১৫ বছর পর লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনে সালমানের নায়িকা
Published: 22nd, April 2025 GMT
বলিউডের মোস্ট এলিজেবল ব্যাচেলর সালমান খান। ক্যারিয়ারে অনেক নায়িকার সঙ্গে জুটি বেঁধে পর্দায় হাজির হয়েছেন। এ তালিকায় রয়েছেন ভারতীয় সিনেমার অন্যতম দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী রাম্ভা। ‘জুড়ওয়া’, ‘বন্ধন’-এর মতো জনপ্রিয় সিনেমায় সালমান খানের নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেছেন তিনি। কিন্তু সেই খ্যাতি, সাফল্য ফেলে একেবারে আড়ালে চলে যান এই অভিনেত্রী।
ইন্দ্রকুমার প্রথমানাথন নামে এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করে সুদূর কানাডায় বসবাস শুরু করেন রাম্ভা। জাঁকজমকপূর্ণ রুপালি জগত থেকে বিদায় নিয়ে সংসারে মন দেন। বলিউড ও দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি দাপিয়ে বেড়ানো এই অভিনেত্রী বর্তমানে তিন সন্তানের জননী। তার তিন সন্তানের নাম লানিয়া, সাশা এবং শিবিন।
দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে শোবিজ অঙ্গন থেকে দূরে রয়েছেন রাম্ভা। বিরতি ভেঙে ফের নিজ অঙ্গনে ফিরেছেন। তবে সিনেমা নয়, একটি টিভি শোয়ের মাধ্যমে। ড্যান্স শো ‘জোড়ি আর ইউ রেডি’-এর দ্বিতীয় সিজনে বিচারকের আসনে দেখা যাবে তাকে। এরই মধ্যে অনুষ্ঠানটির শুটিংয়ে অংশ নিয়েছেন। এত বছর বিরতি নেওয়া এবং ফেরার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন এই অভিনেত্রী।
রাম্ভা বলেন, “মা হিসেবে মনে করি, বাচ্চাদের একটি নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত বাবা-মায়ের মধ্যে অন্তত একজনকে তাদের পাশে থাকা প্রয়োজন। আমি সিনেমা থেকে দূরে। অভিনয়ের প্রতি আমার আগ্রহের ব্যাপারটি আমার স্বামী জানে। আমাদের ছেলের বয়স এখন ৬ বছর। মেয়েরা অনেকটা বড় হয়েছে। তাদের বয়স যথাক্রমে— ১৪ ও ১০ বছর। আমার স্বামী মনে করে, মেয়েরা যেহেতু বড়, তারা ছেলেকে সামলাতে পারবে। এরই মধ্যে টিভি চ্যানেল থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে। আমি দ্বিধাগ্রস্ত ছিলাম কারণ আমার ছেলেকে অন্য স্কুলে ভর্তি করাতে হবে। কিন্তু আমার পরিবার আক্ষরিক অর্থেই আমাকে টিভি অনুষ্ঠানটি করতে অনেকটা বাধ্য করেছে।”
দীর্ঘ দিন পর শুটিংয়ে ফেরার অভিজ্ঞতা জানিয়ে রাম্ভা বলেন, “শুটিংয়ের প্রথম দিন স্বপ্নের মতো মনে হয়েছিল। আমি সেদিন ভীষণ নার্ভাস ছিলাম। ভ্যান থেকে নামতে ভয় পাচ্ছিলাম। আমাকে প্রথম যে শটটি দিতে হয়েছিল তা হলো— ‘আজাগিয়া লায়লা’ গানটি। স্যান্ডি মাস্টার আমাকে ভরসা দিয়েছিলেন। আমি যখন প্রথম শট শেষ করি, তখন সবাই হাততালি দিয়ে বলেন, ‘আমি ৩০ বছর আগে যা করেছি তা পুনরায় তৈরি করেছি!’ তারপর থেকে ধীরে ধীরে আত্মবিশ্বাস অর্জন করি।”
অভিনয়ে না ফেরার আরেকটি কারণ ব্যাখ্যা করেছেন রাম্ভা। তার ভাষায়, “আমার স্বামী ভারতে ব্যবসা শুরু করেছে। যদিও এটা পরিকল্পনা করে হয়নি। কালা মাস্টারের পীড়াপীড়ির জন্য ধন্যবাদ। কারণ আমিও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসেছিলাম। মেকআপ করা, মঞ্চে ওঠা এবং মানুষের সাড়া আমাকে চলচ্চিত্রে ফিরে আসার জন্য আগ্রহী করে তুলেছিল। আমি যে অভ্যর্থনা পেয়েছিলাম, তা দেখে আমার বাচ্চারাও রোমাঞ্চিত হয়েছিল। আমি ১৫ বছর চলচ্চিত্রে কাজ করিনি। কিন্তু সিনেমা আমার রক্তে মিশে আছে। আমি আমার সময়ের অনেক সহকর্মীকে এখনো অভিনয় করতে দেখছি। তাই আমারও সেই ইচ্ছা ছিল। কিন্তু আমি আমার খ্যাতি ধরে রাখার ব্যাপারটি নিশ্চিত করতে চেয়েছিলাম। এজন্য ফিরে আসতে চাইনি।”
কানাডায় বসবাস করার সময়ে ভারতীয় সিনেমা দেখতেন রাম্ভা। তা জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, “বিয়ের পর আমরা কানাডায় বসবাস শুরু করি। সেখানে আমার স্বামী ইন্টেরিয়রের ব্যবসা করেন। রজনী স্যারের (রজনীকান্ত) সিনেমা ছাড়া কানাডায় আমরা খুবই কম সিনেমা দেখতে হলে যেতাম। বাইরে বের হলেও খুব কাছাকাছি জায়গায় যেতাম। বিশেষ করে যেখানে বাচ্চাদের জন্য কিছু থাকত। আমাদের একটা হোম থিয়েটার সেট-আপ ছিল। তাই আমরা ঘরে একসঙ্গে বসে সিনেমা দেখতাম। প্রতি শুক্রবার রাত ছিল তামিল সিনেমার রাত।”
২০১০ সালে ব্যবসায়ী ইন্দ্রকুমারের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন রাম্ভা। ২০১৬ সালে তাদের মধ্যে বেশকিছু সমস্যা তৈরি হয়েছিল। দাম্পত্য কলহের কারণে কিছুদিন আলাদাও থেকেছেন তারা। পরে অবশ্য রাম্ভার কাছে ফিরে আসেন তার স্বামী।
১৯৯২ সালে মালায়ালাম ভাষার ‘সরগাম’ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় পা রাখেন রাম্ভা। একই বছর তেলেগু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে অভিষেক হয় তার। তারপর তামিল, কন্নড়, ভোজপুরী, হিন্দি, ইংরেজি ও বাংলা ভাষার অনেক সিনেমায় কাজ করেন এই অভিনেত্রী। ‘দাদা’, ‘চিতা’, ‘রিফিউজি’ নামে ভারতীয় বাংলা সিনেমায়ও দেখা গেছে তাকে।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম র স ব ম হয় ছ ল ব যবস প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বেরোবি
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে শিক্ষার্থীদের। গত ২৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের গেজেট প্রকাশ হয়ছে গঠনতন্ত্র।
এরই মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর হতে যাচ্ছে কাঙিক্ষত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ তথা ব্যাকসু নির্বাচন। তবে এর জন্য আমরণ অনশন থেকে শুরু করে সব ধরনের কর্মসুচিই পালন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন:
‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’
বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের মডেল প্রদর্শন
জুলাই অভ্যুত্থান পর গণরুম ও গেস্ট রুমের যে সাংস্কৃতি ছিল, তা এখন বন্ধ হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কমকাণ্ডে সামিল হওয়াও বাধ্যতামুলক নয়।
তাই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ছাত্র সংসদ। যাতে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।
কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বেরোবির বিধিমালা অনুযায়ী, ১৩টি পদে সরাসরি নির্বাচন ও হল সংসদে নয়টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সব ধরনের কথা তুলে ধরতে পারবেন।
পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায় বলেন, “সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও লেজুরবিত্তিক রাজনীতি ব্যতীত একটি নির্বাচন হোক। যোগ্য, আদর্শ, উত্তম চরিত্র ও মনের প্রার্থী বিজয়ী হোক। নির্বাচিত হয়ে তারা হয়ে উঠুক বেরোবির একেকজন যোগ্য প্রতিনিধি। তারা ন্যায়ের পক্ষে থাকুক । তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাক বেরোবি।”
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জাওয়াদ সাজিদ বলেন, “ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের দাবি, অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার প্রধান মঞ্চ। এটি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কণ্ঠ পৌঁছে যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে। কিন্তু এজন্য সংসদকে দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। প্রকৃত অর্থে ছাত্র সংসদ তখনই সফল, যখন তা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে তাদের সমস্যার সমাধান ও কল্যাণে কাজ করে।”
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন ছাত্র সংসদ চাই, যেখানে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে এবং সব শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার হয়ে কাজ করবে। সবমিলিয়ে সবার বিশ্বস্ত জায়গা হবে এই ছাত্র সংসদ।”
ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী