নারী বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে টানা তিন জয়ে মূল পর্বে খেলার খুব কাছেই ছিল পাকিস্তানের মেয়েরা। লাহোরে কাল রাতে থাইল্যান্ডকে ৭৮ রানে হারিয়ে সবার আগে চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নিয়েছে ফাতিমা সানার দল।

পাকিস্তান সরকার ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) নিশ্চয় এই দিনের অপেক্ষায় ছিল! কারণ, মেয়েরা বিশ্বকাপের টিকিট পেয়ে যাওয়ায় এবার যে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে বেকায়দায় ফেলতে যাচ্ছে পাকিস্তান। বলতে পারেন, এটি ভারতকে পাকিস্তানের জবাবও।

কীভাবে? আইসিসি ইভেন্টে খেলা নিয়ে দুই বোর্ডের সর্বশেষ চুক্তি।

ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের মতো উন্নত বিশ্বের দেশ ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলতে নিজেদের দলকে পাকিস্তানে পাঠিয়েছিল। দেশটিতে গিয়ে নির্বিঘ্নে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলে এসেছে বাংলাদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা, আফগানিস্তানও। যায়নি শুধু ভারত।

রোহিত-কোহলি-জাদেজাদের পাকিস্তানে না পাঠানোর কারণ হিসেবে ভারত সরকার বারবার নিরাপত্তা-শঙ্কার কথা বলে এলেও আসল কারণ যে রাজনৈতিক বৈরিতা, সেটি না বললেও চলছে। শেষ পর্যন্ত ভারত ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) শর্ত মেনে নিয়ে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজন করেছিল।

সর্বশেষ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে পাকিস্তানকে দুবাইয়ে গিয়ে ভারতের বিপক্ষে খেলে আসতে হয়েছে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ