ফ্ল্যাট দখলের অভিযোগ: টিউলিপসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
Published: 15th, April 2025 GMT
রাজধানীর গুলশানে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের ফ্ল্যাট দখলে নেওয়ার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি ও যুক্তরাজ্যের সাবেক ‘সিটি মিনিস্টার’ টিউলিপ সিদ্দিকসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন সংস্থাটির উপপরিচালক মনিরুল ইসলাম। দুদক প্রধান কার্যালয়ে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে কমিশনের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো.
মামলায় অন্য আসামিরা হলেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সাবেক সহকারী আইন উপদেষ্টা শাহ মো. খসরুজ্জামান এবং সাবেক সহকারী আইন উপদেষ্টা-১ সরদার মোশারফ হোসেন।
আরো পড়ুন:
হাসিনা-জয়সহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবার
দুদকের অনুসন্ধানে এ ঘটনার সঙ্গে রাজউকের সাবেক আইন উপদেষ্টা ড. মো. সেলিম (সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. নাসিমের ভাই) ও ইষ্টার্ন হাউজিংয়ের সাবেক চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলামের সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার কথা বলা হয় এজহারে। তবে দুজনই মারা যাওয়ায় তাদের আসামি করা হয়নি।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে টিউলিপ কোনো টাকা পরিশোধ না করেই ঘুষ হিসাবে ইষ্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের ঢাকার গুলশান-২ এর ৭১ নম্বর রোডের বাড়ি নম্বর- ১১এ, ১১বি (রোড- বি/২০১, বাড়ি নং ৫এ ও ৫বি -পুরাতন) একটি ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রি করে নেন।
এতে বলা হয়, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকা সময় ২০০১ সালের ১৯ মে ফ্ল্যাটটি গ্রহণ করে ওই সময় থেকে টিউলিপ দখলে রেখেছেন এবং তিনি সিটি করপোরেশনের গৃহকরও দিয়ে আসছেন।
অভিযোগে বলা হয়, ৯৯ বছরের লিজ দলিলের ওই প্লট হস্তান্তরযোগ্য না হলেও ইষ্টার্ন হাউজিংকে আমমোক্তার বানিয়ে, প্লটের বিভাজন করে, ৩৬টি ফ্ল্যাট হস্তান্তরের অনুমোদন করে। লিজের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার ১৯ বছর আগেই প্লট হস্তান্তরের ব্যবস্থা করে দেওয়ার বিনিময়ে টিউলিপকে ফ্ল্যাটটি দেওয়া হয়।
“হস্তান্তর গ্রহণের সময় ফ্ল্যাটটির দাম ছিল ৪৫ লাখ ২৪ হাজার ৯২০ টাকা। সঙ্গে গ্যারেজের দাম ৬ লাখ টাকা। কিন্তু আবাসন কোম্পানিকে মাত্র ২ লাখ টাকা পরিশোধ দেখানো হয়েছে। তবে ওই ২ লাখ টাকা পরিশোধ সংক্রান্ত কোনো রসিদ পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ ফ্ল্যাটটি টিউলিপ বিনামূল্যে রেজিস্ট্রি দলিল সম্পাদন করে নেন,” বলেও মামলার এজাহারে অভিযোগ আনা হয়েছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর শেখ হাসিনার শাসন আমলের নানা ধরনের দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত শুরু করে দুদক। তার অংশ হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত করছে সংস্থাটি। যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের হ্যাম্পস্টিড অ্যান্ড হাইগেট আসনের এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হওয়ার পর গত জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ‘সিটি মিনিস্টার’ এর পদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তার পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধানে নেমে এরই মধ্যে কয়েকটি মামলা করেছে দুদক। পূর্বাচলে রাজউকের ৬টি প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে হয়েছে ৬টি মামলা।
মা শেখ রেহানা, ভাই রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও বোন আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীর নামে তিনটি প্লট নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাব খাটানোর অভিযোগে মামলা ৩টিতে টিউলিপকেও আসামি করা হয়েছে। সেগুলোতে টিউলিপের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।
টিউলিপ তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে আনা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছেন। সোমবার (১৪ এপ্রিল) টিউলিপ সিদ্দিক লন্ডনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানান, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষগুলোর কেউ তার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। পুরোটা সময় তারা ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ চালিয়েছে। তার আইনজীবীরা উদ্যোগী হয়ে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখেছিলেন। তবে তারা কখনো এর জবাব দেয়নি।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর জ য আওয় ম ল গ ট উল প স দ দ ক ক ষমত
এছাড়াও পড়ুন:
আরো ৩ ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ ফেরত দিল হামাস
ইসরায়েলের কাছে আরো তিন জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করেছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। গতকাল রবিবার রাতে মরদেহগুলো রেডক্রসের হাতে তুলে দেয় তারা।
আজ সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
আরো পড়ুন:
যুদ্ধবিরতির মধ্যেও গাজায় হামলা, ৭৫ শতাংশ ত্রাণ প্রবেশে বাধা
পশ্চিম তীরে ‘ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব’ চাপিয়ে দেওয়ার নিন্দা বাংলাদেশের
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এক বিবৃতিতে বলেছে, “রেডক্রসের মাধ্যমে ইসরায়েল তিন মৃত জিম্মির কফিন গ্রহণ করেছে। যেগুলো গাজায় থাকা প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থা শিনবেতের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরিচয় শনাক্তে মরদেহগুলো শনাক্ত কেন্দ্রে পাঠানো হবে।”
যদি এই জিম্মির পরিচয় শনাক্ত হয় তাহলে যুদ্ধবিরতির পর হামাসের হস্তান্তর করা মরদেহের সংখ্যা ২০ জনে পৌঁছাবে। গত মাসে যখন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় তখন তাদের কাছে ২৮ জিম্মির মরদেহ ছিল।
ইসরায়েলের অভিযোগ, হামাস ইচ্ছাকৃতভাবে মরদেহগুলো ফেরত দিতে দেরি করছে। কিন্তু সশস্ত্র গোষ্ঠীটি বলেছে, মরদেহগুলো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ায় এগুলো উদ্ধার করতে তাদের সময় লাগছে।
হামাসের সশস্ত্র শাখা আল-কাসসাম ব্রিগেড জানায়, রবিবার সকালে দক্ষিণ গাজার একটি সুড়ঙ্গ থেকে তারা মরদেহগুলো উদ্ধার করেছে।
পরে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর অফিসিয়াল এক্স অ্যাকাউন্টে বলা হয়, “সব জিম্মিদের পরিবারকে সেই অনুযায়ী আপডেট করা হয়েছে এবং এই কঠিন সময়ে আমাদের হৃদয় তাদের সাথে রয়েছে। আমাদের জিম্মিদের ফিরিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং শেষ জিম্মিটি ফিরে না আসা পর্যন্ত থামবে না।”
হোস্টেজ এবং মিসিং ফ্যামিলিজ ফোরাম গাজা থেকে বাকি সব মৃত জিম্মিকে উদ্ধারের জন্য নেতানিয়াহুকে জরুরিভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে।
হামাস ও ইসরায়েল একে অপরকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে।
হামাস-পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, রবিবার উত্তর গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় এক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, তারা তাদের সৈন্যদের জন্য হুমকিস্বরূপ এক সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে।
গত ১৩ অক্টোবর যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ে গাজা থেকে জীবিত সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস।
ঢাকা/ফিরোজ