পতিত সরকারের প্রধানের নির্দেশে ভাস্কর মানবেন্দ্রের বাড়িতে আগুন: রিজভী
Published: 23rd, April 2025 GMT
পালিয়ে থাকা স্বৈরাচারের ঘাপটি মারা দোসররাই ভাস্কর মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার সকালে মানিকগঞ্জের গড়পাড়া মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়ি পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এ দাবি করেন।
এ সময় তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে মানবেন্দ্র ঘোষের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা তুলে দেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ইঙ্গিত করে রহুল কবির রিজভী বলেন, তার দোসররা এখনও দেশের ভেতর ঘাপটি মেরে আছে। তাদের কাছে আছে ব্যাংক লুটসহ অবৈধভাবে আয়করা বিপুল অঙ্কের টাকা। এইসব অবৈধ টাকা দিয়ে তারা সারাদেশে নাশকতা করছে।
রুহুল কবির রিজভী আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই; আপনারা আওয়ামী লীগ নিয়ে কী করবেন? উপদেষ্টা অনেক কথাই বলেন, তারা রাজনীতি করবে কি করবে না সেটা আইন আদালতের ব্যাপার। আপনারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনও আইনের বলে? আপনাদের সমস্ত গণতন্ত্রকামী মানুষ সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু কনস্টিটিউশনালি বা আইনগতভাবে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনও ভিত্তি নেই।
তিনি আরও বলেন, যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে তারা প্রত্যেকেই আপনাদের সমর্থন করেছে, সে অনুযায়ী আপনারা দেশ চালাচ্ছেন। এখন আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কী হবে? আওয়ামী লীগ কীভাবে রাজনীতি করবে, সেটা নির্ধারণ করার দায়িত্ব আপনাদের। কারণ প্রশাসন আপনাদের হাতে, অন্য সব স্টেট মেশিনারি আপনাদের হাতে। আওয়ামী লীগকে নিয়ে আপনারা কী করবেন সেটা আপনাদেরই ঠিক করতে হবে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের দোসরদের অনুসারীরা ঘাপটি মেরে আছে তৃণমূলে, সমাজের নানা জায়গায়। ওদের কাছে পেট্রোল কিনে বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার যে অর্থ, মানুষকে হত্যা করার জন্য যে অস্ত্র লাগে তার অর্থ তাদের কাছে আছে। সেটাকে দমন করতে অন্তর্বর্তী সরকার কী আইন প্রণয়ন করতে চায় সেটা আপনারা জনগণের কাছে খোলাসা করুন। যেহেতু প্রশাসন আপনাদের হাতে।
তিনি বলেন, দোসরদের অনেকেই পালিয়ে গেছে পার্শ্ববর্তী দেশসহ অনেক দেশে। কিন্তু যারা নৈরাজ্য ছড়াচ্ছে তারা প্রশ্রয় পাচ্ছে কার দ্বারা। প্রশাসনের ব্যক্তিবর্গের তো এটা জানার কথা। যারা ১৫ বছর যাবত শেখ হাসিনাকে পাহারা দিয়েছে, ব্যাংক লুট করেছে, অন্যের সম্পদ লুট করেছে, টাকা পাচার করেছে তারা আজ এই জনসমুদ্রের ভেতর কোথায় লুকিয়ে আছে অন্তর্বর্তী সরকার যদি খুঁজে বের করতে না পারে তাহলে তো এই সরকারকে মানুষ ব্যর্থ সরকার বলবে।
রিজভী আরো বলেন, এই সরকার নির্বাচন নিয়ে কী তালবাহানা করছে তা আমরা দেখছি। এই সরকার তো গণতন্ত্র সংগ্রামের ফসল। তার তো প্রতিটি ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা থাকতে হবে। জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করতে হবে যে মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে আগুন লাগলো কী করে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে তার চিত্রকর্ম দিয়ে, শৈল্পিক চেতনা দিয়ে তিনি সেটাকে প্রতিবাদ করেছেন। মানবেন্দ্র ঘোষের মতো আরো কত লোক যে সামনে ক্ষতিগ্রস্ত হবে যারা গণতন্ত্রের কথা বলেছে, বহুদলীয় গণতন্ত্রের কথা বলেছে, যারা লড়াই করেছে, গুলির সামনে বুক চেতিয়ে দাঁড়িয়েছে, এখনো যারা ক্ষত বরে বেড়াচ্ছে। তারা এক এক করে তাদের ওপর আক্রমণ করবে।
এ সময় মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সভাপতি আফরোজা খানম রিতা, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আজাদ খান, নুরতাজ আলম বাহার, গোলাম আবেদীন কায়সার, জেলা কৃষক দলের সভাপতি গোলাম কিবরীয়া সাঈদ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম বাদল, যুবদলের সদস্য সচিব তুহিনুর রহমান তুহিন, যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ পারভেজ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জিন্নাহ খান জিন্নাহ, ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল খালেক শুভ, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম খান সজীব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, পহেলা বৈশাখে আনন্দ শোভাযাত্রার মোটিফ তৈরির শিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়ি গত ১৬ এপ্রিল দিবাগত রাতে কে বা করা পুড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় মানবেন্দ্রের দায়ের করা মামলায় এ পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ গণতন ত র আপন দ র সরক র আপন র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দরে বিএনপি নেতা তাওলাদের উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে আল্টিমেটাম
বন্দর উপজেলা বিএনপি নেতা তাওলাদ মাহমুদকে প্রকাশ্য দিবালোকে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির দোসরা হামলা চালিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করেছে।
সে ঘটনা মামলা করা হলো এখনো বন্দর থানা পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত মূল হোতাদেরকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। ঘটনার সাথে জড়িত হামলাকারীদের আগামী ৭২ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম দিয়েছে বন্দর উপজেলা বিএনপি।
শনিবার ( ১ নভেম্বর) সকালে মদনপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ ও সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ লিটন তাওলাদ মাহমুদের উপর নৃশংস হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে হামলার সাথে জড়িত আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির দোসরদের গ্রেপ্তারের এই দাবি জানান।
সংবাদ সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, ফ্যাসিস শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেল কিন্তু তার দোসরা এখনো রয়ে গেছে। মুছাপুর ইউনিয়ন তথা বন্দর উপজেলার বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা দীর্ঘ ১৭টি বছর আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির দোসর দ্বারা নির্যাতিত হয়েছিল।
এখনো আওয়ামী লীগের দোষরদের দ্বারা বিএনপি নেতা কর্মীরা নির্যাতিত হবে এটা খুবই দুঃখজনক। ৫ তারিখের পরও কিন্তু তারা আত্মগোপনে ছিল। কিন্তু কতিপয় কিছু নেতা ও প্রশাসনের কারণে তারা এখনো আবারো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
তারা আবারও নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের জন্য বিএনপি নেতাকর্মী ও নিরীহ জনগণের উপর হামলা চালাচ্ছে।
তারা আরও বলেন, তাওলাদ মাহমুদ উপর হামলার ঘটনায় মামলাআওয়ামী লীগে ও জাতীয় পার্টির দোসরদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়াও বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন ঘটনায় মামলাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক মামলা রয়েছে। কিন্তু বন্দর থানা পুলিশ প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপে নিচ্ছে না।
ফলে প্রতিনিয়ত তারা হামলা মামলা নির্যাতন সহকারে বিভিন্ন অপরাধ করে বেড়াচ্ছ । মুছাপুরের জনগণ তাদের হাত থেকে মুক্তি চায়। অবিলম্বে বিএনপি নেতা তাওলাত মাহমুদের ঘটনার সাথে জড়িত সকল আসামীদের গ্রেপ্তারের ৭২ ঘণ্টার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে সব সময় বেঁধে দিলাম আমরা উপজেলা বিএনপি।
যদি আগামী ৭২ ঘণ্টার মাধ্যমে তাওলাদ মাহমুদের উপর হামলাকারী মূল হোতাদেরকে গ্রেফতার করা না হয় তাহলে আমরা কঠোর থেকে কঠোরতর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবো। তার জন্য কিন্তু সকল দায়ভার পুলিশ প্রশাসনকেই নিতে হবে।