খালেদা জিয়া সোমবার দেশে ফিরতে পারেন, সঙ্গে ফিরবেন দুই পুত্রবধূ
Published: 30th, April 2025 GMT
যুক্তরাজ্যে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আগামী সোমবার দেশে ফিরতে পারেন। তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় আনার চেষ্টা চলছে। এজন্য সহযোগিতা চেয়ে খালেদা জিয়ার পরিবারের তরফ থেকে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেটা সম্ভব না হলে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী উড়োজাহাজের বিজনেস ক্লাসে করে দেশে ফিরতে পারেন।
খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার বুধবার সমকালকে বলেন, রোববার ও সোমবার ধরে পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি চলছে। এখনও এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঠিক হয়নি। আমরা অ্যাম্বুলেন্সের অপেক্ষায় আছি।
৭ জানুয়ারি কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেসে যুক্তরাজ্যে যান খালেদা জিয়া। সেখানে তাঁকে লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয়। টানা ১৭দিন চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতালে থেকে খালেদা জিয়া সরাসরি ছেলে তারেক রহমানের বাসায় উঠেন। এই হাসপাতালের লিভার বিশেষজ্ঞ জন প্যাট্রিক কেনেডির নেতৃত্বাধীন মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তাঁর চিকিৎসা চলছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের মেডিকেল বোর্ডের এক সদস্য বলেন, লন্ডন ক্লিনিক থেকে খালেদা জিয়াকে পূর্ণাঙ্গ ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। বলা হয়েছে, তিনি দেশে যেতে পারবেন। তবে চিকিৎসার মধ্যেই থাকতে হবে। তিনি জানান, খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার দুই পুত্রবধূ ডা.
খালেদা জিয়ার প্রয়াত ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর সহধর্মিণী শর্মিলা দেশে আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকলেও দীর্ঘ দিন পর দেশে আসছেন তারেক রহমানের সহধর্মিণী জুবাইদা। তারেক রহমানের সঙ্গে তিনিও এক এগারো সরকারের সময় লন্ডন চলে যান।
জানা গেছে, রোজার ঈদের পর বিএনপি চেয়ারপারসনের পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু হয়, যা চলে কয়েক সপ্তাহ। ধীরে ধীরে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়। তিনি আগের চেয়ে এখন বেশ ভালো আছেন।
৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন থেকে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। তবে লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকরা ঝুঁকির কথা চিন্তা করে তাঁর লিভার প্রতিস্থাপন করেননি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
প্যারোলে মুক্তি পেয়ে স্ত্রীর জানাযায় মতি, কান্নাজড়িত কণ্ঠে চাইলেন ক্ষমা
কারাগারে থাকা নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহ্বায়ক মতিউর রহমান মতি ৩ ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে তার সহধর্মিণী রোকেয়া রহমানের জানাজায় অংশ নিয়েছেন।
শনিবার (১ নভেম্বর) বেলা সোয়া ২টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের আইলপাড়া এলাকার বালুর মাঠে জানায়া অনুষ্ঠিত হয়। কড়া পুলিশি পাহারায় মতিউর রহমান মতি জানাযার মাঠে উপস্থিত হলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
স্ত্রী হারানো মতিকে দেখে তার আত্মীয়-স্বজনসহ উপস্থিত শত শত মানুষ কান্নায় ভেঙে পড়েন। অঝোরে কাঁদতে থাকা মতিউর রহমান মতিও আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
এসময় তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানাজায় উপস্থিত মুসল্লিদের উদ্দেশে বলেন, আমি দীর্ঘ ১০ মাস যাবত কারাগারে। আমার স্ত্রীর মৃত্যুর সময় আমি তার পাশে থাকতে পারিনি।
আমার দুর্ভাগ্য যে, এর আগে আমার বড় ভাই যখন মৃত্যুবরণ করেন, তখনও আমি কারাগারে ছিলাম। আজকেও আমার অনুপস্থিতিতে আপনারা আমার ভাইয়ের মতো সবাই আমার স্ত্রীর জানাযার জন্য সকল কিছু করেছেন।
তিনি আরও বলেন, তার সঙ্গে আমি ৩২ বছরের সংসার জীবন কাটিয়েছি। সে সবসময় আমাকে আগলে রেখেছেন। আমার স্ত্রী যদি চলার পথে আপনাদের সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ কিংবা ভুল করে থাকে, আমি তার হয়ে আপনাদের কাছে ক্ষমা চাই।
আপনারা সবাই তাকে ক্ষমা করে দেবেন এবং তার জন্য দোয়া করবেন। আমি তার জানাজায় অংশ নিতে পেরেছি, এটাই আমার জন্য অনেক।
পারিবারিক সূত্র জানায়, মতির সহধর্মিণী রোকেয়া রহমান দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছিলেন। গত শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকালে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।
সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোকেয়া রহমানকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। বিকালে হাসপাতাল থেকে তার মরদেহ এলাকায় নিয়ে আসা হলে শত শত নারী-পুরুষ বাড়িতে ছুটে আসে এক নজর তার মরদেহ এলাকার জন্য।
রোকেয়া রহমান এলাকারবাসীর কাছে সামাজিক ও মানবিক মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এলাকার অসহায় ও গরীব মানুষ বিয়ে, চিকিৎসা সহ কোনো সাহায্যের জন্য তার কাছে গিয়ে খালি হাতে ফেরেনি। তার মধ্যে কোন অহংকার ছিল না।
সাধারণভাবে সবার সাথে মিশতেন। জানাযার জন্য তার মরদেহ বাড়ি থেকে বের করার সময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন শত শত নারী। অনেকে লাশবাহী গাড়ির পিছনে পিছনে ছুটে আসেন। এসময় এলাকার বাতাস ভারী হয়ে উঠে।
এদিকে একাধিক মামলার আসামি হিসেবে মতিউর রহমান মতি কারাগারে থাকায়, স্ত্রীর জানাজায় অংশগ্রহণের জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে উকিলের মাধ্যমে আবেদন করা হয়। সকালে কারাগার কর্তৃপক্ষের কাছে ৩ ঘন্টার জন্য প্যারোলে মুক্তির কাগজ পত্র পৌছালে দুপুর ১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান বলেন, মতিউর রহমান মতিকে কারা কর্তৃপক্ষ দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মোট ৩ ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি দিয়েছেন। জানাজা ও দাফন কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে তাকে নিরাপত্তায় আনা হয় এবং সময় শেষে তাকে পুনরায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।