Samakal:
2025-11-02@13:17:20 GMT

আঁধার পেরিয়ে বৈভব সূর্যের উদয়

Published: 29th, April 2025 GMT

আঁধার পেরিয়ে বৈভব সূর্যের উদয়

স্বপ্নের পেছনে ছুটতে গিয়ে শৈশবে সংসার বুঝে গেছে বৈভব সূর্যবংশী। জমি তো মায়ের মতো। সারা বছর অন্ন জোগায়। বোধ-বুদ্ধি হতেই সেই জমি বিক্রির সাক্ষী সে। বাবার কাজ ছেড়ে দেওয়া, সংসারে অভাব নেমে আসা দেখেছে। ১৪ বছর বয়সে মাত্র ৩৫ বল খেলে আইপিএলে রেকর্ড গড়ে সেঞ্চুরির সময় বৈভবের চোখে হয়তো ভাসছিল, বাবার জায়গায় ভাইয়ের পরিবারের হাল ধরার দৃশ্য।

ম্যাচ জয়ের পর স্মৃতির সেই ঝাপি খুলে দিয়েছে বৈভব, ‘আমাদের সংসার খুব কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে গেছে। বাবা কাজ ছেড়ে দিলেন আমার অনুশীলনের জন্য। মা রাতে তিন ঘণ্টা ঘুমাতেন। রাতে উঠে আমাদের অনুশীলনে যাওয়ার জন্য খাবার প্রস্তুত করতে হতো তাকে। বাবার কাজ ভাই করতে শুরু করলেন। আমি আজ যা কিছু তাদের জন্য।’

বৈভবের প্রতিভা, পরিশ্রমের গল্প সবচেয়ে কম বয়সে আইপিএলের নিলামে জায়গা পাওয়ার ও ১ কোটি ১০ লাখ রুপিতে দল পাওয়ার পরই চাউর হয়েছিল। সবচেয়ে কম বয়সে আইপিএলে অভিষেক হয় তার। এরপর সবচেয়ে কম বয়সে আইপিএল ইতিহাসের দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক বনে গেছে তরুণ এই বাঁ-হাতি ব্যাটার।

এই তরুণকে প্রস্তুত করেছেন বিহারের এক একাডেমির কোচ মানিশ ওঝা। মাজাঘষা করেছেন ভারতের ন্যাশনাল ক্রিকেট একাডেমি ও অনূধ্র্ব-১৯ দলের কোচ ভিভিএস লক্ষ্মণ। আর তাকে আত্মবিশ্বাস দিয়ে, সময় ও সুযোগ দিয়ে তারকা বানিয়ে দিয়েছেন রাহুল দ্রাবিড়। ছোট্ট বৈভবও যে শিখে গেছেন ক্যারিয়ার, ত্যাগ প্রত্যয়গুলো।

যার ব্যাখ্যা পাওয়া যায় মনোজ ওঝার কথায়, ‘খাসি ও মুরগির মাংস দেখলে সে পাগল হয়ে যায়। যতই দেন না কেন, সাবাড় করে দেবে। সে খেতও খুব মজা করে। যে কারণে ওর চেহারায় নাদুসনুদুস ভাবটা এখনো রয়ে গেছে। কিন্তু এখন সে খাসির মাংস খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে, ডাক্তারের নির্দেশ। পিজ্জা আর খায় না। ওইটুকু ছেলের জন্য এগুলো কঠিন। কিন্তু কারণটা সে বুঝতে শিখেছে।’

বৈভবকে আইপিএল নিলামের ঠিক আগে ট্রায়ালে ডেকেছিল রাজস্থান রয়েলস। রাহুল দ্রাবিড়ের কাছে তাকে পাঠিয়েছিলেন লক্ষ্মণ। তাকে অনূর্ধ্ব-১৯ দলেও ডেকেছিলেন লক্ষ্ণণ। সেখানে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩৬ করে রান আউট হয়ে ড্রেসিংরুমে কেঁদেছিল বৈভব। লক্ষ্মণ তাকে বলেছিলেন, ‘আমরা শুধু রান দেখি না, দক্ষতা-প্রতিভাও দেখি।’

বৈভব আইপিএলে মাত্র ৩ ইনিংস খেলেছেন। অভিষেকেই প্রথম বলে ছক্কাসহ ঝড়ো ইনিংসে আগমণী বার্তা দেয়। এমন একজনকে এতো দেরিতে কেন খেলালেন ভারতের হয়ে টি-২০ বিশ্বকাপ জয়ী কোচ দ্রাবিড়। ব্যাখ্যায় রাজস্থান কোচ বলেন, ‘সে অনুশীলনে খুব ভালো করছিল। কিন্তু আমরা তাকে আইপিএলের পরিবেশ, চাপ, ম্যাচ পরিস্থিতির সঙ্গে পরিচিত করতে চাইছিলাম। সরাসরি তাকে আইপিএলের মতো দর্শকভরা মঞ্চে নামিয়ে দিলে হিতে বিপরীত হতে পারত। আমরা চাইনি সে ভয় পাক।’ বৈভব অবশ্য সেঞ্চুরি করেই বলেছে, ‘আমি ভয় পাই না।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বেরোবি

‎বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে শিক্ষার্থীদের। গত ২৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে ‎বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের গেজেট প্রকাশ হয়ছে গঠনতন্ত্র।

এরই মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর হতে যাচ্ছে কাঙিক্ষত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ তথা ব্যাকসু নির্বাচন। তবে এর জন্য আমরণ অনশন থেকে শুরু করে সব ধরনের কর্মসুচিই পালন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

আরো পড়ুন:

‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’

‎বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের মডেল প্রদর্শন

‎জুলাই অভ্যুত্থান পর গণরুম ও গেস্ট রুমের যে সাংস্কৃতি ছিল, তা এখন বন্ধ হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কমকাণ্ডে সামিল হওয়াও বাধ্যতামুলক নয়।

‎তাই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ছাত্র সংসদ। যাতে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।

‎কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বেরোবির বিধিমালা অনুযায়ী, ১৩টি পদে সরাসরি নির্বাচন ও হল সংসদে নয়টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সব ধরনের কথা তুলে ধরতে পারবেন।

‎পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায় বলেন, “সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও লেজুরবিত্তিক রাজনীতি ব্যতীত একটি নির্বাচন হোক। যোগ্য, আদর্শ, উত্তম চরিত্র ও মনের প্রার্থী বিজয়ী হোক। নির্বাচিত হয়ে তারা হয়ে উঠুক বেরোবির একেকজন যোগ্য প্রতিনিধি। তারা ন্যায়ের পক্ষে থাকুক । তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাক বেরোবি।”

‎গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জাওয়াদ সাজিদ বলেন, “ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের দাবি, অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার প্রধান মঞ্চ। এটি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কণ্ঠ পৌঁছে যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে। কিন্তু এজন্য সংসদকে দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। প্রকৃত অর্থে ছাত্র সংসদ তখনই সফল, যখন তা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে তাদের সমস্যার সমাধান ও কল্যাণে কাজ করে।”

‎অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন ছাত্র সংসদ চাই, ‎যেখানে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে এবং সব শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার হয়ে কাজ করবে। সবমিলিয়ে সবার বিশ্বস্ত জায়গা হবে এই ছাত্র সংসদ।”

ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ