লক্ষ্মীপুরে হত্যা মামলায় সাংবাদিক রুবেল গ্রেপ্তার
Published: 22nd, April 2025 GMT
লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি করে শিক্ষার্থী সাদ আল আফনান হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় সাংবাদিক রুবেল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে তাকে লক্ষ্মীপুর আদালতে সোপর্দ করা হয়।
সোমবার (২১ এপ্রিল) রাতে শহরের দক্ষিণ তেমুহনী এলাকা থেকে রুবেল হোসেনকে মারধর করে পুলিশে তুলে দেয় একদল লোক। রুবেলকে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
গ্রেপ্তারের পর রুবেল সাংবাদিকদের জানান, পরিকল্পিতভাবে তাকে মারধর করে পুলিশে দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক হিসেবে সংবাদ পরিবেশনের জন্য ৪ আগস্ট তিনি ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছিলেন। কিন্তু ষড়যন্ত্রমূলকভাবে হত্যা মামলায় তার নাম জড়িয়ে দেওয়া হয়।
আরো পড়ুন:
ইসরায়েলি হামলায় সাংবাদিক নিহতের প্রতিবাদে রাজশাহীতে মানববন্ধন
তত্ত্বাবধায়কের বিয়ে, কাঙাল হরিনাথের প্রয়াণ দিবসে ছিল না আয়োজন
রুবেল সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের আবিরনগর গ্রামের ফজল করিমের ছেলে। তিনি অনলাইন নিউজপোর্টাল ঢাকামেইলের লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি। এরআগে তিনি জেটিভি অনলাইন ও দেশেরপত্র পত্রিকার প্রতিনিধি ছিলেন।
রুবেলের বাবা ফজল করিম ও স্ত্রী রিমি আক্তারসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার (২১ এপ্রিল) রাতে রুবেল শহরের দক্ষিণ তেমুহনী এলাকায় অবস্থান করছিলেন। সেখানে একদল লোক এসে তাকে মারধর করে পুলিশে হাতে তুলে দেয়। মারধরকারীদের মধ্যে মাথায় হেলমেট পড়া লোকজনও ছিল।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ জানান, হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি রুবেল হোসেন। লোকজন তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে তাকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তাকে লক্ষ্মীপুর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালত তাকে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
গত ৪ আগস্ট শহরের মাদাম ব্রিজ এলাকায় যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি করে। এতে ব্রিজের ওপরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় শিক্ষার্থী সাদ আল আফনান। এ ঘটনায় আফনানের মা নাছিমা আক্তার বাদী হয়ে ৭৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৬০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। একইদিন তমিজ মার্কেট এলাকায় আন্দোলনকারী আরো তিন শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন, কাউসার হোসেন বিজয় ও ওসমান গণি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। এসব হত্যা, বিস্ফোরক, হত্যা চেষ্টা ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় থানা ও আদালতে কয়েকটি মামলা হয়েছে।
ঢাকা/লিটন/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর লক ষ ম প র ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস