গাজীপুরের কালিয়াকৈরের খাড়াজোড়া এলাকায় বুধবার বিকেলে আগুনে পুড়ে গেছে তিনটি ঝুটের গুদাম। মঙ্গলবার রাতে পৃথক আরেকটি অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে আরও দুটি টিনশেড কক্ষ।
জানা যায়, বুধবার বিকেল ৫টার দিকে প্রথমে আলতাফ হোসেনের ঝুটের গুদামে আগুন লাগে। স্থানীয়রা ও গুদামের শ্রমিকরা আগুন নেভাতে ব্যর্থ হলে এর তীব্রতা বেড়ে যায়। এ সময় আগুন পাশের ইমরান মিয়া ও হাফিজুর রহমানের ঝুটের গুদামে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে কোনাবাড়ী ফায়ার সার্ভিসের আরও দুটি ইউনিটকে খবর দেওয়া হয়। কোনাবাড়ী মডার্ন ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে একযোগে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। দুই ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
গুদাম মালিক হাফিজুর রহমান জানান, আলতাফের গুদামের আগুন তাঁর গুদামে ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর গুদামে থাকা সুতা, পরিত্যক্ত ঝুটসহ প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই আগুন তাদের নিঃস্ব করে দিয়েছে। তিনি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ঝুটের ব্যবসা শুরু করেছিলেন।
কোনাবাড়ী ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যার হাউস ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলাম বলেন, তিনটি ঝুটের গুদামে আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কালিয়াকৈরের তিনটি ইউনিট ও কোনাবাড়ীর দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত ছাড়া বলা যাচ্ছে না।
সফিপুর পশ্চিমপাড়া একতা ভবন (পুকুরপাড়) এলাকায় মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আগুনে একটি বাড়ির দুটি কক্ষ পুড়ে যায়। কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইউন ট
এছাড়াও পড়ুন:
৮% জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য হয়, প্রশ্ন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ কোনো সংস্কার কমিশনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন। তাদের প্রশ্ন, ঐকমত্য কমিশনে কোনো রাজনৈতিক দলকেও প্রশ্ন করতে দেখা গেল না যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধি না থাকলে বা তাদের বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য গঠন হয়।
‘অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ৮% জনগোষ্ঠীর অবস্থা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন তোলা হয়েছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের লিখিত বক্তব্যে। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) তরুণ রায়। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের আগে হোক বা পরে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এখনো ৮ শতাংশ শুধু রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার জায়গা। তাদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে না কোনো রাজনৈতিক দলকে। সে ক্ষেত্রে এমন অবস্থা চলমান থাকলে ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে ভবিষ্যতে নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্র বয়কটের সিদ্ধান্তও নিতে হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা আক্রান্ত হতে থাকেন। তাৎক্ষণিকভাবে গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে সংখ্যালঘুরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলন থেকে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনসহ ৮ দফা দাবি তোলা হয়। সেসব দাবি বাস্তবায়নে তখন অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু গত ১ বছরে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আশানুরূপ কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।
সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেছে, বিগত ৫৩ বছরে কোনো সরকারই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। আগামী দিনের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় ৮ দফার বাস্তবায়ন করতে হবে। ৮ দফা যে দেশের ৮ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রত্যেকের মনের কথা জানান দিতে ২২ আগস্ট ‘জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক সুস্মিতা কর বলেন, সরকারের ঐকমত্য কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি নেই। দেশের একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে নিয়ে তো ঐকমত্য গঠন হতে পারে না। গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট আছে। সংখ্যালঘুদের সব সংগঠন আট দফা দাবিতে একাত্ম। যদি নির্বাচন–পূর্ববর্তী সময়ে সরকার কিংবা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে এসব দাবি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে না দেখা যায়, তাহলে হয়তো সংখ্যালঘুরা ভোট বয়কট লড়তে পারে।
এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের প্রচার সম্পাদক সুব্রত বল্লভ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির আদিবাসী সংগঠক সুমন ত্রিপুরা।