দোকানে বসেছিলেন যুবদলকর্মী ইব্রাহিম, তিন অটোরিকশায় এসে বুকে-মাথায় গুলি
Published: 22nd, April 2025 GMT
চট্টগ্রামের রাউজানে মুহাম্মদ ইব্রাহিম (৩০) নামে এক যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার গাজীপাড়া গ্রামের বাজারের একটি দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে। তিনটি অটোরিকশায় করে ১০-ে১২ জনের একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তার মাথায় ও বুকে গুলি করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
এ সময় তার বাবা মুহাম্মদ আলম ও চাচা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হালিমকে লক্ষ্য করেও গুলি ছোড়া হয়। গায়ে গুলি না লাগলেও পালাতে গিয়ে পড়ে তারা আহত হয়েছেন।
নিহত ইব্রাহিম রাউজান সদর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের শমশের নগর গাজীপাড়ার মোহাম্মদ আলমের ছেলে। তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী।
পুলিশ জানায়, ইব্রাহিমের মাথায় ও বুকে গুলি করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে পুলিশ। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ দুপুরে ইব্রাহিম বাড়ির দেড় কিলোমিটার দূরে একটি দোকানের সামনে বসেছিলেন। এ সময় হঠাৎ একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তিনটি অটোরিকশায় এসে কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার মাথা ও বুক লক্ষ্য করে গুলি করতে থাকে। এ সময় ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তার মাথার একদিকে গুলি ঢুকে অন্য দিক দিয়ে বের হয়ে যায়। হত্যাকাণ্ডের পর অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে করে সন্ত্রাসীরা এলাকা ত্যাগ করে।
নিহতের চাচা আবদুল হালিম বলেন, ‘ইব্রাহিমকে আমার সামনেই গুলি করে সন্ত্রাসীরা। এগিয়ে গেলে আমাকে লক্ষ্য করেও তিন চারটি গুলি ছোড়া হয়। আমি ও আমার বড় ভাই কোনো রকমে পালিয়ে বেঁচে গেছি।’
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর দুর্বৃত্তরা পালিয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ফিরে বিস্তারিত জানাব।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য বদল
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস