বিদেশে গিয়ে বাংলাদেশি সিম ব্যবহারের জন্য রোমিং সেবার বিপরীতে চার্জ টাকায় নেওয়ার জন্য মোবাইল অপারেটরদের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মোবাইল রোমিং সেবা সহজ করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার এ-সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা ব্যাংকগুলোতে পাঠানো হয়। একজন গ্রাহক থেকে প্রতিবার ভ্রমণে সর্বোচ্চ ৬ হাজার টাকা এবং প্রতি পঞ্জিকা বছরে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিল নেওয়া যাবে।
রোমিং সেবা চালু করার সময় মোবাইল অপারেটরদের নির্দিষ্ট কিছু নির্দেশনা অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে- একাধিক মোবাইল নম্বর বা অপারেটর ব্যবহার করা হলেও আলোচ্য সীমা অতিক্রম করা যাবে না। ভ্রমণকারীর বৈধ ভিসা ও টিকিট থাকতে হবে।
রোমিং সেবা ভ্রমণের এক সপ্তাহ আগে চালু করতে হবে বলে সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়েছে।
সার্কুলারে আরও বলা হয়েছে, মোবাইল অপারেটররা বিদেশের নেটওয়ার্ক অপারেটরদের অর্থ পরিশোধ করতে পারবে। তবে এ ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে নির্দিষ্ট কিছু নির্দেশনা পরিপালন করতে হবে।
এর আগে বাংলাদেশি ভ্রমণকারীরা আন্তর্জাতিক কার্ডের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রায় রোমিং সেবাগ্রহণ করতে পারতেন। টাকায় বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি প্রয়োজন হতো।
ব্যবসা সংশ্লিষ্টরা বাংলাদেশ ব্যাংকের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের মতে মোবাইল অপারেটর কর্তৃক মূল্য সংযোজিত সেবা প্রসারের ক্ষেত্রে আলোচ্য সিদ্ধান্ত সহায়ক হবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রেনের ছাদে ভ্রমণকালে বৈদ্যুতিক লাইনের নেটের আঘাতে নিহত ১, আহত ৫
টাঙ্গাইলে ট্রেনের ছাদে অবৈধভাবে ভ্রমণের সময় বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে একজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম রিপন আলী (৩৭)। তিনি রাজশাহীর পবা উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। আহতদের মধ্যে অজ্ঞাতপরিচয়ের এক ব্যক্তি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রেলওয়ে পুলিশের টাঙ্গাইল ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ জানান, ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী আন্তনগর সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর পর ছাদে রক্তাক্ত অবস্থায় ছয়জনকে পাওয়া যায়। আহত যাত্রীরা পুলিশকে জানান, তাঁরা ঢাকা থেকে ট্রেনের ছাদে উঠেছিলেন। টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর ১৫–২০ মিনিট আগে রেলপথের ওপর দিয়ে অতিক্রম করা একটি বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নিচের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তাঁরা আহত হন।
আহত ছয়জনকে পুলিশ উদ্ধার করে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে রিপন আলীর মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে আশরাফুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহত আমিরুল ইসলাম (২৫), আলিম (২৫) ও ফয়সাল (২৭) চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। অজ্ঞাতপরিচয়ের এক কিশোর (১৫–১৬) এখনো টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, তার হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় শুয়ে আছে। কর্তব্যরত নার্স জানান, ছেলেটি কথা বলতে পারছে না।
এদিকে নিহত রিপন আলীর রাজশাহীর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কালিয়ানপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির ভেতরে স্বজন ও প্রতিবেশীরা আহাজারি করছেন। বাইরে রিপনের দাফনের জন্য কবর খোঁড়া হচ্ছে, কেউ বাঁশ কাটছেন।
রিপনের বাবা ইসরাফিল হোসেন জানান, রিপন ঢাকার একটি ইলেকট্রনিকস কোম্পানিতে চাকরি করত। কয়েক মাস আগে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নতুন কাজ খুঁজছিল। গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল হাসপাতাল থেকে রিপনের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে তার ছোট ছেলের ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তখনই তাঁরা জানতে পারেন, রিপন ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।