৮, ০, ২০, ১, ১০, ১৫, ৬ ও ৪। সংখ্যাগুলো বাংলাদেশের সবশেষ চার টেস্টের উদ্বোধনী জুটির ইনিংসের চিত্র। খুব সহজেই সমীকরণ টানা যায়, উদ্বোধনী জুটির চিত্র রীতিমত ভয়াবহ, ভয়ংকর, উদ্বেগের।
টেস্টে বাংলাদেশ উদ্বোধনী জুটিতে সবশেষ সেঞ্চুরি পেয়েছিল কবে? ক্রিকেটাঙ্গনে নিয়মিত পা মাড়ানো অধিকাংশই স্মৃতির পাতা উল্টে মনে করতে পারলেন না। মনে করার মতো অবস্থাতেও যে নেই! এজন্য ফিরে যেতে হবে তিন বছর আগে। ৩১ দলীয় ইনিংস পূর্বে বাংলাদেশ উদ্বোধনী জুটিতে সেঞ্চুরি রান পেয়েছিল।
ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে নাজমুল হোসেন শান্ত ও জাকির হাসান ১২৪ রানের জুটি গড়েছিলেন। এরপর পাঁচটি জুটি ইনিংস উদ্বোধনে মাঠে নেমেছিল। কিন্তু কোনো জুটিই দলের রান তিন অঙ্কে নিয়ে যেতে পারেননি। ভাবনার সবচেয়ে বড় জায়গা হলো, ৩১ ইনিংসের ১১টিতেই দুই অঙ্কে যেতে পারেনি টাইগাররা। ফিফটি রানের জুটি কেবল ২টি। নতুন বলে পেসারদের বিপক্ষে ওপেনারদের যে দুর্বলতা তা ফুটে উঠেছে এসব হতশ্রী পরিসংখ্যানেই। শুধু ওপেনিং নয়, টপ অর্ডারেও শেষ ১২ টেস্টে সেই কোনো সেঞ্চুরির জুটি।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আগামীকাল সিরিজের আগে তাই প্রশ্ন উঠছে, শুরুর আক্রমণে ভরসা হবেন কে? মাহমুদুল হাসান জয়, জাকির হাসান ও সাদমান ইসলাম ওপেনার হিসেবে আছেন। সবশেষ টেস্টে মাহমুদুল-সাদমান এবং আগের টেস্টে মাহমুদুল-জাকির জুটি বেঁধেছিলেন। পারফরম্যান্স বলার মতো অবস্থায় নেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সবশেষ টেস্টে মাহমুদুলের রান যথাক্রমে ৩ ও ০। একাদশে ফিরে সাদমান ৬৪ ও ৪৬ রান করেছেন। জাকিরের রান ১৫ ও ০।
আগামীকাল থেকে শুরু হতে যাওয়া সিলেট টেস্টে সাদমানের জায়গা হচ্ছে তা নিশ্চিত করে বলা যায়। ত্রয়ীর মধ্যে সাদমানই যা একটু ছন্দে আছেন। দেশের একমাত্র পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেট প্রতিযোগিতা ঢাকা লিগে ১১ ইনিংসে ৪৬৯ রান করেছেন ১ চার ও ৩ ছক্কায়। কিন্তু মাহমুদুল ও জাকিরের মধ্যে কে খেলবেন তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে। জাকির ১০ ইনিংসে মাত্র ১৯৯ এবং মাহমুদুল ৬ উইকেটে ১৬৯ রান করেছেন। সাদা পোশাকে পাঁচদিনের লড়াইয়ে কে শুরুর আক্রমণে হাল ধরবেন সেটাই দেখার বিষয়।
‘ভঙ্গুর টপ অর্ডারের’ ব্যাটসম্যানদের নিয়ে তবু আশাবাদী বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলির অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত, ‘‘অবশ্যই এখানে ধারাবাহিক হতে হবে (ওপেনারদের)। যদি আমি আমার কথা বলি, আমার মনে হয় যে আমি গত বছর বেশ এরকম ১৩-১৪ টা ইনিংস ফ্রেশ হয়ে আউট হয়েছি। ৩০-৪০ এই ধরনের ইনিংস খেলার পরে আউট হয়েছি। যেটা আমার মনে হয় যে স্পেশালি এই ফরমেটে উচিত না। কারণ টাফ টাইমটা পার করার পরে আমি আউট হচ্ছি। সো এই জায়গাটা নিয়ে অবশ্যই কাজ করা হয়েছে এবং কাজ আমি নিজেও করেছি। এ বছরটা চেষ্টা করবো আরো কীভাবে আমি অবদান রাখতে পারি।’’
‘‘সব মিলিয়ে যদি বলি, টপ অর্ডার অবশ্যই ভালো ক্রিকেট খেলছে না। কিন্তু সবাই ওভাবে মেহনত করছে, কষ্ট করছে, চেষ্টা করছে যে কীভাবে দলে অবদান রাখা যায়। তবুও আমি মনে করি যে, আমাদের যতটুকু রিসোর্স আছে তাদেরকে পর্যাপ্ত সুযোগ দিয়ে এই জায়গাটা প্রস্তুত করতে হবে। আমরা ঘরোয়া ক্রিকেটে হয় তো ওরকম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হই না। আমরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যদি এই খেলোয়াড়গুলোকে আরো অনেক বেশি সুযোগ দেই তাহলে একটা সময় দেখবেন যে, এরাই ফল দিচ্ছে’’– যোগ করেন অধিনায়ক।
সিলেট/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
যশোরে ৪ আইনজীবীকে বহিষ্কার
যশোরে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চার আইনজীবীকে জেলা আইনজীবী সমিতি থেকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম.এ. গফুর।
অভিযুক্ত আইনজীবীরা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবীর হোসেন জনি, রফিকুল ইসলাম এবং তরফদার আব্দুল মুকিত।
জেলা আইনজীবী সমিতি সূত্র জানায়, ওই চার আইনজীবীর মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক এক এনজিওর ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ করেন। ওই টাকা ফেরত দিতে তিনি অঙ্গীকার করে ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। কিন্তু পরবর্তীতে ওই চেক ডিজ অনার হয় এবং একই সাথে তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এ ঘটনায় মক্কেল আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দেন।
অন্যদিকে, সৈয়দ কবীর হোসেন জনি একটি জমি ক্রয় করেন। কিন্তু ওই জমির মালিককে পূর্ণাঙ্গ টাকা না দিয়ে তালবাহানা করেন। শেষমেষ আট লাখ টাকা না দেওয়ায় জমির মালিক আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দেন।
এছাড়া, রফিকুল ইসলাম নিজে আইনজীবী হয়েও আরেক আইনজীবী নুরুল ইসলামকে নির্বাহী আদালতে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনায় নুরুল ইসলাম অভিযোগ দেন। অন্যদিকে, তরফদার আব্দুল মুকিত এক মক্কেলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কাজ করেননি। এছাড়া তিনি ওই মক্কেলের কাগজপত্র আটকে রেখে জিম্মি করে রাখেন। বাধ্য হয়ে তিনি মুকিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন সমিতিতে।
এসব অভিযোগ জেলা আইনজীবী সমিতি পৃথকভাবে তদন্ত করে। একই সাথে চার আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম.এ. গফুর।
তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার লিখিতভাবে তাদেরকে নোটিশ দিয়ে অবগত করা হবে।”
ঢাকা/রিটন/এস