ম্যাচ জিততে না পারলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার কাছে লা লিগা শিরোপা হারানোটা নিশ্চিত হয়ে যেত। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দিবাগত রাতে মায়োর্কার বিপক্ষে বার্সার ১-০ ব্যবধানে জয়ের পর, রিয়াল মাদ্রিদের জয়ের কোন বিকল্পই ছিল না। আরদা গুলারের প্রথমার্ধে করা এক চমৎকার গোলে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা বুধবার (২৩ এপ্রিল) দিবাগত রাতে গেটাফের বিপক্ষে ১-০ ব্যবধানে একটি রোমাঞ্চকর ম্যাচ জিতে।

এই জয় রিয়ালের লা লিগা শিরোপার আশা বাঁচিয়ে রেখেছে এখনো। স্প্যানিশ লিগে পাঁচটি ম্যাচ বাকি থাকতে বার্সেলোনার থেকে চার পয়েন্ট পিছিয়ে আছে লস ব্ল্যাঙ্কসরা।

গেটাফের মাঠ কলিসিউম স্টেডিয়ামে রিয়াল প্রথম একাদশের গুরুত্বপূর্ণ অনেক খেলোয়াড়কে বিশ্রামে রেখেই প্রথম একাদশ সাজায়। শনিবার বার্সার বিপক্ষে কোপা দেল রে ফাইনালের কথা মাথায় রেখে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে বিশ্রাম দিয়েছিলেন ক্লাবটির ইতালিয়ান বস আনচেলত্তি। তবুও মাদ্রিদ ম্যাচে আধিপত্য দেখিয়েছে।

আরো পড়ুন:

বড় ধাক্কা বার্সেলোনায়

৩-১ এ পিছিয়ে পড়েও বার্সার ধ্রুপদী জয়

চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার-ফাইনালে আর্সেনালের বিপক্ষে হারের সময় গোড়ালির চোটে পড়া ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপে স্কোয়াডের বাইরে ছিলেন। আনচেলত্তি জুড বেলিংহ্যাম, রদ্রিগো, লুকা মদ্রিচ, আন্তোনিও রুডিগার এবং এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গাকেও বেঞ্চে রেখেই ম্যাচ শুরু করেন।

তবুও রিয়াল সুসংগঠিত পারফরম্যান্স দেয়। ম্যাচের ২০তম মিনিটে তুরস্কের মিডফিল্ডার গুলারের বক্সের প্রান্ত থেকে নেওয়া চমৎকার শটে এগিয়ে যায় রিয়াল। যদিও গুলারের গোলের পর গেটাফের পাঁচজন ডিফেন্ডারের কৌশলগত রক্ষণভাগ ভেদ করা কঠিন হয়ে পড়ে।

বাম প্রান্ত দিয়ে খেলা ভিনিসিয়ুস জুনিয়র গেটাফের রক্ষণের জন্য সমস্যা কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। গেটাফে গোলরক্ষক ডেভিড সোরিয়া তাকে দুইবার দারুণভাবে প্রতিহত করেন। ম্যাচের ৩২তম মিনিটে ভিনি স্বদেশী ১৮ বছর বয়সী স্ট্রাইকার এন্দ্রিককে বল বাড়ান, কিন্তু ডিফেন্ডার জেনে গোললাইন থেকে দুর্দান্ত ক্লিয়ার করেন।

বিরতির পরও মাদ্রিদ খেলার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখে, যেখানে সোরিয়া ঠেকিয়ে দেন ব্রাহিম দিয়াজের একটি বাঁকানো শট ও ভিনিসিয়ুসের একটি জোরালো প্রচেষ্টা। মাদ্রিদ ক্লান্ত হতে শুরু করলে, গেটাফে পাল্টা আক্রমণে সুযোগ তৈরি করতে থাকে এবং ৭২তম মিনিটে বোরহা মায়োরালের দারুণ পাস পেয়ে মাউরো আরামবার্রি একটি সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন।

শেষ মুহূর্তে রিয়াল দ্বিতীয় গোলের জন্য চাপ বাড়ালে তারা পাল্টা আক্রমণের ঝুঁকিতে পড়ে, কিন্তু থিবো কোর্তোয়া ওমর আলদেরেতে ও হুয়ানমির দুটি দারুণ শট ঠেকিয়ে দলকে এগিয়ে রাখেন। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এক মাস পর এটি ছিল মাদ্রিদের টানা দ্বিতীয় জয়। আনচেলত্তি আশা করছেন এই জয়ের ধারাবাহিকতা তারা কোপা দেল রে ফাইনালেও ধরে রাখতে পারবে।

এই জয়ে রিয়াল মাদ্রিদ ৭২ পয়েন্ট নিয়ে লা লিগা টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে আছে। তৃতীয় স্থানে থাকা অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের থেকে নয় পয়েন্ট এগিয়ে তারা, যদিও লস রোজাব্ল্যাঙ্কসরা একটি ম্যাচ কম খেলেছে। বৃহস্পতিবার রাতে তারা রায়ো ভাইয়েকানোর মুখোমুখি হবে। শীর্ষে থাকা বার্সার সংগ্রহ ৭৬ পয়েন্ট।

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে ইরানের নতুন হামলায় নিহত বেড়ে ৫, আহত ২৯

ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে অন্তত চার জায়গায় হামলা চালিয়েছে ইরান। এ হামলায় তিনজন নিহত হয় বলে জানায় জেরুজালেম পোস্ট। বিবিসি আরও দুইজন নিহতের খবর দেয়। এরপর আরেকজনের ফলে নতুন হামলায় ইসরায়েলে নিহত বেড়ে পাঁচজনে পৌঁছাল।

আজ সোমবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স ও ব্লাড ব্যাংক সংস্থাগুলো বলছে, এসব হামলায় ২৯ জন আহত হয়েছেন।

বিবিসির খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম জানান, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী, একজন পুরুষ। 

এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে হামলায় একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়াও বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও সেখান আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।

এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছিল, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।

এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ