গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বনের জমিতে গড়ে তোলা বসতিতে উচ্ছেদ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। উপজেলার রাখালিয়াচালা এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা না করার দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা। গতকাল রোববার তিন শতাধিক গ্রামবাসী বিক্ষোভ সমাবেশের পর এক সংবাদ সম্মেলনে করে এমন দাবি তুলে ধরেন। তাদের উচ্ছেদ না করে বন রক্ষায় সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজে লাগানোরও আহ্বান জানানো হয় সেখানে। 
এলাকাবাসীর তথ্যমতে, রাখালিয়াচালা গ্রামসহ আশপাশের এলাকায় বনের পতিত জমিতে সহস্রাধিক পরিবার ১০-১৫ বছর ধরে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করছে। সম্প্রতি বন বিভাগের কালিয়াকৈর রেঞ্জ কার্যালয়ের পক্ষ থেকে যৌথ বাহিনীর তত্ত্বাবধানে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। ইতোমধ্যে কয়েকশ বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া 
হয়েছে। এ কারণে কালিয়াকৈর রেঞ্জ ও 
কাঁচিঘাটা রেঞ্জে অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। 
রোববারের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া রাখালিয়াচালার বসতি স্থাপনকারী হাসান খান আবু হানিফ, শিক্ষক নাসির উদ্দিনসহ কয়েকজন বলেন, ঈদুল ফিতরের আগে পাশের সিনাবহ গ্রামে বনের জমিতে গড়ে তোলা বসতি উচ্ছেদ করা হয়েছে। সেখানে বন বিভাগের লোকজন তাণ্ডব চালায়। এ কারণে উপজেলার নানা জায়গায় বনের জমিতে বসতি স্থাপনকারী কয়েক হাজার পরিবারে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তারা জানতে পেরেছেন, বন বিভাগের পক্ষ থেকে রাখালিয়াচালায়ও উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। দীর্ঘদিন ধরে যারা এখানে বসবাস করছেন, তাদের উচ্ছেদ না করার 
আহ্বান জানান।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, এই এলাকায় বনের জমিতে ৫ আগস্টের পর কেউ ঘর নির্মাণ করেননি। কিন্তু কিছু অসাধু কর্মকর্তা অপপ্রচার করে এলাকায় বসতি স্থাপনকারী শান্তিপূর্ণ মানুষকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করছেন। বন কর্মকর্তাদের কাছে তাদের দাবি, এভাবে উচ্ছেদ করে এসব মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করবেন না। 
গাজীপুর জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে এ কর্মসূচি পালিত হয়। তিনি সেখানে বলেন, ‘আমরা বনের ক্ষতি না করেই দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছি। একটি মহল মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে উচ্ছেদ করানোর চেষ্টা করছে।’ বনের জমিতে যারা বসতি স্থাপন করেছেন, তাদের উচ্ছেদ না করে বন রক্ষায় সহায়ক শক্তি হওয়ার সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। 
এ বিষয়ে বন বিভাগের মৌচাক বিট কর্মকর্তা মো.

সাইফুল বারী বলেন, তাঁর বিটে এমন কোনো অভিযানের তথ্য নেই। তবে কর্তৃপক্ষ যে নির্দেশ দেবে, তা অবশ্যই পালন করতে হবে। মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বনের জমি যে কোনো উপায়ে ফিরিয়ে আনার নির্দেশনা দিয়েছেন।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আতঙ ক বন ব ভ গ র স থ পনক র এল ক য় আতঙ ক

এছাড়াও পড়ুন:

মাঠ নিয়ে শ্রাবণের আফসোস

আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেও বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আবাহনীর বিপক্ষে টাইব্রেকারে কিংসের জয়ের নায়ক ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে। শুনেছেন সাখাওয়াত হোসেন জয়

সমকাল: দু’দিনের ফাইনালের অভিজ্ঞতাটা কেমন হলো?
শ্রাবণ: (হাসি) না, এটা খুব কঠিন ছিল। আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছি এক দিন ফাইনাল খেলব, জিতব এবং উদযাপন করব। কিন্তু প্রাকৃতিক কারণে খেলা অনেকক্ষণ বন্ধ ছিল। বাকি ১৫ মিনিট আরেক দিন। এটা একটা নতুন অভিজ্ঞতা। একই চাপ দু’বার নিতে হলো।

সমকাল: এই মাঠের সমস্যার কারণেই কি এমনটা হয়েছে?
শ্রাবণ: অবশ্যই। এত বড় একটা টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা যে মাঠে, সেখানে ফ্লাডলাইট নেই। যদি ফ্লাডলাইটের সুবিধা থাকত, ওই দিনই খেলাটা শেষ করা যেত। আমার মনে হয়, দেশের ফুটবলের কিছু পরিবর্তন করা উচিত। বিশেষ করে আমরা যখন জাতীয় দলের হয়ে বিদেশে খেলতে যাই, তখন দেখি অন্যান্য দেশের মাঠ খুব গতিশীল। আমাদের দেশের মাঠগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ের না। প্রায় সময়ই সমস্যা হয়। আমরা স্লো মাঠে খেলি। বিদেশে গতিশীল মাঠে খেলতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। আমাদের লিগটা যদি আন্তর্জাতিক মানের মাঠে হতো।

সমকাল: পেনাল্টি শুটআউটের সময় কী পরিকল্পনা ছিল আপনার?
শ্রাবণ: আমি আগেও বলেছি যে অনুশীলনের সময় আগের ম্যাচের টাইব্রেকার নিয়ে কাজ করেছি। কে কোন দিকে মারে, সেগুলো ট্রেনিংয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন কোচ। কোচের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি এবং সফল হয়েছি।

সমকাল: এমেকার শট ঠেকানোর পর মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছেন। এটি কি আগে থেকেই পরিকল্পনা ছিল?
শ্রাবণ: না, সেভ দেওয়ার পর মাথায় এলো। তাই এমি মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছি। বলতে পারেন, এটি কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তৎক্ষণাৎ মাথায় এলো।

সমকাল: জাতীয় দল আর ক্লাব– দুটোর অভিজ্ঞতা যদি একটু বলতেন।
শ্রাবণ: ক্লাব আর জাতীয় দল– দুটো ভিন্ন বিষয়। ক্লাব হচ্ছে শুধু একটা ক্লাবকে প্রতিনিধিত্ব করা। আর জাতীয় দল তো পুরো বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করা। যারা ক্লাবে ভালো পারফরম্যান্স করে, তাদেরই জাতীয় দলে ডাকে। আর জাতীয় দলে ডাক পাওয়াটা একজন প্লেয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জন।

সমকাল: আপনি একটি সেভ করেছেন। কিন্তু আবাহনীর মিতুল মারমা পারেননি। জাতীয় দলে বেস্ট ইলেভেনে থাকতে পারবেন?
শ্রাবণ: না না, ব্যাপারটা এমন না। ও (মিতুল) সেভ করতে পারেনি আর আমি পারছি– এটি কিন্তু বড় বিষয় না। ও কিন্তু সেমিফাইনালে সেভ করে দলকে ফাইনালে এনেছে। বরং অনুশীলনে কোচ যাঁকে ভালো মনে করেন, তাঁকেই শুরুর একাদশে রাখেন।

সমকাল: একজন গোলরক্ষক হিসেবে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
শ্রাবণ: আমি চাই দেশসেরা গোলরক্ষক হতে। আমার স্বপ্ন আছে, বিদেশে লিগে খেলব।    

সম্পর্কিত নিবন্ধ