দল বা গোষ্ঠীস্বার্থে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে হেয় ও অপ্রাসঙ্গিক করার অপচেষ্টায় সময়ক্ষেপণ করে জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত রাখার কৌশল বিএনপি সমর্থন করে না বলে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে অবগত করেছে দলটি। আজ বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধিদলের বৈঠকে এ বক্তব্য তুলে ধরা হয়।

জনগণের স্বার্থরক্ষা ও স্থায়ী কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য গণতান্ত্রিক শাসনের বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করেছে বিএনপি। সে কারণে প্রয়োজনীয় সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ (পথনকশা) শিগগির ঘোষণার মাধ্যমে জনমনে সৃষ্ট সব বিভ্রান্তি অবসানের আহ্বান জানিয়েছে দলটি।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে লিখিত বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেছে বিএনপি। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরউদ্দীন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমদ ও ইকবাল হাসান মাহমুদ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘আজ যারা সংস্কারের কথা বেশি বেশি বলে এবং বিএনপিকে সংস্কারের বিপক্ষের শক্তি বলে চিহ্নিত করার অপচেষ্টা করছে, তাদের ভিশন-২০৩০ এবং রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচিতে যেসব সংস্কারের প্রস্তাব করা হয়েছে ও যেসব পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করা হয়েছে, তার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। বিএনপি মনে করে, সব পরিবর্তনই সংস্কার নয়। সংস্কারের উদ্দেশ্য ইতিবাচক ও গঠনমূলক পরিবর্তন।’

যেকোনো রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী ও তাঁর সরকারের বক্তব্য ও মতামতে সমন্বয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বিএনপি বলেছে, ‘সম্প্রতি এর কিছু ব্যতিক্রম আমাদের উদ্বিগ্ন করেছে। আমরা আপনাকে সমর্থন জানিয়েছি এবং আপনার ওপরই আস্থা রাখতে চাই; কিন্তু আপনার সরকারের কিছু ব্যক্তি এবং আপনাকে সমর্থনকারী বলে দাবিদার কিছু ব্যক্তি ও সংগঠনের প্রকাশ্য বক্তব্য ও অবস্থান জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। আশা করি, আপনি এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’

এ বিষয়ে বিএনপি সব প্রস্তাব নিয়েই যুক্তিগ্রাহ্য আলোচনাকে স্বাগত জানায় উল্লেখ করে এতে বলা হয়, ‘কিন্তু দল কিংবা গোষ্ঠীস্বার্থ এবং রাজনীতি কিংবা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে হেয় ও অপ্রাসঙ্গিক করার অপচেষ্টায় অযথা সময়ক্ষেপণ করে জনগণকে তাঁদের ভোটাধিকার তথা রাষ্ট্রের মালিকানা প্রতিষ্ঠার অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখার কৌশলকে বিএনপি সমর্থন করে না।’

প্রয়োজনীয় সংস্কারে নিজেদের সমর্থনের কথা উল্লেখ করে বিএনপি বলেছে, পতিত ফ্যাসিবাদী সরকার দেশের সংবিধান, আইন, বিধি, প্রতিষ্ঠান এমনকি দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের এমনভাবে কলুষিত করেছে যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অনেক বিষয়েই পরিবর্তন ও সংস্কার সাধন অনিবার্য। এ ব্যাপারে সরকারের উদ্যোগের প্রতি বিএনপি সমর্থন জনিয়েছে ও সহযোগিতা করছে।

বৈঠকে বিএনপির সাত সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

কোনও মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমির খসরু

কোনও মহামানবকে বাংলাদেশের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য দেশের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম করেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

সোমবার রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, কোনও মহামানব কোনও দেশের গণতন্ত্রের সমাধান দেবে তার জন্য দেশের জনগণকে অপেক্ষা করতে হবে, এটা বিশ্বাস করার কারণ নেই।

এদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় ন্যাপ ভাসানীর সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক উপস্থিত উপস্থিত ছিলেন।

পরে বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে আমজনতার দলের সঙ্গে বৈঠকে করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি। আমজনতার দলের আহ্বায়ক কর্নেল অব. মিয়া মশিউজ্জামানের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে বাংলাদেশ পিপলস পার্টির সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির নেতারা।

বিএনপির পক্ষে বৈঠকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু উপস্থিত ছিলেন।

আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আমির খসরু বলেন, মানুষ বলতে কারা? আমার বুঝতে একটু অসুবিধা হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি, যারা জনগণকে প্রতিনিধিত্ব করছে। যারা রাজনৈতিক দল হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাস্তায় লড়াই করেছে, আমাদের সঙ্গে যারা রাস্তায় ছিল, ইতোমধ্যে প্রায় ৫০টি দল, পরিষ্কারভাবে ব্যক্ত করেছে ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচনের জন্য।

তিনি আরও বলেন, সংস্কারের জন্য যে কথাগুলো বলা হয়, সংস্কারের ব্যাপারে যেখানে ঐকমত্য হবে- সেই সংস্কারগুলো দ্রুত করে নির্বাচন কমিশনকে বলা হোক, নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করে রোডম্যাপ দিয়ে ভোটের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। তো জনগণ বলতে কারা? 

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এখন জনগণ বলতে যদি কোনও একটি বিশেষ গোষ্ঠী, সুবিধাভোগী- যারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে গিয়ে, জনগণের ভোটাধিকারের বিরুদ্ধে গিয়ে গণতন্ত্রকে সংস্কারের মুখোমুখি করছে! এটা তো কারও বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কারণ নেই। ১৬ বছরের যুদ্ধটা ছিল গণতন্ত্রের জন্য, দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে আনার জন্য। যে সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে, তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। সেটা যে সরকারই হোক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মোদির যুদ্ধপ্রবণ মনোভাবের নিন্দা ইমরান খানের
  • ‘মানবিক করিডর’ প্রদানের বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন: জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল
  • এসএসসি পরীক্ষা-২০২৫: ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ে বেশি নম্বর পাওয়ার টিপস
  • কাজ নাকি কাজের ‘রেজাল্ট’কে প্রাধান্য দেবেন?
  • কোনো মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমীর খসরু
  • কোনও মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমীর খসরু
  • কোনও মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমির খসরু