নরসিংদী সদরে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে পৃথক স্থান থেকে তাঁর স্বামীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।

মৃত ব্যক্তিরা হলেন মানসুরা বেগম (৩৮) ও তাঁর স্বামী রাজু মিয়া (৪৭)। পরিবারের ভাষ্য, মাদক নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে মানসুরাকে হত্যা করে নিজেও আত্মহত্যা করেছেন রাজু।

গতকাল শুক্রবার রাত ১২টার দিকে সদর উপজেলার মহিষাশুড়া ইউনিয়নের বালুসাইর গ্রাম থেকে মানসুরা এবং আজ শনিবার সকালে পাইকারি কাপড়ের হাট শেখেরচর-বাবুরহাটের একটি ভবন থেকে রাজুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।

রাজু সদর উপজেলার বালুসাইর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি একসময় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। সর্বশেষ তিনি একটি বস্ত্রকলের শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। অন্যদিকে মানসুরা স্থানীয় একটি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।

পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত ১০টার দিকে ঘরের দরজার তালা ভেঙে খাটে মানসুরার লাশ দেখতে পায় সন্তান, স্বজন ও প্রতিবেশীরা। খবর পেয়ে রাত ১২টার দিকে মাধবদী থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে থেকে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় তাঁর লাশ উদ্ধার করেন। পরে তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন রাজু।

পরে আজ সকালে নরসিংদী মডেল থানাধীন বাবুরহাট এলাকার একটি তিনতলা ভবনের কার্নিশে একটি ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন স্থানীয় লোকজন। দুপুরে তাঁর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। পরে নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা লাশটি রাজুর বলে শনাক্ত করেন।

নিহত দম্পতির সন্তান রনি মিয়া (১৮) বলেন, গতকাল রাত ১০টার দিকে বাড়িতে ফিরে দেখেন ঘর তালাবদ্ধ। অনেক ডাকাডাকি করেছেন। কিন্তু ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ নেই। প্রতিবেশীরা জানান, কিছুক্ষণ আগেও তাঁর বাবা-মায়ের ঝগড়া শুনেছেন। একসময় তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখেন, খাটের ওপর তাঁর মায়ের (মানসুরা) মরদেহ গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় পড়ে আছে।

রনি জানান, তাঁর বাবা রাজু নিয়মিত মাদক সেবন করতেন। মাদকের টাকা নিয়ে প্রায়ই মায়ের সঙ্গে ঝগড়া হতো। গতকাল রাতেও হয়তো মাদক গ্রহণ করে মানসুরার সঙ্গে ঝগড়ায় জড়ান। একপর্যায়ে তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর দরজা তালা দিয়ে পালিয়ে যান রাজু।

একই কথা জানান নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সুজন চন্দ্র সরকার। তিনি বলেন, স্বামী মাদকাসক্ত হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ চলছিল। পারিবারিক কলহের জেরে রাতে স্ত্রীকে হত্যার পর রাজু মিয়া আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: করত ন গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

সংবিধান কেন সর্বজনের হয় উঠে না

‘অবিচলতা’ সংবিধানের এক পরম বৈশিষ্ট্য। এর মানে এটা নয় যে অবিচলতার বিপরীতে সংবিধান ‘স্থাণু’ হয়ে সময়ের প্রভাবমুক্ত থাকবে। অভূতপূর্ব সব পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য সংশোধনীর ব্যবস্থা রাখা হয় সংবিধানে। তবে সংবিধানপ্রণেতারা এই আকাঙ্ক্ষা দ্বারা প্রভাবিত থাকেন—সংবিধান শাশ্বত রূপ নিয়ে সম্ভাব্য সব পরিস্থিতির দাওয়াই হিসেবে কাজ করে।

পাঁচ দশকের পরিক্রমায় নানা রাজনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দিয়ে বাংলাদেশ এখন সাংবিধানিক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সম্মুখীন। কেউ নতুন সংবিধান চায়, কেউ আমূল সংস্কার, আবার কেউ বাহাত্তরের সংবিধান অপরিবর্তিত থাকুক—এমনটা চায়। তবে সংবিধাননিষ্ঠতার পরীক্ষায় এই সব কোনো পক্ষই খুব যৌক্তিক আচরণ নিশ্চিত করতে পারেনি।

২.

হানা আরেন্ট জার্মানির প্রখ্যাত দার্শনিক, যিনি সমাজ-রাষ্ট্রের প্রথাগত চিন্তার বাইরে নানা মতবাদের জন্য নমস্য। তিনি বেশ ক্ষোভ নিয়ে লিখেছিলেন, সংবিধান প্রণয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা হলেন রাষ্ট্র নামক একটি বাড়ির ডিজাইনারের মতো। আর রাষ্ট্রের নাগরিকগণ হচ্ছেন ভোক্তা এবং তাঁরা না চাইলেও সেই বাড়িতে দেশের মানুষ থাকতে বাধ্য হয়।

হানা আরেন্ট কথিত বাড়ির বসবাসকারীদের (নাগরিকদের) বাড়ির (সংবিধান) ডিজাইন করার ক্ষেত্রে আর কতটুকু ভূমিকা থাকে? এ প্রশ্নের একমাত্র উত্তর ‘নামমাত্র’। সংবিধান প্রণয়নে দেশের মানুষের ভূমিকাও ঠিক তেমনই, নামমাত্র। একেবারে নগণ্য।

আরেন্টের এ মন্তব্য যদিও ষাটের দশকের, স্তালিন-উত্তর সোভিয়েত রাশিয়ার পরিপ্রেক্ষিতে, কিন্তু আমাদের সংবিধানের ৫৪ বছর বয়সে এসেও তাঁর এই পর্যবেক্ষণ খুবই প্রাসঙ্গিক। আমাদের সংবিধানের সঙ্গে দেশের মানুষের সম্পর্কটা ঠিক তেমন, বাড়ির রূপকার আর বসবাসকারীর।

৩.

সংবিধান রাষ্ট্রের স্থিতির দ্যোতক। রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলবিধি। এই বিধির অপরিণামদর্শী পরিবর্তন রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি। ইউরোপীয় অঞ্চলের সমাজ রাষ্ট্র স্থিতাবস্থার উর্বর ভূমি। বিপরীতে দক্ষিণ এশিয়া যেন সদা পরিবর্তনশীল।

শুরু করা যায়, দক্ষিণ এশিয়ায় পাকিস্তান দিয়ে, দেশটির সংবিধান ১৯৫৬, ১৯৬২ ও ১৯৭৩ সালে তিনবার লেখা হয়েছে। তার পাশের দেশ আফগানিস্তানের সংবিধানও তিনবার নতুন করে লেখা হয়েছে—১৯২৩, ১৯৬৪ ও ২০০৪ সালে। শ্রীলঙ্কায় ১৯৭২ ও ১৯৭৮ সালে দুটি সংবিধান লেখা হয়। মিয়ানমারে ১৯৪৭, ১৯৭৪ ও ২০০৮–এ সংবিধান লেখা হয়েছে। উল্লেখ্য, দেশটিতে ১৯৮৮ থেকে ২০০৮ সময়কালে কোনো সংবিধানই ছিল না। ভারতই একমাত্র ব্যতিক্রম, যথাযথ একটি সংবিধান বহু জাতির বহুভাষীর বৈচিত্র্যময় দেশটির যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ঠিকঠাক ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।

স্বাধীনতার ইচ্ছা আর কর্তৃত্বের আকাঙ্ক্ষা সব জাতিরই থাকে। সে আকাঙ্ক্ষা থেকে স্বাধীনতা নামক প্রত্যয়টি প্রতিষ্ঠার প্রয়াস পায় কোনো কোনো জাতি। গত আড়াই শ বছরের সাংবিধানিক ইতিহাস পরিক্রমায় দেখা যায় স্বাধীন জাতি-রাষ্ট্রের স্বাধীনতা প্রাপ্তির পরের পদক্ষেপই সংবিধান বা শাসনতন্ত্র প্রণয়ন। কারণ, সংবিধান স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের নিশ্চয়তা স্বরূপ।

সামাজিক বিজ্ঞানের পরিসরে তত্ত্বানুযায়ী কোনো একটি দেশের অধিকাংশ মানুষের আচরণ গড় করে আমরা পাই সমাজের একমাত্রিক অবস্থান। অতিবাহিত ও চলমান সময়ের যেকোনো নির্ধারিত বিন্দুতে তার অস্তিত্বের প্রকাশও প্রায় একই রকম। সুষম সামঞ্জস্য নিশ্চিত করা না গেলেও ন্যূনতম মতৈক্য নিয়ে এমন ঘটে বলেই সবাই পারস্পরিক সদর্থক যোগাযোগে সমাজ–রাষ্ট্রের কাঠামোগুলো ব্যবহারিক কাজকর্ম করে চলে।

স্থিতিশীলতা ও ধারাবাহিকতা বজায় রাখার চেষ্টা করা হয় কোনো একক লেখ্য নিশানাকে মান্য করে। সংবিধান সেই নিশান-দলিল। স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর বহুধা বিভক্তির আগেই বাংলাদেশ এটি নিশ্চিত করতে পেরেছিল।

সংবিধানের সর্বোচ্চতা স্বীকার করা এবং শাসন-ক্ষমতার মধ্যে একটি বিরোধ বর্তমান। নানা স্তরের নেতা, আরও অনেকের কথাতেই সেই বিরোধ প্রকট হয় প্রায়ই। যাদের হাতে সংবিধান সম্মান রক্ষার ভার, তারাই সংবিধানের শর্তহীন মান্যতা স্বীকার করতে নারাজ, এর চেয়ে দুর্ভাগ্য আর কী হতে পারে?৪.

আমাদের সংবিধানের প্রস্তাবনায় সংবিধানকে জনগণের ‘এমবডিমেন্ট অব দ্য উইল’ বা ‘অভিপ্রায়ের অভিব্যক্তি স্বরূপ’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আসলেই কি সংবিধানের সব রকম চর্চায় জনগণের অভিপ্রায়ের প্রতিফলন আমরা দেখতে পাই? নাকি ব্যক্তিস্বার্থে, দলীয় স্বার্থের সিদ্ধান্তেরই ফসল? সংবিধান একটি জাতির সে লেখ্যপত্র যেখানে জাতির ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতার নির্যাস পাওয়া যায়। স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ তার প্রথম বিজয় দিবস (১৯৭২–এর ১৬ ডিসেম্বর) উদ্‌যাপন করে নিজের জন্য নিজের প্রণীত সংবিধানে কার্যকর করার মধ্য দিয়ে। এ এক অতুল্য অর্জন। ঐতিহাসিক সমাপতন বোধ করি।

রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এত এত অনালোচিত অথচ কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ‘দিবসকেন্দ্রিক’ উদ্‌যাপন হতে দেখা যায়। কিন্তু রাষ্ট্র পরিচালনার মূল দলিল সংবিধান যে দিন গৃহীত হলো, সেই দিনটিকে উপলক্ষ করে সরকারি পর্যায়ে যে নীরবতা, তা সত্যই আমাদের বৌদ্ধিক সাবালকত্বকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে। তবে বেসরকারিভাবে সাংগঠনিক পর্যায়ে ৪ নভেম্বর বাংলাদেশের সংবিধান দিবস পালন করা হয় বেশ কবছর যাবৎ।

স্বাধীনতা পেরিয়েছে ৫৪ বছরের বেশি আর সংবিধান ৫৩ বছর অথচ ৫০ পেরিয়েও আমাদের কোনো সংবিধান দিবস ছিল না। অতঃপর রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেল সংবিধান দিবস। ২০২২ সালের ৪ নভেম্বর ‘জাতীয় সংবিধান দিবস’ হিসেবে ‘ক’ ক্রমিকে পালিত হওয়ার গেজেট হয়।

কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যে এমন এক রাজনৈতিক বাস্তবতা হাজির হলো, সেই সংবিধানই থাকবে, নাকি চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের ফল হিসেবে নতুন সংবিধান আসবে—এমন বিতর্ক দেখা দিয়েছে। শুধু তা–ই নয়, যে সংবিধানকে আমরা চিনতাম, চর্চা করতাম, তারও খোলনলচে বদলে যেতে পারে।

আরও পড়ুনদেশে স্বৈরশাসন উত্থানের জন্য কি শুধু সংবিধান দায়ী১৮ মার্চ ২০২৫৫.

রাষ্ট্রাচার মেনে সংবিধান দিবস পালন করা হতো ৫০ বছরের বেশি, সে কারণেই কি আমাদের এত সাংবিধানিক বিচ্যুতি? স্মরণ রাখা উচিত, সংবিধানের পথ থেকে বিচ্যুত হলে তার মূল্য চুকাতে হয় উচ্চ দামে।

লক্ষণীয়, সংবিধানের সর্বোচ্চতা স্বীকার করা এবং শাসন-ক্ষমতার মধ্যে একটি বিরোধ বর্তমান। নানা স্তরের নেতা, আরও অনেকের কথাতেই সেই বিরোধ প্রকট হয় প্রায়ই। যাদের হাতে সংবিধান সম্মান রক্ষার ভার, তারাই সংবিধানের শর্তহীন মান্যতা স্বীকার করতে নারাজ, এর চেয়ে দুর্ভাগ্য আর কী হতে পারে?

সমাজের নৈতিকতা তাঁদের কাছে জরুরি; কারণ, সংবিধান মানা যে ঐচ্ছিক নয়, আবশ্যিক, রাজনীতির ক্ষুদ্র স্বার্থে তাঁরা যদি কথাটি ভুলে যান। সে ক্ষেত্রে ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার তাঁদের থাকে কি? তবে আমাদের দেশে এসব মামুলি আলাপ বলে অগ্রাহ্য করার অভ্যাস সাংস্কৃতিক আবহমানতা পেয়েছে।

৬.

কয়েক বছর আগে ভারত সরকারের নেওয়া এক ‘অসাংবিধানিক’ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মিছিলে দেখা যায় দিল্লির রাজপথে, সংবিধাননিষ্ঠ ছাত্রসমাজ সংবিধানের প্রস্তাব আবৃত্তি করছে সমস্বরে। পেটোয়া বাহিনীর দ্বারা রাজধানীতে ছাত্রনেত্রী জখমে আহত হয়েও বলেন, লাঠির জবাব তিনি সংবিধান দিয়েই দেবেন। সংবিধান নিয়ে এমন শুদ্ধ আবেগ মুগ্ধ না করে পারে না।

সংবিধান দিবস নিয়ে নিবন্ধে যদি বলা যেত আমাদের সংবিধান চিন্তা ওই মাত্রা ছুঁয়েছে, তাহলে এর চেয়ে আনন্দের আর কী হতে পারে। তবে সত্য এই, মিছিলে সংবিধানের প্রস্তাব আবৃত্তি আর দিল্লির ছাত্রনেত্রী লাঠি নয়, জবাব সংবিধান দিয়েই দেবেন। তার বিপরীতে বাংলাদেশে প্রায় একই সময়ে ঘটে প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে প্রিকনস্টিটিউশনাল ল(সংবিধানপূর্ব আইন) অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ১৯২৩ ব্যবহার করে গ্রেপ্তার ও হেনস্তার ঘটনা, যেটি তথ্য প্রাপ্তির স্বাধীনতার জন্য হুমকি।

আরও পড়ুনসংবিধান যেভাবে বিভাজনের ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

একই ঔপনিবেশিক উত্তরাধিকারপ্রাপ্ত দেশ দুটির সংবিধান-চিন্তার (সংবিধান-বোধ) গভীরতার তারতম্য হতাশার। একই সীমানার দুই পাশে থাকা দেশ দুটির সাংবিধানিক বাস্তবতা ও ব্যবহারিক বাস্তবতা দুই রকম। একটা সংবিধাননিষ্ঠতার, আরেকটি সংবিধানের অহরহ লঙ্ঘনের ধৃষ্টতার।

এত বছর পরও সংবিধান যে আপামরের দলিল হয়ে ওঠেনি, এ দায় কার? প্রণালি-পদ্ধতির, নাকি সংস্কৃতির। সংবিধানের ভাব এবং ভাষা জনমনোগ্রাহী হলে ভালো হতো। এতে সংবিধান-বোধ হয়তো জাতির রূপান্তরের (ট্রান্সফরমেশন) কাজ করত।

পৃথিবীর কোনো দেশের সংবিধানই আসলে জনপ্রিয় সাহিত্যের মতো ব্যাপক পাঠ্য নয়। তবে সত্য হচ্ছে, গভীর ঘনত্বে ভরা একটি জাতির অস্তিত্বিক জিজ্ঞাসার মীমাংসাও আসলে সহজ নয়। আপাত কাঠিন্যের বাধা অতিক্রম করে মৌল প্রত্যয়গুলো বোঝার জন্য সংবিধান পড়তে হয় বারবার। এভাবেই হয়তো অবিচলতার পরাকাষ্ঠা অর্জন করে পুনঃপুন চর্চায় সংবিধান আপামরের হয়ে উঠতে পারে।

এম এম খালেকুজ্জামান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী

ই–মেইল: [email protected]

*মতামত লেখকের নিজস্ব

সম্পর্কিত নিবন্ধ