বাড়িঘরে হামলা ও প্রাণনাশের আশঙ্কা করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জামালপুর জেলার আহ্বায়ক মীর ইছহাক হোসেন ইখলাস। ফেসবুক লাইভে এসে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা দাবি করেছেন তিনি।

সোমবার রাত ১০টায় নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে ৫ মিনিটের লাইভে হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান মীর ইছহাক। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভিডিওতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, দীর্ঘ রক্তাক্ত আন্দোলনের মাধ্যমে তারা ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটিয়েছে। অথচ আজও তাদের জীবনের নিরাপত্তা নেই। ৫ আগস্টের পর আট মাস কেটে গেলেও আসামিরা তাঁর বাড়িতে এসে রাতের আঁধারে হামলার চেষ্টা করছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই নেতার অভিযোগ, সদর উপজেলার মেস্টা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা বদরুল হাসান বিদ্যুতের পরিবার তাঁর বাড়িতে হামলার ষড়যন্ত্রে জড়িত। বিদ্যুতের বাবা, চাচা ও চাচাতো ভাই মিলে তাঁর গ্রামের বাড়িতে হামলা করতে গিয়েছিলেন। এ সময় তারা তাঁকে গুম বা খুন করার হুমকি দিয়েছেন।

ইখলাস প্রশ্ন তোলেন, তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হয়েও যদি নিরাপত্তা না পান, তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে? আইন উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, কেন তাদের প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে?

লাইভে তিনি বলেন, পরিকল্পনা থাকলেও ওই রাতে হামলা ঠেকানো গেছে। তবে হামলাকারীরা এখনও আত্মগোপনে থেকে তাঁকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর অভিযোগ, তাঁর বাবা-মাকে গ্রামে হামলার মুখে পড়তে হচ্ছে, তাদের জীবন এখন অনিশ্চয়তার মধ্যে।

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘এ সরকার ও তার দোসররা এখনও তাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। পুলিশ ও প্রশাসন কিছুই করছে না। হামলার পরিকল্পনাকারী বিদ্যুৎকে কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না, সেটা জানতে চাই। তাহলে অপরাধীরা কি টাকার বিনিময়ে ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে?’

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে উদ্দেশ করে ইখলাস বলেন, ‘আপনি বারবার এই আসামিদের সুযোগ দিচ্ছেন, যা আমাদের ওপর হামলার সুযোগ করে দিচ্ছে।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, পুলিশ প্রশাসন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ। তিনি জীবন দিয়ে হলেও চান, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হোক।

আসামিদের গ্রেপ্তার না করা হলে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে আমরণ অনশনে বসবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

জামালপুর সদর থানার ওসি আবু ফয়সল মো.

আতিক জানান, তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে আত্মসমর্পণ ও অস্ত্রত্যাগের প্রস্তাব মাওবাদীদের
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত