ভলিবল খেলা যে কত উপভোগ্য হতে পারে, সেটা আজ দেখেছেন সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনের মাঠে উপস্থিত দর্শকেরা। পেন্ডুলামের মতো দুলেছিল ম্যাচের ভাগ্য। পয়েন্টে একবার সুন্দরবনের খুলনা রেঞ্জে কর্মরত বনরক্ষীরা এগিয়ে গেছেন তো, পরেরবার এগিয়ে যান সাতক্ষীরা রেঞ্জের বনরক্ষীরা। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে শেষ পর্যন্ত বিজয়ের হাসি হেসেছেন খুলনা রেঞ্জের আওতাধীন এলাকায় কর্মরত বনরক্ষীরা।

শনিবার বিকেলে সুন্দরবনে কর্মরত বনরক্ষীদের নিয়ে এ ভলিবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ। খুলনার কয়রা উপজেলার আওতাধীন কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন মাঠে বন বিভাগের খুলনা রেঞ্জ ও সাতক্ষীরা রেঞ্জ এ টুর্নামেন্টে অংশ নেয়।

দুপুর থেকেই দর্শকের ঢল নামে মাঠের চারপাশে। গহিন সুন্দরবনের বিভিন্ন স্টেশন ও টহল ফাঁড়ি থেকে ট্রলারযোগে মাঠে আসেন বনরক্ষীরা। সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকা থেকে কিছু দর্শক মিছিল করতে করতে গ্যালারিতে ঢোকেন। তবে এমন সমর্থনও জয়ের প্রেরণা জোগাতে পারেনি বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের কর্মীদের।

অন্যদিকে ঘরের মাঠের সুবিধাটা ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছেন খুলনা রেঞ্জের বনরক্ষীরা। তাঁরা যখনই খেলায় পিছিয়ে পড়েছেন, তুমুল চিৎকার করে দর্শকেরা উৎসাহ দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত সাতক্ষীরা রেঞ্জের বনরক্ষীদের ভলিবল দলকে ২-০ সেটে হারিয়ে দেয় খুলনা রেঞ্জের বনরক্ষীদের ভলিবল দল।

সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এ জেড এম হাছানুর রহমানের সভাপতিত্বে খেলার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সার্কেলের বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ। উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মো.

মশিউর রহমান, খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মো. শরিফুল ইসলাম, কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনের কর্মকর্তা মো. সাদিকুজ্জামান প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ বলেন, সুন্দরবন সুরক্ষার নিয়োজিত বন বিভাগের সদস্যদের একটু আনন্দ দিতে এ খেলার আয়োজন করা হলো। এতে বনরক্ষীরা সবাই এক দিনের জন্য একত্র হতে পেরেছেন। এ ছাড়া সুস্থ, সবল ও মনোবল ধরে রাখতে খেলাধুলার বিকল্প নেই। বিভিন্ন সময়ে এ ধরনের খেলাধুলার আয়োজন করতে তাঁরা সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ঞ জ র বনরক ষ বনরক ষ দ র বন ব ভ গ র স ন দরবন বনরক ষ র

এছাড়াও পড়ুন:

নিষেধাজ্ঞার মধ্যে বহর নিয়ে সাবেক যুবদল নেতার সুন্দরবন ভ্রমণ

জীব ও প্রাণ-বৈচিত্র্য রক্ষার অংশ হিসেবে সুন্দরবনকে বিশ্রাম দিতে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা চলছে। ১ জুন থেকে শুরু হওয়া নিষেধাজ্ঞা চলবে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। এই সময়ে বনজীবী থেকে শুরু করে পর্যটক, কেউই সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবেন না। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সুন্দরবন ঘুরেছেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ-বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিন। তাঁর সফরসঙ্গী ছিলেন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা যুবদল ও মৎস্যজীবী দলের অন্তত ৩০ নেতাকর্মী।

গত শুক্রবার তারা ভ্রমণে যান। সুন্দরবনের কলাগাছিয়া টহল ফাঁড়িতে অবস্থানকালে নিজেদের ছবি রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করার পর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

নিষেধাজ্ঞার মধ্যে সুন্দরবনে প্রবেশ নিয়ে জানতে চাইলে যুবদলের সাবেক নেতা আমিনুর রহমান জানান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক উপসচিব সুন্দরবনে যাওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। এডিসি পদমর্যাদার একজনের মাধ্যমে বন বিভাগের কাছ থেকে ১০ জনের অনুমতি মেলে। ওই দলে তিনি যুক্ত হওয়ার পর স্থানীয় কিছু কর্মী-সমর্থক তাঁর সঙ্গে ট্রলারে উঠে পড়েন। এ সময় তাদের আর নামিয়ে দেওয়া যায়নি। 

উপসচিব বা তাঁর জন্য নিষেধাজ্ঞার মধ্যে সুন্দরবনে যাওয়া উচিত ছিল কিনা– জানতে চাইলে আমিনুর বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা চলার তথ্য আমাদের জানানো হয়নি।’ কথা বলার জন্য ওই উপসচিবের নাম ও যোগাযোগ নম্বর চাইলে তিনি দেননি।

এ বিষয়ে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের জিয়াউর রহমান বলেন, এক উপসচিবের একান্ত সচিব (পিএস) পরিচয়ে ১০ জনের জন্য সুন্দরবন ভ্রমণের অনুমতি চাওয়া হয়। অনেকটা ‘অনুরোধে ঢেঁকি গেলা’র মতো করে তাদের অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে একই সঙ্গে কয়েক রাজনৈতিক ব্যক্তির সুন্দরবনে যাওয়ার বিষয়টি তারা জানতে পারেন। ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের এমন আবদারে তারা অসহায় হয়ে পড়েন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিষেধাজ্ঞার মধ্যে বহর নিয়ে সাবেক যুবদল নেতার সুন্দরবন ভ্রমণ