কর্মক্ষেত্রে নতুন কাজ আয়ত্ত করা, গানের সুর মুখস্থ বা অপরিচিত রাস্তায় চলাচল করা– যা কিছুই হোক, আমাদের মস্তিষ্ক যখন নতুন তথ্য গ্রহণ করে, তখন তা এক বিস্ময়কর স্নায়বিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়। প্রতিবার যখন আমরা নতুন কিছু অনুশীলন করি, তখন স্নায়ুকোষের মধ্যে লক্ষ লক্ষ ক্ষুদ্র যোগাযোগ সূক্ষ্মভাবে সেগুলো সামঞ্জস্য করে এবং নিউরন জ্ঞান সঞ্চয়ের জন্য একাধিক প্রক্রিয়া ব্যবহার করে।

‘সিন্যাপস’ নামে পরিচিত কিছু সংযোগ সংকেতগুলো গ্রহণ করে; অন্যরা অতিরিক্ত শব্দ দূর করতে ভূমিকা রাখে। সম্মিলিতভাবে এসব পরিবর্তনকে ‘সিন্যাপটিক প্লাস্টিসিটি’ বলা হয়। কয়েক দশক ধরে স্নায়ুবিজ্ঞানীরা কয়েক ডজন আণবিক পথ তালিকাভুক্ত করেছেন, যা সিন্যাপসকে প্রভাবিত করে।

রহস্যময় বিষয় হলো– মস্তিষ্ক অত্যন্ত রহস্যময়ভাবে সিদ্ধান্ত নেয় কোন সিন্যাপসকে ফের গ্রহণ করতে হবে, কোনটি ছেড়ে দিতে হবে। প্রতিটি সিন্যাপসের কেবল তার নিজস্ব স্থানীয় কার্যকলাপে প্রবেশাধিকার থাকে। 

মস্তিষ্কের শিখন পদ্ধতি নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সান দিয়েগোর একটি নতুন গবেষণা এখন অপ্রত্যাশিত সমাধান দিচ্ছে। এতে মস্তিষ্কের নিউরন কীভাবে শেখে, সে সম্পর্কিত দীর্ঘকালীন ধারণাগুলো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

শিখতে অনীহার সমস্যাটি মোকাবিলার জন্য পোস্টডক্টরাল গবেষক উইলিয়াম রাইট, তাঁর সহকর্মী নাথান হেড্রিক ও তাকাকি কোমিয়ামা অত্যাধুনিক মস্তিষ্ক-ইমেজিং প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকেছেন। টু-ফোটন মাইক্রোস্কোপি একটি কৌশল, যা একক-সিন্যাপস রেজল্যুশনের মাধ্যমে জীবন্ত টিস্যুর গভীরে কার্যকলাপ রেকর্ড করতে পারে। এটি ব্যবহার করে তারা ইঁদুরের মস্তিষ্ক পর্যবেক্ষণ করেন, যখন ইঁদুর নতুন কোনো বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করেছে।

একাধিক প্রশিক্ষণ সেশনের মাধ্যমে মাইক্রোস্কোপ প্রতিটি নিউরনের ডেনড্রাইটে আগত ‘ইনপুট’ মেরুদণ্ড এবং একই কোষের বহির্গামী ‘আউটপুট’ ফায়ারিং প্যাটার্ন উভয়ই ট্র্যাক করেছে। 

গবেষণায় দেখা গেছে, মস্তিষ্কের নিউরন বহুমাত্রিক সংকেত মূল্যায়নের মাধ্যমে শেখে। এ প্রক্রিয়ায় যে জৈব-রাসায়নিক পরিবর্তন আসে, তা চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছেন তারা। গবেষকরা জানতে পেরেছেন, মাদকাসক্তি ও ট্রমা-উত্তর স্ট্রেস ডিজঅর্ডারসহ অনেক স্নায়বিক ও মনস্তাত্ত্বিক ডিজঅর্ডারের পেছনে ‘সিন্যাপটিক প্লাস্টিসিটি’র গোলযোগ দায়ী। সূত্র: আর্থ ডটকম

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে ইরানের নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সোমবার সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

অন্যদিকে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।

এদিকে, ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ