নরসিংদীতে ‘ছোটদের ঝগড়ার জেরে’ যুবককে কুপিয়ে হত্যা
Published: 10th, April 2025 GMT
নরসিংদী শহরে ‘ছোটদের ঝগড়ার জেরে’ এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এতে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরেকজন। গতকাল বুধবার রাত ৯টার দিকে শহরের নাগরিয়াকান্দী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম জুনায়েদ হাসান (২৫)। এ ঘটনায় আহত ব্যক্তির নাম মাসুম মোল্লা। তাঁরা নাগরিয়াকান্দী এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ, পরিবার ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে নাগরিয়াকান্দী এলাকায় বাড়িসংলগ্ন একটি মাঠে মাসুম ও হায়দার নামের দুই ব্যক্তির দুই কিশোর ছেলে একসঙ্গে খেলছিল। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া ও হাতাহাতি হয়। খবর পেয়ে মাসুম ও হায়দার ঘটনাস্থলে গিয়ে নিজেরাও তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় মাসুমের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন হায়দার। এতে আহত হন মাসুম। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাত ৯টার দিকে তাঁকে বাড়ি নেওয়া হচ্ছিল। ওই সময় কাউরিয়া ঈদগাহ এলাকায় আগে থেকেই অপেক্ষায় ছিলেন হায়দার পক্ষের লোকজন। তাঁরা দেশি অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে মাসুমের ওপর আবার হামলা চালান। তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়।
সূত্রগুলো আরও জানায়, হামলার পর হামলাকারীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় মাসুমের পক্ষের লোকজন জুনায়েদ হাসান নামের এক যুবককে ধরে ফেলেন। এ সময় তাঁর মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাঁকে নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখান থেকে রাজধানীতে নেওয়ার পথে জুনায়েদের মৃত্যু হয়। অন্যদিকে গুরুতর আহত অবস্থায় মাসুমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
জুনায়েদ হাসান.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩
ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ।
রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
আরো পড়ুন:
নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের
কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের
শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”
তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।”
শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।
মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।
তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি। ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।
ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।
যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।
ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ