দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ বা এমজিআইয়ের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে শিল্পগোষ্ঠীটি। বিবৃতিতে বলা হয়, উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে তারা। সম্প্রতি কিছু গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিল্পগোষ্ঠীটিকে নিয়ে যেসব অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে, সেসব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে তা প্রত্যাখ্যানের কথা জানায় এমজিআই।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি কিছু সংবাদমাধ্যমে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগের মাধ্যমে আমাদের সুনাম ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমাদের নজরে এসেছে। এমজিআইয়ের পক্ষ থেকে আমরা এসব অভিযোগ দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। এমজিআইয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, যেকোনো দেশি ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের যেকোনো স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্তে আমাদের বিষয়ে প্রচলিত আইন ও নিয়মকানুন মেনে চলার বিষয়টি প্রমাণিত হবে। আমরা কঠোরভাবে অভ্যন্তরীণ শাসনব্যবস্থা অনুসরণ করি এবং আমাদের কার্যক্রমের নিয়মিত নিরীক্ষা বা অডিট হয়। তাই আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারি, নিরপেক্ষ তদন্তে আমাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অনিয়ম পাওয়া যাবে না।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গ্রহণযোগ্যতার জন্যই আমরা আইএফসির সঙ্গে একাধিক অর্থায়ন এবং ডিইজি এফএমও ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ ঋণ চুক্তি করতে পেরেছি। এসব প্রতিষ্ঠান সব সময় সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা, নৈতিকতা এবং আইন অনুশাসনের ক্ষেত্রে কঠোর থাকে, যা এমজিআই-ও সব সময়ই সুনির্দিষ্টভাবে মেনে চলে।’

বিবৃতিতে শিল্পগোষ্ঠীটি আরও বলেছে, ‘আমরা প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসায়িক পরিবেশকে একটি শক্তিশালী অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করি। তবে আমাদের বিশ্বাস, আমাদের বিষয়ে কিছু অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করা হয়েছে, যার লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় একটি শিল্প গ্রুপকে অস্থিতিশীল করে তোলা। আমরা সব অংশীজন, বিশেষ করে সংবাদমাধ্যমগুলোকে কোনো ধরনের অনুমান বা গুজবের বদলে বস্তুনিষ্ঠ ও সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে দায়িত্বশীলতা সাংবাদিকতার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।’

এমজিআই আরও জানায়, ‘আমরা আমাদের সব সহকর্মী, অংশীদার, বিনিয়োগকারী, বাংলাদেশ সরকার এবং দেশ-বিদেশের শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি, যাঁরা আমাদের প্রতি আস্থা রেখেছেন। এই আস্থা আমাদের অনুপ্রেরণা, যা আমাদের সততা ও দৃঢ়তার সঙ্গে জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখতে উৎসাহিত করে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম দ র ব

এছাড়াও পড়ুন:

ঘুমের ওষুধ খাইয়ে স্বামীকে হত্যা, ফাঁদ পেতে ধরা হলো প্রেমিককে

পাবনার চাটমোহর উপজেলার কাটেঙ্গা গ্রামে ক্যানসার আক্রান্ত স্বামীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে। 
দশদিন পর ঘটনা জানাজানি হলে  অভিযুক্ত স্ত্রী শারমিন খাতুন ও তার প্রেমিককে আটক করে পুলিশ। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে ঘটনাটি জানায়। 

এর আগে গত ৩০ নভেম্বর চাটমোহরের দক্ষিণপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত স্বামী শের আলী (৩৫) দক্ষিণপাড়া গ্রামের ভোলা প্রামানিকের ছেলে। শারমিন খাতুন (২৬) কাটেঙ্গা গ্রামের শাহ আলমের মেয়ে। এবং তার প্রেমিক অনিক (২২) একইগ্রামের মহাজন সরকারের ছেলে। 

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ নভেম্বর শের আলীর মৃত্যু হয়। তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। তার মৃত্যুর পর বিষয়টি স্বাভাবিক হিসেবে শুরুতে মেনে নিলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুকে ঘিরে পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দেয়।
জানা যায়, শের আলীর চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও ইউটিউবারদের মাধ্যমে চিকিৎসা সহায়তার অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে, সেই অর্থের একটি বড় অংশ শারমিন অনিককে দিয়েছেন। 

মৃত শের আলীর ফুপাতো ভাই এনামুল হোমেনের দাবি, শারমিন ও অনিকের মধ্যে ফেসবুক মেসেঞ্জারে হওয়া কথোপকথন ঘেঁটে টাকা লেনদেনের একাধিক তথ্য পাওয়া গেছে। সেখান থেকেই প্রথম সন্দেহের সূত্রপাত। 

এরপর ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে পরিবারের সদস্যরা কৌশল অবলম্বন করেন। শারমিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে অনিককে টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আসতে বলে মেসেজ পাঠানো হয়। অনিক এই ফাঁদে পা দেন।  

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে অনিকে টাকা নিতে এলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে অসংলগ্ন বক্তব্য ও পরস্পরবিরোধী তথ্য দিলে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। পরে অনিক ও শারমিন স্বীকার করেন, প্রায় চার মাস ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। 

শারমিন এ সময় জানান, গত ৩০ নভেম্বর একসঙ্গে দশটি ঘুমের ওষুধ শের আলীকে তিনি খাইয়েছিলেন। এতে শের আলীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে এবং কিছু সময়ের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। 

শের আলীর মা শিরীনা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘‘আমার অসুস্থ ছেলেকে ওর বউ ঘুমের ওষুধ খাইয়েছে। সে সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে এসে দেখি আমার ছেলে আর বেঁচে নেই। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’’

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘মৃত ব্যক্তির পরিবারে পক্ষ থেকে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি বা মামলা করেনি। যেহেতু ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে আটক করা হয়েছে, সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাদের পাবনা আদালতে সোপর্দ করেছে।’’ 

ঢাকা/শাহীন//

সম্পর্কিত নিবন্ধ