ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) গুলশান-২ এলাকায় রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে গড়ে ওঠা অন্তত ২০০টি অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করেছে। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে ১৯নং ওয়ার্ডের আওতাধীন এলাকাগুলোতে এই অভিযান পরিচালিত হয়।

ডিএনসিসির সম্পত্তি কর্মকর্তা ফারজানা খানম এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহীদুল ইসলামের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে গুলশান-২ এর উত্তর জামে মসজিদের দুই পাশ, ৯৭ ও ৯৮ নম্বর রোড, কাঁচাবাজারের সামনের এলাকা ও ডিএনসিসি মার্কেটের পেছনের রাস্তা এবং আশপাশের ফুটপাত দখল করে গড়ে ওঠা খাবারের টং দোকান, হকারদের সামগ্রীর দোকান, চায়ের দোকানসহ বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।

এই অভিযানের মাধ্যমে প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকা দখলমুক্ত করা হয়। অভিযানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে মোট ৪টি মামলায় ১৪ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এর মধ্যে একটি নির্মাণাধীন ভবনের মালিককে রাস্তার ওপর নির্মাণসামগ্রী ফেলার দায়ে ১০ হাজার টাকা, দুই দোকানিকে মালামাল রাখার দায়ে এক হাজার ও দুই হাজার টাকা এবং একজন দোকানিকে রাজস্ব না দেওয়ার কারণে এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো.

শাহীদুল ইসলাম বলেন, “রাস্তা ও ফুটপাতে অবৈধ দোকান ও স্থাপনার কারণে জনসাধারণের স্বাভাবিক চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে এবং যানজটও বেড়েছে। এই ধরনের অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ডিএনসিসির নিয়মিত অভিযান চলবে।”

তিনি আরো জানান, জনদুর্ভোগ কমাতে এবং নগরীতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ডিএনসিসির উচ্ছেদ অভিযান ও ভ্রাম্যমাণ আদালত কার্যক্রম নিয়মিতভাবে পরিচালনা করা হবে।

ঢাকা/আসাদ/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড এনস স র পর চ ল অব ধ দ

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চুলার ধোঁয়া নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা, স্বজনদের হামলায় যুবক নিহত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় চুলার ধোঁয়া নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে ভাই-ভাবি-ভাতিজার হামলায় আহত হয়ে মনির হোসেন (৩৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের উড়শিউড়ার নন্দ দিঘিরপাড় গ্রামে হামলার ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যা সাতটার দিকে জেলা শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

নিহত মনির হোসেন উড়শিউড়ার নন্দ দিঘিরপাড় গ্রামের মৃত খুরশিদ মিয়ার ছেলে। মনির পেশার দিনমজুর ছিলেন। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি চতুর্থ ছিলেন। তাঁর স্ত্রী এবং সাত ও দেড় বছর বয়সী দুটি ছেলে আছে।

নিহতের পরিবার ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে মনিরের বড় ভাই বাবুল মিয়ার (৫৫) স্ত্রী জুবায়দা বেগম (৪৫) একটি মাটির চুলা নিয়ে মনিরের বসতঘরের দরজার সামনে রান্না বসান। মাটির চুলার ধোঁয়া বসতঘরে প্রবেশ করলে মনির আপত্তি জানান। এতে বাবুলের স্ত্রী উচ্চস্বরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলা শুরু করেন। মনির প্রতিবাদ করলে বাবুল মিয়ার ছেলে শাওন মিয়া (১৫) এগিয়ে এসে চাচা মনিরের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে শাওন দা নিয়ে মনিরকে মারতে এগিয়ে এলে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এ সময় বড় ভাই বাবুল, সাচ্চু, সাচ্চুর স্ত্রী হালিমা বেগম (৪৩) ও ছেলে ইমন (২৬) এবং শাওন লাঠি ও কাঠ দিয়ে মনিরকে বেধড়ক মারধর করেন। একপর্যায়ে তাঁরা ইট দিয়ে মনিরের মাথায় আঘাত করেন। পরে স্থানীয় লোকজন মনিরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে শহরের বেসরকারি সেন্ট্রাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা সাতটার দিকে মনিরের মৃত্যু হয়।

হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক মামুনুর রশিদ বলেন, ‘সাতটার দিকে ইসিজি পরীক্ষায় কোনো স্পন্দন না পাওয়ায় ওই রোগীকে মৃত ঘোষণা করি।’

নিহত ব্যক্তির স্ত্রী জুলেখা বেগম বলেন, ‘বসতঘরের সামনে মাটির চুলা এনে রান্না শুরু করেন বাবুল ভাইয়ের স্ত্রী। তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বকবক করছিলেন। আমার স্বামী পাল্টা কথা বলেন। এতে ভাতিজা শাওন দা নিয়ে স্বামীকে মারতে এগিয়ে আসে। স্বামীর বড় ভাই বাবুল ছেলেরে বলেছে, “ওরে ধর বেশি করে বাইরা।” তখন বাকিরা লাঠি, কাঠ ও ইট দিয়ে মারধর করে। শাওন আগেও স্বামীকে মারতে এসেছিল।’

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মাটির চুলার ধোঁয়াকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে ঝগড়ার উৎপত্তি। নিরীহ ছেলেটাকে একা পেয়ে তারা সবাই মারধর করে মেরে ফেলেছে।’

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য বাবুল মিয়াসহ অন্যদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও সেগুলো বন্ধ পাওয়া যায়।

খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে সদর থানা-পুলিশ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এম এম রকীব উর রাজা ওই বেসরকারি হাসপাতালে যান। সদর থানার কর্মকর্তা জিয়া উদ্দিন বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে। জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ