Samakal:
2025-04-30@23:50:33 GMT

হঠাৎ মুখ বেঁকে গেলে 

Published: 27th, April 2025 GMT

হঠাৎ মুখ বেঁকে গেলে 

অরপা (ছদ্মনাম), বয়স ২৫ বছর। মেডিকেলের মেধাবী ছাত্রী। একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখ ব্রাশ ও ধোয়ার জন্য বেসিনের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে অবাক, এ কী! একদিকে চোখ বন্ধ হচ্ছে না। হাঁ করতেই মুখ বেঁকে যাচ্ছে। মুখে পানি নিলে মুখ থেকে পড়ে যাচ্ছে। গাল ফোলাতে পারছেন না। কপাল বা ভ্রু কুঁচকাতে পারছেন না। কী হলো? নিশ্চয়ই ঘাবড়ে গেছেন।

ঘাবড়ানোর কিছু নেই। এ রকম সমস্যায় যদি কেউ পড়েন, তবে বুঝতে হবে আপনার মুখের নার্ভে এমন কোনো সমস্যা হয়েছে, যার ফলে আপনার মুখের মাংসপেশি তার স্বাভাবিক কাজকর্মের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। যাকে ডাক্তারি ভাষায় ফেসিয়াল বা বেল্স পালসি বা মুখ অবশ রোগ নামে খ্যাত।
হঠাৎ করে এ রোগে যে কেউ আক্রান্ত হতে পারেন। আক্রান্ত হওয়ার আগে অনেক সময় মাথাব্যথাসহ আক্রান্ত পাশের কানের গোড়ায় ব্যথা হতে পারে। এরপর হঠাৎ করে আক্রান্ত পাশের চোখ বন্ধ করতে, কথা বলতে, কপাল কুঁচকাতে বা ওপরে তুলতে, থুথু ফেলতে, পানি পান করতে, খাবার-দাবার চিবাতে অসুবিধাসহ মুখ একদিকে বেঁকে যেতে পারে।

কারণ

ভাইরাসের সংক্রমণ হলে, মধ্যকর্ণে কোনো ইনফেকশন বা সংক্রমণ হলে, ঠান্ডা বা আঘাতজনিত কারণে, মস্তিষ্কের স্ট্রোক, মাথায় আঘাত পেলে, ফেসিয়াল টিউমার হলে, কানের বা প্যারোটিড গ্রন্থির অস্ত্রোপচারে যদি ফেসিয়াল নার্ভ ইনজুরি হয়, ডায়াবেটিস রোগ থাকলে, শ্বাসযন্ত্রের রোগ থাকলে, ঠান্ডা ঘা বা যৌনাঙ্গে হারপিস হলে এমন হতে পারে।

চিকিৎসা

যেহেতু এটি স্নায়বিক সমস্যা সৃষ্ট মাংসপেশির অবশতা, তাই এর চিকিৎসার মুখ্য ভূমিকা হলো ফিজিওথেরাপি ও পুনর্বাসন চিকিৎসা। এ রোগে আক্রান্ত হলে আপনি প্রথমে একজন নিউরো বিশেষজ্ঞের পরামর্শমতো প্রয়োজন বোধে স্টেরয়েড, ভিটামিন এবং তার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নিতে হবে। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসায় সাধারণত ইলেকট্রিক নার্ভ ইস্টিমুলেশন প্রদাহ কমানোর জন্য আলট্রা সাউন্ড থেরাপিসহ পদ্ধতিগত চিকিৎসা থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ উপকারী। 

এ ছাড়া শক্ত খাবার আক্রান্ত গালে খেতে হবে এবং অতিরিক্ত ঠান্ডা খাওয়া বা লাগানো এড়িয়ে চলতে হবে। এসব রোগীর চিকিৎসা ক্ষেত্রে চার থেকে ছয় সপ্তাহ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নিতে হয়। মনে রাখবেন, ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা ফেসিয়াল প্যারালাইসিস রোগের একমাত্র এবং মূল চিকিৎসা।
লেখক : ফিজিওথেরাপি, ডিজঅ্যাবিলিটিজ ও রিহ্যাবিলিটেশন স্পেশালিস্ট এবং সহযোগী অধ্যাপক (আইআইএইচএস) ও কনসালট্যান্ট ডিপিআরসি, শ্যামলী।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

মাগুরায় শিশু ধর্ষণ-হত্যা মামলায় সাক্ষ্য ৩ চিকিৎসকের

মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় চতুর্থ দিনের মতো সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বুধবার জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

এ দিন শিশুকে চিকিৎসা প্রদানকারী তিন চিকিৎসক সাক্ষ্য দেন। তারা হলেন– মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের ডা. সোহাস হালদার, নাকিবা সুলতানা এবং ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের  ডা. ইসরাত জাহান। তারা সবাই শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছিল মর্মে সাক্ষ্য প্রদান করেন।  

এর আগে সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে মামলার ৪ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। বাদীপক্ষের আইনজীবী ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি মনিরুল ইসলাম মুকুল জানান, বিগত চার কার্যদিবস একটানা সাক্ষ্য গ্রহণ চলেছে। এ নিয়ে মোট ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। মামলায় মোট ৩৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হবে। আগামী রোববার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাদে অন্য সব সাক্ষী সাক্ষ্য দেবেন। বুধবার আসামিপক্ষের আইনজীবী স্বাধীনভাবে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। তিনি আদালতে আসামিরা নির্দোষ বলে যুক্তি উপস্থাপন করেন। আসামিরাও নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন। 

বেড়াতে এসে ৬ মার্চ রাতে মাগুরা সদরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুর হিটু শেখের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয় ৮ বছরের শিশুটি। এই ধর্ষণের ঘটনা দেশজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে ঢাকা সিএমএইচে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল। ১৩ মার্চ শিশুটি সেখানে মারা যায়। এ ঘটনায় শিশুটির মা আয়েশা আক্তার বড় মেয়ের শ্বশুর হিটু শেখসহ চারজনকে আসামি করে মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন। রিমান্ডে হিটু শেখ ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ