খাল-বিল দখল করে ঘুমানোর সময় শেষ: ডিএনসিসির প্রশাসক
Published: 23rd, April 2025 GMT
অবৈধ দখলদারদের হুঁশিয়ার করে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, সরকারি খাল-বিল দখল করে যারা ঘুমাচ্ছেন, তাদের ঘুমানোর সময় শেষ।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের হাইক্কার খালে (কাটাসুর) অবৈধ ভবন উচ্ছেদ অভিযান পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
অভিযান পরিচালনা করেন ডিএনসিসির অঞ্চল-৫ এর নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, ডিএনসিসির সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা খানম এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো.
অভিযানে হাইক্কার খালে (কাটাসুর) অবৈধভাবে গড়ে তোলা একটি দোতলা ভবন সম্পূর্ণ এবং তিন তলা ভবনের আংশিক গুঁড়িয়ে দিয়েছে ডিএনসিসি। এছাড়াও পাঁচটি টিনের ঘড় ভেঙে দেওয়া হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় অভিযান শুরু হয়ে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলে।
ডিএনসিসির প্রশাসক বলেছেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান এবং বঙ্গবন্ধুর নামে ক্লাব করে ঢাকা শহরের খাল, জলাধার ও পাবলিক প্লেসগুলো দখল করা হয়েছিল। আমি ঢাকাবাসীকে বলে দিতে চাই, যারা এখনো সরকারি খাল-বিল দখল করে নাকে তেল দিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছেন, তাদের ঘুমানোর সময় শেষ। যারা সরকারি জমি, খাস জমি দখল করে স্থাপনা বানিয়ে ভোগদখল করছেন, তাদের বলে দিচ্ছি, ঘুম থেকে জেগে দখল করা জায়গাটা ছেড়ে দিতে হবে। আজকের উদাহরণ (হাইক্কার খালের উচ্ছেদ) থেকে শিক্ষা নিয়ে আপনারা নিজ দায়িত্বে এগুলো সরিয়ে নিন। না হলে বিপদ হবে। আমরা আসব, অবৈধ দখলদারদের কোনো নোটিশ দিব না। সরাসরি উচ্ছেদ করা হবে।
তিনি আরো বলেন, অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান আমাদের চলমান প্রক্রিয়া। আমরা উচ্ছেদ অভিযান করে ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় মাঠ দখলমুক্ত করছি, অবৈধ দোকান ও হকার উচ্ছেদ করছি এবং ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধে অভিযান শুরু করেছি। বাড়ি তিন তলা হোক বা ১০ তলা হোক, আমরা সব ভেঙে দেব একটা একটা করে। আমাদের লোকবল কম, ধারাবাহিকভাবে উচ্ছেদ করা হবে। আজকে নিরাপত্তা বাহিনী, আর্মি আছে, অন্যান্য ভারী যন্ত্রপাতি রেখেছি। আমরা কোনো ছাড় দেব না।
মোহাম্মদ এজাজ বলেন, এই খালের (হাইক্কার) অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর আবার খনন করে লাউতলা খালের সাথে সংযোগ করে দেব। ডিএনসিসির কবরস্থানের দেয়ালও ভেঙে দিয়ে পানির প্রবাহ নিশ্চিত করা হবে। ফলে, বৃষ্টির পানি, বন্যার পানি খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে তুরাগ নদীতে যাবে।
ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরেই মোহাম্মদপুরের এই খাল পরিদর্শনে এসে দেখি, খালে বালু ফেলে ভরাট করছে। খালের ভিতরে অনেকগুলো স্থাপনা হয়ে গেছে। আমি তাৎক্ষণিক অবৈধ ভবনগুলো ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিলে ভবনের মালিকরা আমাকে জানিয়েছেন, এগুলো খালের সীমানায় পড়েনি, তারা চ্যালেঞ্জ করেছেন। পরে আমাদের সার্ভেয়ার এবং তাদের সার্ভেয়ার যৌথভাবে সার্ভে করেছে। যৌথ সার্ভেতে দেখা গেছে, একটি দোতলা বাড়ি, একটি তিনতলা বাড়ি এবং মসজিদের একাংশসহ বেশ কয়েকটি টিনের ঘর খালের সীমানায় পড়েছে। কিন্তু, তারা নিজেরা ভেঙে নেয়নি। তাই, আজকে ডিএনসিসি থেকে আমরা অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ ভবন ও স্থাপনা উচ্ছেদ করছি।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ডে আমি নিজে গিয়েছি। রাস্তায় ট্রাকের পার্কিং বন্ধে স্থায়ী সমাধানের জন্য আমরা কাজ করছি। আশা করছি, আগামী কোরবানির ঈদের আগে এটি সমাধান করতে পারব।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মিরপুর-১০ এবং ফার্মগেট ইন্দিরা রোড সম্পূর্ণভাবে ফুটপাতের হকার ও টেসলামুক্ত (ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা) হবে। আমি অভিযান শুরু করেছি। রাতে ও দিনে অভিযান পরিচালনা করব।
আসন্ন বর্ষায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের প্রস্তুতির বিষয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আমাদের টিম সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে। গতকালও ডিএনসিসি এলাকার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের ডাক্তার ও প্রতিনিধি এবং বিশেষজ্ঞদের নিয়ে সভা করেছি। ডেঙ্গু মোকাবিলার জন্য আমরা মশা নিধন কার্যক্রম করছি। মশার ওষুধ ঠিকমতো ছিটানোর কাজটি মনিটরিং করার জন্য আমরা সেনাবাহিনীর সহায়তা নেওয়ার পরিকল্পনা করছি। তারপরও ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গেলে তাৎক্ষণিক সঠিক চিকিৎসা যেন নিশ্চিত করা হয়, সেই প্রস্তুতি নিয়ে হাসপাতালগুলোর সাথে কাজ করছি।
ঢাকা/এএএম/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অব ধ দ আম দ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলের ৯ ভবন ধ্বংস করল ইরান
ইসরায়েলের হামলার জবাবে নতুন করে ইরানের চালানো ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর জেরুজালেম ও তেল আবিবে বড় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এতে একজন নিহত এবং প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। পাশাপাশি অন্তত নয়টি ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে।
ইসরায়েলের হারেৎজ সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র তেল আবিবের কেন্দ্রস্থলে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় একটি উঁচু ভবনে আঘাত হানায় ভবনটির নিচের এক-তৃতীয়াংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তেল আবিবের শহরতলির রামাত গানেও নয়টি ভবন ধ্বংস হয়েছে।
ইরান দেড় শতাধিক মিসাইল ছুঁড়েছে বলেও জানিয়েছে সংবাদপত্রটি। এদিকে কিছুক্ষণ আগে (বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টার দিকে) জেরুজালেমের আকাশে ফের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের একটি নতুন ঢেউ ইসরায়েলের দিকে এগিয়ে আসছে। ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসরায়েল রাষ্ট্রের দিকে আরও একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। আইডিএফ এর আগে নতুন করে হামলার বিষয়ে সতর্ক করেছিল এবং বলেছিল যে তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কার্যকর রয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এই হামলায় হতাহতের কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার ভোররাতে ইরানে হামলা শুরু করে দখলদার ইসরায়েল। নৃশংস এই হামলায় ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা, বিজ্ঞানীসহ অন্তত ৭৮ জন নিহত হয়েছে। দখলদার বাহিনীর হামলায় আহত হয়েছেন তিন শতাধিক মানুষ। এই হামলার উপযুক্ত জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে ইরান।