতায় ইউক্রেনে একটি অস্থায়ী প্রশাসন প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব। তাদের কাজ হবে একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের আয়োজন করা। জনগণের রায়ে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে শান্তিচুক্তি নিয়ে আলোচনা ফলপ্রসূ হবে। রাশিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় বন্দর মুরমানস্কে নাবিকদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন পুতিন। এ সময় তিনি আরও বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি আলোচনা শুরু করে ট্রাম্প এটাই প্রমাণ করেছেন, তিনি শান্তি চান। এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ইউক্রেন কোনো মন্তব্য করেনি।

রয়টার্স জানায়, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সঙ্গে নতুন এবং বিস্তৃত একটি খনিজ সম্পদ চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে, যেখানে কিয়েভকে তার প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার থেকে পাওয়া সব আয় একটি যৌথ তহবিলে জমা দিতে হবে। আলোচিত এই চুক্তিতে ইউক্রেনের জন্য কোনো ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার নিশ্চয়তা নেই। নতুন প্রস্তাবটি গত মাসে ট্রাম্প-জেলেনস্কির বৈঠকে আলোচিত চুক্তির চেয়েও অনেক বেশি বিস্তৃত ও কঠোর শর্তযুক্ত বলে জানা গেছে।

এএফপির খবরে বলা হয়, রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর ইউক্রেন রকেট ও এক ডজনের বেশি ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে শুক্রবার অভিযোগ করেছে মস্কো। এ বিষয়ে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।

প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান সম্ভাব্য কৃষ্ণসাগর চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। এ আলোচনায় কৃষ্ণসাগর অঞ্চলের নিরাপত্তা ও বাণিজ্য রুট নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউক র ন ইউক র ন র প রস ত ব

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ