পিসিএল ছেড়ে আইপিএলে বোশ, মিলল পিসিবির নিষেধাজ্ঞা
Published: 11th, April 2025 GMT
দক্ষিণ আফ্রিকার পেস বোলিং অলরাউন্ডার করবিন বোশকে এক বছরের জন্য পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) থেকে নিষিদ্ধ করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। এই ক্রিকেটার ২০২৫ পিএসএল মৌসুম শুরুর আগে হঠাৎ আইপিএলে যোগ দেন। ফলে বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বোশের উপর নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয় পিসিবি।
বোশকে চলতি বছরের জানুয়ারিতে পিএসএল ড্রাফটে পেশোয়ার জালমি ‘ডায়মন্ড ক্যাটাগরি’তে দলে নিয়েছিল। ৩০ বছর বয়সী ক্রিকেটার আর আগে হয়ে যাওয়া আইপিএল নিলামে অবিক্রিত ছিলেন। তবে, চলমান আসরে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের লিজার্ড উইলিয়ামস চোট পাওয়ায় বোশকে দলে পেতে চায় আইপিএলের ফ্র্যাঞ্জাইটি। পিএসএল শুরুর কয়েক সপ্তাহ আগে টুর্নামেন্ট থেকে সরে যাওয়ায় বোশের উপর এসেছে নিষেধাজ্ঞা।
পিএসএলের এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় বোশ বলেন, “পিএসএল থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্তে আমি গভীরভাবে অনুতপ্ত এবং পাকিস্তানের জনগণ, পেশোয়ার জালমির ভক্ত এবং বৃহত্তর ক্রিকেট সম্প্রদায়ের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। পিএসএল একটি মর্যাদাপূর্ণ টুর্নামেন্ট। আমি আমার কার্যকলাপে যেসব প্রত্যাশা ভেঙে দিয়েছি, তা আমি সম্পূর্ণরূপে বুঝতে পারছি। পেশোয়ার জালমির নিবেদিতপ্রাণ ভক্তদের কাছে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।”
আরো পড়ুন:
চ্যাম্পিয়নস ট্রফি
পুরস্কার বিতরণীতে পাকিস্তানের কেউ নেই, ব্যাখ্যা চেয়েছে পিসিবি
ভারতকে উপেক্ষা করে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সূচি ঘোষণার সিদ্ধান্ত
বোশ আরো জানান পিসিবির এই সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নিয়েছেন এবং এই ভুলের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি সামনের দিনগুলোর জন্য শিক্ষা পেয়েছেন। ভবিষ্যতের, “আমি এই সিদ্ধান্তের সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিচ্ছি। অর্থদণ্ড ও এক বছরের নিষেধাজ্ঞাও মেনে নিচ্ছি। এটি আমার জন্য একটি কঠিন শিক্ষা ছিল। তবে আমি এই অভিজ্ঞতা থেকে শিখে ভবিষ্যতে আরও দায়িত্বশীল হয়ে পিএসএলে ফিরে আসার আশা রাখছি।”
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বারসিকের গবেষণা: রাজশাহীর ৯৯ ভাগ দোকানেই মিলছে নিষিদ্ধ কীটনাশক
রাজশাহীর ৯৯ ভাগ কীটনাশকের দোকানেই পাওয়া যাচ্ছে নিষিদ্ধ কীটনাশক ও বালাইনাশক। সরকার নিষিদ্ধ করে রাখলেও নানা নামে এসব কীটনাশক বাজারজাত করা হচ্ছে। ফলে পরিবেশ, প্রকৃতি ও জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে। শতকরা ৯৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ ব্যবহারকারীই জানেন না এগুলো নিষিদ্ধ এবং বিপজ্জনক।
চলতি বছর রাজশাহীতে ‘জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব বিষয়ক মাঠপর্যায়ে অনুসন্ধানমূলক সমীক্ষা’ শীর্ষক এক গবেষণায় এমন চিত্র উঠে এসেছে। সমীক্ষাটি করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে রাজশাহী নগরের একটি হোটেলের কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলন করে গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়ক শহিদুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাজশাহীর আটটি উপজেলার ১৯টি কৃষিপ্রধান গ্রামাঞ্চলে মাঠপর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ, ভুক্তভোগীদের কেস স্টাডি, স্থানীয় কীটনাশক ডিলার, দোকানদার, পরিবেশক এবং উপজেলা পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে সমীক্ষাটি করা হয়েছে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, নিষিদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার করে শতকরা ৬৮ শতাংশ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আর কীটনাশকের ৯৯ ভাগ দোকানেই দেশে নিষিদ্ধ কীটনাশক পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন নামে। এসব নাম দেখে বোঝার উপায় নেই এটি নিষিদ্ধ, বোতলের গায়ে নিচের দিকে জেনেরিক নাম খুব ছোট করে লেখা থাকে।
বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ যেসব কীটনাশক এখনো পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো হলো- জিরো হার্ব ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট), ফুরাডান ৫জি (কার্বোরাইল), এরোক্সান ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট), গ্যাস ট্যাবলেট (অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড), কার্বোফোরান ৩ জিএসিআই (কার্বোফোরান), ইঁদুর মারা বিষ (বডিফ্যাকোয়াম) ও তালাফ ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট)। এই প্যারাকোয়াট বা ঘাস মারা বিষ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। অনেকে এগুলো আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে পান করেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে কিডনি নষ্ট হয়ে তারা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাজারে অহরহ এসব নিষিদ্ধ কীটনাশক পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু সরকারের কোনো তদারকি নেই। এসব নিষিদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার করে কৃষক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে। নিষিদ্ধ কীটনাশক কীভাবে বাজারে বিক্রি হয়, কৃষি বিভাগের দায়িত্ব কী সে বিষয়েও সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রশ্ন তোলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে নিষিদ্ধ কিছু কীটনাশকও আনা হয়। এগুলো যে দোকান থেকে কেনা হয়েছে তার রশিদও দেখানো হয়। এসব দেখিয়ে বারসিকের নির্বাহী পরিচালক পাভেল পার্থ বলেন, “এগুলো তো বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। আমরা কিনেছি। রশিদও আছে। এগুলো নিষিদ্ধ। আমরা এগুলো হাজির করতে বাধ্য হয়েছি। এই গবেষণা একটি ফৌজদারি অপরাধকে খুঁজে পেয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে নিষিদ্ধ কীটনাশকের ব্যবহার কঠোরভাবে বন্ধ করা, কীটনাশক আইন ও বিধি প্রয়োগ করা, কীটনাশক সম্পর্কিত স্বাস্থ্য তথ্য নিবন্ধন করা, কীটনাশকের ফলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণের জন্য তহবিল গঠন করার সুপারিশ করা হয়।
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ