রাজধানীতে নির্মাণাধীন ভবন থেকে উদ্ধার অচেতন ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা
Published: 10th, April 2025 GMT
রাজধানীর জুরাইনে একটি নির্মাণাধীন ভবন থেকে জাকিরুল ইসলাম (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে অচেতন অবস্থায় আজ সকালে উদ্ধার করা হয়। এরপর তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, নির্মাণাধীন ভবনে বিদ্যুতের তার চুরি করতে গিয়ে জাকিরুল বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে জাকিরুল জুরাইন কলেজ রোডসংলগ্ন ১ নম্বর মিরু সড়কের পাশে একটি নির্মাণাধীন ভবনে বিদ্যুতের তার চুরি করতে যান। সেখানে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অচেতন হয়ে পড়ে থাকেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে কদমতলী থানার পুলিশ খবর পেয়ে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় জাকিরুলকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়।
পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসক জাকিরুলকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক মো.
জাকিরুল পরিবার নিয়ে জুরাইন চেয়ারম্যান বাড়িসংলগ্ন মিরু সড়কের পাশে থাকতেন। তাঁর বাড়ি গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার তেলিয়ান বোনারপাড়ায়।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেলে জাকিরুলের স্ত্রী সাথী বেগম প্রথম আলোকে বলেন, জাকিরুল নেশাগ্রস্ত ছিলেন। তিনি শুনেছেন নির্মাণাধীন একটি ভবনের বিদ্যুতের তার চুরি করার জন্য সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সময় জাকিরুল বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান।
আজ দুপুরে যোগাযোগ করা হলে কদমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আইয়ুব প্রথম আলোকে বলেন, জাকিরুলের বিরুদ্ধে থানায় চুরি করার অভিযোগ আছে। আজ সকালে একটি নির্মাণাধীন ভবনে বিদ্যুতের তার জড়ানো অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র ম ণ ধ ন ভবন
এছাড়াও পড়ুন:
কেরানিগঞ্জে ৩ জনকে হত্যার পর দেহ খণ্ড-বিখণ্ড, খুনি গ্রেপ্তার
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মার্ডার মামলার রহস্য উদঘাটন ও মূল আসামি মো. মহিউদ্দিন হাওলাদার ওরফে শিমুলকে ঢাকার কদমতলী থানাধীন জুরাইন রেললাইন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
হত্যার শিকার তিন জন হলেন- নুপুর (২৫), বিথী আক্তার (২৪) ও তার শিশু পুত্র রাফসান (৪)।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন কেরানীগঞ্জ সার্কেল জাহাঙ্গীর আলম।
সংবাদ সম্মেলনে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তিনি জানান, গত ২৫ এপ্রিল রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পূর্ব আগানগরে মাকসুদা গার্ডেন সিটির সামনে থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় নুপুরের মস্তক ও হাত-পা বিহীন দেহের খণ্ডিত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ২৭ এপ্রিল হাসনাবাদ নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পোস্তগোলা ব্রিজের পূর্ব দিকে বুড়িগঙ্গা নদীর দক্ষিণ তীর সংলগ্ন ভাসমান অবস্থায় মৃতদের তিনটি খণ্ডিত অংশ উদ্ধার করা হয়। খণ্ডিত অংশের মধ্যে ছিল একটি পা ও দুইটি উরু।
পরে ঘটনাস্থলের পাশের একটি সিসিটিভি ফুটেজ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার সহিত সরাসরি জড়িত মো. মহিউদ্দিন হাওলাদার ওরফে শিমুলকে রাজধানীর জুরাইন রেললাইন এলাকা হতে গ্রেপ্তার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন যে, নিহত বিথী আক্তার তার কারখানায় চাকরি করতো। চাকরির সুবাদে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে তার সাথে ২০১৭ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি।
বিষয়টি তার আগের স্ত্রী রুমা জানতে পারলে সে পুনরায় বিথী আক্তারের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ করে। এতে বিথী আক্তার রুবেল নামে অন্য একটি ছেলেকে বিয়ে করে। ওই ঘরে তার রাফসান নামে একটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। ঘাতক মহিউদ্দিন হাওলাদার শিমুল পরে জানতে পেরে আবারো বিথী আক্তারের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে এবং তাকে বিয়ে না করেই স্বামী স্ত্রী পরিচয় দিয়ে মীরেরবাগ এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে তার সাথে সংসার করতে থাকেন।
মহিউদ্দিন হাওলাদার ওরফে শিমুল তার প্রথম স্ত্রী রুমাসহ রাজধানীর কদমতলী থানার জুরাইনে একটি বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে। এই ঘটনাটি পরে তার প্রথম স্ত্রী আবার জানতে পেরে তার সাথে বিভিন্ন সময় ঝগড়া বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। এদিকে বিথী আক্তার মহিউদ্দিন হাওলাদার শিমুলকে বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।
এ অবস্থায় গত ২৫ এপ্রিল সকালে মহিউদ্দিন হাওলাদার শিমুল বিথী আক্তারের বাসায় চলে যায়। এসময় তার সাথে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে মহিউদ্দিন হাওলাদার শিমুল গামছা দিয়ে বিথী আক্তারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যার ঘটনাটি দেখে ফেলায় বিথীর শিশু সন্তান রাফসানকেও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সে।
এসব ঘটনা দেখে ফেলে ওই ফ্ল্যাটের সাবলেটে ভাড়া থাকা নুপুর চিৎকার করলে তাকেও গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সে। পরে মৃতদেহগুলো বাথরুমে নিয়ে টুকরো টুকরো করে কেটে বিভিন্ন প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে সে। রাফসানের ছয় টুকরা লাশ বস্তা বন্দি করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বেয়ারা এলাকায় একটি ঝোপের মধ্যে ফেলে দেয়।
নুপুরের খণ্ডবিখণ্ড লাশ রাতে মাকসুদা গার্ডেন সিটির সামনে ফেলে দেয়। বিথীর খণ্ডবিখণ্ড লাশ বস্তা বন্দী করে বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় ব্রিজের উপর থেকে নদীতে ফেলে দেয়। পরে স্বাভাবিক অবস্থায় সে তার জুরাইনের বাসায় চলে যায়।
তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রোববার রাতে শিশু পুত্র রাফসানের খণ্ডিত লাশ পেয়ারা পূর্ব পাড়া জৈনক মিন্টু মিয়ার জমির ঝোপঝাড়ের মধ্য থেকে উদ্ধার করা হয়। তবে বিথী আক্তার ও নুপুরের মস্তক এখনো উদ্ধার করা যায়নি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মাজাহারুল ইসলাম।
ঢাকা/শিপন/এস