লিচু ও লাউয়ের নতুন পোকার জাত শনাক্ত সিকৃবির
Published: 10th, April 2025 GMT
বাংলাদেশে লিচুর গান্ধি পোকা এবং লাউ ফসলের স্যাপ বিটলের নতুন জাত শনাক্ত করেছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) বিজ্ঞানীরা। সিকৃবির কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক মো. ফুয়াদ মন্ডলের নেতৃত্বে একদল গবেষক এ নতুন দুটি পোকার জাত শনাক্ত করেন।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সিকৃবির উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে এ দুটি পোকার পরিচিতি ও ব্যবস্থাপনা-বিষয়ক লিফলেট উন্মোচন করা হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, লিচুর নতুন গান্ধি পোকাটি সাধারণ গান্ধি পোকার চেয়ে আকারে বড়। এই শোষক পোকাটি লিচুর কচি পাতা, কাণ্ড এবং ফলের রস শোষণ করে। ফলে কচি লিচু শুকিয়ে যায় এবং মাটিতে পড়ে যায়। মারাত্মক আক্রমণের ফলে লিচুর প্রায় ৮০ শতাংশ ফলন হ্রাস পায়।
আরো পড়ুন:
সিমাগো র্যাঙ্কিংয়ে দ্বিতীয় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
সিলেটে আ.
অন্যদিকে, লাউয়ের স্যাপ বিটল দলবদ্ধভাবে লাউয়ের প্রজনন পর্যায়ে পুরুষ ফুলে ব্যাপক আক্রমণ চালায় এবং সমস্ত পরাগ রেণু খেয়ে ফেলে। এতে পরাগায়ণ না হওয়ায় লাউয়ের ফল ধারণে ব্যাঘাত ঘটে এবং ফলন মারাত্মকভাবে হ্রাস পায়।
সিকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক মো. আলিমুল ইসলামের সভাপতিত্বে লিফলেট উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. সাইফুল আলম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ডিএই এর ফিল্ড সার্ভিস উইংয়ের পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল এবং প্রশাসন, অর্থ ও সাপোর্ট সার্ভিসের অতিরিক্ত পরিচালক মো. কাজী মজিবুর রহমান।
অন্যদের মাঝে আরো উপস্থিত ছিলেন, সিকৃবির রিসার্চ সিস্টেমের (সাউরেস) পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহবুব ইকবাল, রেজিস্ট্রার (অ.দা.) অধ্যাপক মো. আসাদ-উদ-দৌলা, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ সামিউল আহসান তালুকদার, জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তরের পরিচালক কৃষিবিদ খসরু মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিবিদ মো. সাইফুল আলম বলেন, “কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে খাদ্য ঘাটতি পূরণে শিক্ষার পাশাপাশি গবেষণাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রযুক্তি সম্প্রসারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় ডিএই এর সহযোগিতা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।”
অনুষ্ঠান শেষে সিকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক মো. আলিমুল ইসলাম ডিএই মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. সাইফুল আলমের কাছে নতুন দুটি পোকার পরিচিতি ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ক লিফলেট কৃষকদের মধ্যে বিতরণের জন্য হস্তান্তর করেন।
ঢাকা/আইনুল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ঘুমের ওষুধ খাইয়ে স্বামীকে হত্যা, ফাঁদ পেতে ধরা হলো প্রেমিককে
পাবনার চাটমোহর উপজেলার কাটেঙ্গা গ্রামে ক্যানসার আক্রান্ত স্বামীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে।
দশদিন পর ঘটনা জানাজানি হলে অভিযুক্ত স্ত্রী শারমিন খাতুন ও তার প্রেমিককে আটক করে পুলিশ। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে ঘটনাটি জানায়।
এর আগে গত ৩০ নভেম্বর চাটমোহরের দক্ষিণপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত স্বামী শের আলী (৩৫) দক্ষিণপাড়া গ্রামের ভোলা প্রামানিকের ছেলে। শারমিন খাতুন (২৬) কাটেঙ্গা গ্রামের শাহ আলমের মেয়ে। এবং তার প্রেমিক অনিক (২২) একইগ্রামের মহাজন সরকারের ছেলে।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ নভেম্বর শের আলীর মৃত্যু হয়। তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। তার মৃত্যুর পর বিষয়টি স্বাভাবিক হিসেবে শুরুতে মেনে নিলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুকে ঘিরে পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দেয়।
জানা যায়, শের আলীর চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও ইউটিউবারদের মাধ্যমে চিকিৎসা সহায়তার অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে, সেই অর্থের একটি বড় অংশ শারমিন অনিককে দিয়েছেন।
মৃত শের আলীর ফুপাতো ভাই এনামুল হোমেনের দাবি, শারমিন ও অনিকের মধ্যে ফেসবুক মেসেঞ্জারে হওয়া কথোপকথন ঘেঁটে টাকা লেনদেনের একাধিক তথ্য পাওয়া গেছে। সেখান থেকেই প্রথম সন্দেহের সূত্রপাত।
এরপর ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে পরিবারের সদস্যরা কৌশল অবলম্বন করেন। শারমিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে অনিককে টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আসতে বলে মেসেজ পাঠানো হয়। অনিক এই ফাঁদে পা দেন।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে অনিকে টাকা নিতে এলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে অসংলগ্ন বক্তব্য ও পরস্পরবিরোধী তথ্য দিলে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। পরে অনিক ও শারমিন স্বীকার করেন, প্রায় চার মাস ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে।
শারমিন এ সময় জানান, গত ৩০ নভেম্বর একসঙ্গে দশটি ঘুমের ওষুধ শের আলীকে তিনি খাইয়েছিলেন। এতে শের আলীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে এবং কিছু সময়ের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়।
শের আলীর মা শিরীনা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘‘আমার অসুস্থ ছেলেকে ওর বউ ঘুমের ওষুধ খাইয়েছে। সে সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে এসে দেখি আমার ছেলে আর বেঁচে নেই। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’’
চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘মৃত ব্যক্তির পরিবারে পক্ষ থেকে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি বা মামলা করেনি। যেহেতু ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে আটক করা হয়েছে, সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাদের পাবনা আদালতে সোপর্দ করেছে।’’
ঢাকা/শাহীন//