ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের জয়পুরহাটের আক্কেলপুর এজেন্ট ব্যাংকিং শাখা থেকে অর্থ আত্মসাতের তদন্ত শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত দল। আজ রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের দুজন কর্মকর্তা আক্কেলপুরে যান। তাঁরা প্রতারিত গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁরা গ্রাহকদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগও নিয়েছেন।

গত ২৩ মার্চ ইসলামী ব্যাংকের আক্কেলপুর এজেন্ট ব্যাংকিং শাখায় গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ধরা পড়ে। শাখার ক্যাশিয়ার মাসুদ রানা টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকারও করেছেন। পুলিশ সেদিন রাতে ক্যাশিয়ার মাসুদ রানা, এজেন্ট ব্যাংকিং শাখার ব্যবস্থাপক রিওয়ানা ফারজানা ও এজেন্ট শাখার মালিক জাহিদুল ইসলামকে আটক করে। সেদিন রাতে একজন গ্রাহক থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এক দিন পর তিন আসামি জামিনে মুক্তি পান।

ওই ঘটনা তদন্তে আজ সকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের দুজন কর্মকর্তা আক্কেলপুরে আসেন। সকালে দেখা যায়, উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনের সড়কে ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট শাখার নিচে গ্রাহকদের ভিড়। দুজন ব্যক্তি গ্রাহকদের বক্তব্য শুনছিলেন। কথা বলে জানা যায়, তাঁরা বাংলাদেশ ব্যাংকের বগুড়ার উপপরিচালক মাহমুদুল হাসান চৌধুরী ও গোলাম রাব্বী। তাঁরা বলেন, কর্তৃপক্ষ তাঁদের তদন্ত করতে পাঠিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এই দুই কর্মকর্তা বলেন, তাঁরা পরীক্ষা করে দেখেছেন একটি সিম ব্যবহার করে হুবহু ব্যাংকের মতো করে গ্রাহকদের মুঠোফোনে লেনদেনের খুদে বার্তা পাঠানো হয়েছে। খুদে বার্তা যে ইসলামী ব্যাংকের নয়, সেটি গ্রাহকেরা বুঝতে পারেননি। তাঁরা আরও বলেন, বিভিন্নভাবে গ্রাহকদের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। ক্যাশিয়ার মাসুদ রানার হিলির ডাঙ্গাপাড়ায় ইসলামী ব্যাংকের একটি এজেন্ট শাখা রয়েছে বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন।

দুপুরের দিকে ইসলামী ব্যাংকের জয়পুরহাট শাখার কর্মকর্তারাও সেখানে আসেন। এরপর এজেন্ট ব্যাংকিং শাখার তালা খোলা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের দুজন কর্মকর্তা ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভেতরে ঢোকেন। সেখানে তাঁরা প্রতারিত গ্রাহকদের কথা শোনেন ও লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা, ইসলামী ব্যাংক জয়পুরহাট শাখার ব্যবস্থাপকসহ ব্যাংকটির অন্য কর্মকর্তারা সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। আজ শাখাটিতে কোনো লেনদেন হয়নি।

ইসলামী ব্যাংকের জয়পুরহাট শাখার ব্যবস্থাপক মো.

হাবিবুর রহমান বলেন, তাঁরা এখন পর্যন্ত দেড় কোটি টাকা আত্মসাতের কথা জেনেছেন। প্রতারিত গ্রাহকেরা এখনো আসছেন। এ কারণে আত্মসাৎ করা টাকার সঠিক পরিমাণ এখনই বলা যাচ্ছে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ব্যাংকটির একজন কর্মকর্তা বলেন, আড়াই বছর ধরে কৌশলে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ করা হচ্ছিল। আত্মসাৎ করা টাকার পরিমাণ পাঁচ কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে।

শাহিনুর ইসলাম নামের একজন গ্রাহক বলেন, তাঁর ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। টাকা ফেরতের দাবিতে তাঁরা ১০ এপ্রিল মানববন্ধন করবেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র হকদ র র তদন ত গ র হক ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন

প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।

জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।

অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।

অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।

প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।

কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।

সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গঙ্গাচড়ায় হিন্দুবাড়িতে হামলা ঠেকাতে ‘পর্যাপ্ত’ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি
  • নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-আ.লীগ নেতা–কর্মীদের ‘গোপন বৈঠক’ ঘিরে গ্রেপ্তার ২২, সেনা হেফাজতে মেজর
  • দেশের চারজনের একজন বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার
  • ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে
  • ডেঙ্গুতে দুজনের, করোনাভাইরাসে একজনের মৃত্যু
  • জাওয়াইদেহ বেদুইনদের মৌখিক সাহিত্য
  • রাবিতে আ.লীগ ট্যাগ দিয়ে চিকিৎসা কর্মীকে বিবস্ত্র করে মারধর
  • ইরানের সঙ্গে সংঘাত: ইসরায়েলকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা দিতে সৌদি সরকারকে অনুরোধ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র
  • সিরিজের শেষ ম্যাচে নেই স্টোকস, দায়িত্বে পোপ
  • সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন