আমরা অনেকে দিনের বেশির ভাগ সময় বসে কাজ করি। এক জায়গায় দীর্ঘ সময় বসে বা শুয়ে কেউ ল্যাপটপে, কেউ ডেস্কটপে আর কেউ মোবাইলে নেট ব্রাউজিং করি। আবার কারও কারও চাকরির ধরণ ‘ডেস্ক জব’। চিকিৎসকেরা বলছেন, পিঠ ব্যাথার অন্যতম কারণ হচ্ছে ম্যাকানিক্যাল কারণ।
ডা. এম ইয়াছিন আলী একটি পডকাস্টে বলেন, ‘‘আমরা দীর্ঘ সময় বসে কাজ করছি। অথবা অনেকেই খুব ঝুঁকে করছি। একাধারে দীর্ঘ সময় বসে কাজ করার ফলে বসা থেকে উঠে দাঁড়ানোর সময় আমরা পিঠে ব্যথা অনুভব করছি। অনেকে বিছানায় উপুর হয়ে শুয়ে নেট ব্রাউজ করেন বা লেখালিখি করেন। একটা সময় দেখা যায় যে, শোয়া থেকে উনি উঠে বসতে গেলে আর স্বাভাবিক ভাবে উঠে বসতে পারেন না। এবং তীব্র পেইন অনুভব করেন।’’
এই চিকিৎসক আরও বলেন, ‘‘আমাদের পিঠের মেরুদণ্ডের যে অংশ- সেটাকে মেডিকেলের ভাষায় থোরাসিক স্পাইন বলি। এই স্পাইনে সাধারণত মুভমেন্ট কম হয়। ঘাড় ও কোমরের সার্ভিক্যাল স্পাইন এবং কোমরের স্পাইনের নড়াচড়া বেশি হলেও পিঠের স্পাইনের নড়াচড়া কম হয়। সেক্ষেত্রে একইভাবে যখন আমরা দীর্ঘক্ষণ থাকি, তখন মাংসপেশীগুলো-লিগামেন্টগুলো শক্ত হয়ে যায়। এবং সেখান থেকেই মূলত পেইন শুরু হয়।’’
আরো পড়ুন:
দাঁতে গর্ত দেখা দিলে করণীয়
কত সময় ভিজিয়ে রাখা পান্তা ভাত স্বাস্থ্যের জন্য ভালো?
‘‘প্রথম দিকে আমরা বেশি অবহেলা করি। কিন্তু এই পেইনটা যখন অনেক তীব্র হয়, তখন স্বাভাবিক কাজেও সমস্যা হয়। অনেক সময় লাঞ্চে যদি কোনো প্রবলেম থাকে, তাহলেও পিঠে ব্যথা হতে পারে। এ ছাড়া বিভিন্ন ট্রমাটিক বা আঘাতজনিত কারণে পিঠে ব্যথা হতে পারে। স্পোর্টস ইন্জুরি থেকেও পিঠে ব্যথা হতে পারে। উপর থেকে পড়ে যাওয়ার ফলেও পিঠে ব্যথা হতে পারে।’’— যোগ করেন এই চিকিৎসক
কেন পিঠ ব্যথা হচ্ছে, সেই কারণ নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।