মৌলভীবাজারে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আনিসুলকে গ্রেপ্তার
Published: 17th, April 2025 GMT
মৌলভীবাজারে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আনিসুল ইসলাম চৌধুরীকে (তুষার) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে মৌলভীবাজার সদর মডেল থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও জোড়া খুনের অভিযোগসহ পাঁচটি মামলা আছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত রোববার দিবাগত রাতে বড়হাট এলাকার বাসায় অভিযান চালিয়ে আনিসুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তিনি জেলহাজতে আছেন। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পরবর্তী সময়ে তাঁর রিমান্ড চাইবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আনিসুল ইসলাম চৌধুরী মৌলভীবাজার সদর মডেল থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় করা একাধিক মামলার আসামি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। রোববার রাত ১০টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বড়হাটের বাসা থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
আনিসুলের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ৭ ডিসেম্বর মৌলভীবাজারে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে কেন্দ্র করে জোড়া খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ আছে। ওই ঘটনায় করা মামলায় তিনি অন্যতম আসামি।
মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিনহাজ উদ্দিন আজ বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, আনিসুলের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা আছে। তাঁর রিমান্ড চাওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।
চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।
শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।
আরো পড়ুন:
বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি
ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা
সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।
শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’
শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’
চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’
ঢাকা/রাজীব