অরপা (ছদ্মনাম), বয়স ২৫ বছর। মেডিকেলের মেধাবী ছাত্রী। একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখ ব্রাশ ও ধোয়ার জন্য বেসিনের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে অবাক, এ কী! একদিকে চোখ বন্ধ হচ্ছে না। হাঁ করতেই মুখ বেঁকে যাচ্ছে। মুখে পানি নিলে মুখ থেকে পড়ে যাচ্ছে। গাল ফোলাতে পারছেন না। কপাল বা ভ্রু কুঁচকাতে পারছেন না। কী হলো? নিশ্চয়ই ঘাবড়ে গেছেন।
ঘাবড়ানোর কিছু নেই। এ রকম সমস্যায় যদি কেউ পড়েন, তবে বুঝতে হবে আপনার মুখের নার্ভে এমন কোনো সমস্যা হয়েছে, যার ফলে আপনার মুখের মাংসপেশি তার স্বাভাবিক কাজকর্মের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। যাকে ডাক্তারি ভাষায় ফেসিয়াল বা বেল্স পালসি বা মুখ অবশ রোগ নামে খ্যাত।
হঠাৎ করে এ রোগে যে কেউ আক্রান্ত হতে পারেন। আক্রান্ত হওয়ার আগে অনেক সময় মাথাব্যথাসহ আক্রান্ত পাশের কানের গোড়ায় ব্যথা হতে পারে। এরপর হঠাৎ করে আক্রান্ত পাশের চোখ বন্ধ করতে, কথা বলতে, কপাল কুঁচকাতে বা ওপরে তুলতে, থুথু ফেলতে, পানি পান করতে, খাবার-দাবার চিবাতে অসুবিধাসহ মুখ একদিকে বেঁকে যেতে পারে।
কারণ
ভাইরাসের সংক্রমণ হলে, মধ্যকর্ণে কোনো ইনফেকশন বা সংক্রমণ হলে, ঠান্ডা বা আঘাতজনিত কারণে, মস্তিষ্কের স্ট্রোক, মাথায় আঘাত পেলে, ফেসিয়াল টিউমার হলে, কানের বা প্যারোটিড গ্রন্থির অস্ত্রোপচারে যদি ফেসিয়াল নার্ভ ইনজুরি হয়, ডায়াবেটিস রোগ থাকলে, শ্বাসযন্ত্রের রোগ থাকলে, ঠান্ডা ঘা বা যৌনাঙ্গে হারপিস হলে এমন হতে পারে।
চিকিৎসা
যেহেতু এটি স্নায়বিক সমস্যা সৃষ্ট মাংসপেশির অবশতা, তাই এর চিকিৎসার মুখ্য ভূমিকা হলো ফিজিওথেরাপি ও পুনর্বাসন চিকিৎসা। এ রোগে আক্রান্ত হলে আপনি প্রথমে একজন নিউরো বিশেষজ্ঞের পরামর্শমতো প্রয়োজন বোধে স্টেরয়েড, ভিটামিন এবং তার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নিতে হবে। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসায় সাধারণত ইলেকট্রিক নার্ভ ইস্টিমুলেশন প্রদাহ কমানোর জন্য আলট্রা সাউন্ড থেরাপিসহ পদ্ধতিগত চিকিৎসা থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ উপকারী।
এ ছাড়া শক্ত খাবার আক্রান্ত গালে খেতে হবে এবং অতিরিক্ত ঠান্ডা খাওয়া বা লাগানো এড়িয়ে চলতে হবে। এসব রোগীর চিকিৎসা ক্ষেত্রে চার থেকে ছয় সপ্তাহ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নিতে হয়। মনে রাখবেন, ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা ফেসিয়াল প্যারালাইসিস রোগের একমাত্র এবং মূল চিকিৎসা।
লেখক : ফিজিওথেরাপি, ডিজঅ্যাবিলিটিজ ও রিহ্যাবিলিটেশন স্পেশালিস্ট এবং সহযোগী অধ্যাপক (আইআইএইচএস) ও কনসালট্যান্ট ডিপিআরসি, শ্যামলী।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নীল সমুদ্রে দক্ষিণ আফ্রিকার নীল বেদনা, ভারত বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন
অনুমিত চিত্রনাট্যই যেন অনুসরণ করল মুম্বাইয়ের ফাইনাল ম্যাচ। ভারতের জার্সি গায়ে দর্শকে ঠাসা গ্যালারি রূপ নিল নীল সমুদ্রে। ২২ গজে আরও একবার ভারতের আধিপত্য, শাসন। যেন শিরোপার পায়চারি অনেক আগের থেকেই।
ব্যাটিংয়ে পর্বত ছুঁই-ছুঁই রান। এরপর স্পিনে ফুল ফোটালেন স্পিনাররা। দক্ষিণ আফ্রিকা লড়াই করল সাধ্যের সবটুকু দিয়ে। ব্যাটে-বলে সহজে হাল ছাড়ল না তারাও। হৃদয় জিতলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পাত্তাই পেল না। ভারতের শক্তি-সামর্থ্যের গভীরতার কাছে হার মানতেই হলো প্রোটিয়া নারীদের।
আরো পড়ুন:
৪১১ রানের টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৯ রানে হারল জিম্বাবুয়ে
কেন বিপিএল থেকে বাদ পড়ল চিটাগং কিংস
মুম্বাইয়ের নাভি স্টেডিয়ামের নীল সমুদ্রে সব আতশবাজি আজ রাতে ফুটল ভারতের বিশ্বকাপ উদ্যাপনে। প্রথমবার ভারতের নারী ক্রিকেট দল ওয়ানডেতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। ৫২ রানের বিশাল জয় বুঝিয়ে দেয় হারমানপ্রীত কৌর, জেমিমা রদ্রিগেজ, দীপ্তি শর্মা কিংবা শেফালি বার্মা, স্মৃতি মান্ধানা, রিচা ঘোষরা ২২ গজকে কতটা আপন করে নিয়েছেন। শিরোপা জয়ের মঞ্চে ছাড় দেননি একটুও। ২০০৫ ও ২০১৭ বিশ্বকাপে যে ভুলগুলো হয়েছিল...সেগুলো আজ ফুল হয়ে ঝরল।
বৃষ্টি বাঁধায় বিঘ্ন ম্যাচে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেটে ২৯৮ রানের স্কোর পায় ভারত। ৪৫.৩ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে ২৪৬ রান করতে পারে প্রোটিয়া নারীরা। নাডিন ডি ক্লার্ক শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে যখন আউট হলেন, স্টেডিয়ামের প্রায় ষাট হাজার ভারতীয় সমর্থকদের মুখে একটাই স্লোগান, চাক দে ইন্ডিয়া।
ওই জনসমুদ্রের স্লোগান, ‘ভারত মাতা কি জয়’, ‘বন্দে মাতরম’।
বিস্তারিত আসছে …
ঢাকা/ইয়াসিন