চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে বাকিলা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে সৌন্দর্য্য ছড়াচ্ছে ফুলে ফুলে ভরা কৃষ্ণচূড়া। ফুলে ফুলে লাল হয়ে থাকা কৃষ্ণচূড়া গাছটি সহজেই দৃষ্টি কাড়ছে মানুষের। কেউ বলেন কৃষ্ণচূড়াটি যেন এ প্রান্তরে সৌন্দর্য্যের আগুন ছড়াচ্ছে।

অন্যদিকে প্রখর রোদে তীব্র গরমে অনেক ক্লান্ত পথিকের জন্যই কৃষ্ণচূড়া গাছটি হয়ে উঠছে পরম মমতার আশ্রয়স্থল। অনেকেই এর সুশীতল ছায়ায় জিরিয়ে ক্লান্তি দূর করছেন। 

শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে কৃষ্ণচূড়ার গাছের ছায়ায় বসেছিলেন মো.

ওমর ফারুক নামে একজন। জানতে চাইলে বললেন, “আমি এই বাকিলার সন্না গ্রামের আবুল হোসেন মাষ্টারের ছেলে। সকালে কাজে বেড়িয়ে রৌদে হাঁপিয়ে উঠেছি। তাই গরমে ক্লান্তি দূর করতেই হাত পা ছেড়ে গাছটির নীচে বসলাম। মনে হচ্ছে শরীর ও মনের ক্লান্তিটা দূর হচ্ছে। আমি প্রায়ই এখানে এসে গাছটির নীচে সময় কাটাই।”

এ বিষয়ে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের বাকিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য মো. হোসেন মোল্লা লিটন জানান, বিদ্যালয়টি ১৯৩০ সালে স্থাপিত হলেও একাডেমিক ভবন নির্মাণ হয় ২০২১-২২ অর্থবছরে। বিদ্যালয়টিকে সৌন্দর্য্যের ভিন্নমাত্রা এনে দিয়েছে প্রবেশ দ্বারের এই কৃষ্ণচূড়া। অবশ্য বিদ্যালয়ের নতুন ভবনটির সামনেও রয়েছে আরও একটি কৃষ্ণচূড়া গাছ। 

বাকিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আবুল হোসেন বলেন, “কৃষ্ণচূড়া গাছটির নিচের অংশ যাতে পরিষ্কার পরিছন্ন রাখা যায় সেটি নিয়ে আমি সবসময়ই কথা বলি। গাছটির সৌন্দর্য্যের কারণে পথিক কিংবা শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ সময়েই এখানে বিচরণ করতে দেখি। সঙ্গত কারণে গাছটির নিচে পরিষ্কার পরিছন্ন থাকা জরুরী।”

বাকিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, “কৃষ্ণচূড়া গাছটি পুরো বিদ্যালয়ের সৌন্দর্য্যটা বাড়িয়েছে। শিক্ষার্থীরা যখন এই মাঠে খেলতে আসে তখন গাছটির ছায়াতলে এসে ছবিও তোলে। এখানে মনোরম পরিবেশ সৃষ্টিতে কৃষ্ণচূড়া গাছটি দারুণ ভূমিকা রাখছে।”

ঢাকা/জয়/টিপু

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন দর য য

এছাড়াও পড়ুন:

ঘুমের ওষুধ খাইয়ে স্বামীকে হত্যা, ফাঁদ পেতে ধরা হলো প্রেমিককে

পাবনার চাটমোহর উপজেলার কাটেঙ্গা গ্রামে ক্যানসার আক্রান্ত স্বামীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে। 
দশদিন পর ঘটনা জানাজানি হলে  অভিযুক্ত স্ত্রী শারমিন খাতুন ও তার প্রেমিককে আটক করে পুলিশ। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে ঘটনাটি জানায়। 

এর আগে গত ৩০ নভেম্বর চাটমোহরের দক্ষিণপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত স্বামী শের আলী (৩৫) দক্ষিণপাড়া গ্রামের ভোলা প্রামানিকের ছেলে। শারমিন খাতুন (২৬) কাটেঙ্গা গ্রামের শাহ আলমের মেয়ে। এবং তার প্রেমিক অনিক (২২) একইগ্রামের মহাজন সরকারের ছেলে। 

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ নভেম্বর শের আলীর মৃত্যু হয়। তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। তার মৃত্যুর পর বিষয়টি স্বাভাবিক হিসেবে শুরুতে মেনে নিলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুকে ঘিরে পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দেয়।
জানা যায়, শের আলীর চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও ইউটিউবারদের মাধ্যমে চিকিৎসা সহায়তার অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে, সেই অর্থের একটি বড় অংশ শারমিন অনিককে দিয়েছেন। 

মৃত শের আলীর ফুপাতো ভাই এনামুল হোমেনের দাবি, শারমিন ও অনিকের মধ্যে ফেসবুক মেসেঞ্জারে হওয়া কথোপকথন ঘেঁটে টাকা লেনদেনের একাধিক তথ্য পাওয়া গেছে। সেখান থেকেই প্রথম সন্দেহের সূত্রপাত। 

এরপর ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে পরিবারের সদস্যরা কৌশল অবলম্বন করেন। শারমিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে অনিককে টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আসতে বলে মেসেজ পাঠানো হয়। অনিক এই ফাঁদে পা দেন।  

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে অনিকে টাকা নিতে এলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে অসংলগ্ন বক্তব্য ও পরস্পরবিরোধী তথ্য দিলে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। পরে অনিক ও শারমিন স্বীকার করেন, প্রায় চার মাস ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। 

শারমিন এ সময় জানান, গত ৩০ নভেম্বর একসঙ্গে দশটি ঘুমের ওষুধ শের আলীকে তিনি খাইয়েছিলেন। এতে শের আলীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে এবং কিছু সময়ের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। 

শের আলীর মা শিরীনা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘‘আমার অসুস্থ ছেলেকে ওর বউ ঘুমের ওষুধ খাইয়েছে। সে সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে এসে দেখি আমার ছেলে আর বেঁচে নেই। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’’

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘মৃত ব্যক্তির পরিবারে পক্ষ থেকে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি বা মামলা করেনি। যেহেতু ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে আটক করা হয়েছে, সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাদের পাবনা আদালতে সোপর্দ করেছে।’’ 

ঢাকা/শাহীন//

সম্পর্কিত নিবন্ধ