’৬৪ বছর সাংবাদিকতার আদর্শ ধরে আছে পাবনা প্রেস ক্লাব’
Published: 1st, May 2025 GMT
‘‘৬৪ বছর ধরে সাংবাদিকতার ঐক্য, আদর্শ, ঐতিহ্য ধারণ করেছে উত্তরের অন্যতম প্রাচীণতম সংগঠন পাবনা প্রেস ক্লাব। ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জড়িয়ে রয়েছে এই প্রেস ক্লাবের নাম। পাবনা প্রেস ক্লাবের ৯ সাংবাদিক সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ৩ জন সদস্য একুশে পদকপ্রাপ্ত। সারা দেশে সাংবাদিকদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য ও সাংবাদিকদের একাধিক প্রতিষ্ঠান থাকলেও পাবনা প্রেস ক্লাব সে ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। এই প্রতিষ্ঠান এখনো দেশের মধ্যে অখণ্ড এবং ঐক্যের অনন্য নজির হিসেবে দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছে। আগামীতেও ঐক্য আদর্শের ধারা অটুট থাকবে।’’
বৃহস্পতিবার (১ মে) পাবনা প্রেস ক্লাবের ৬৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ৬৫ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে আয়োজিত শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন সুধীজন ও সাংবাদিকরা। এ দিন উৎসবে আনন্দে নেচে-গেয়ে পাবনা প্রেস ক্লাবের ৬৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১ মে) সকাল ১১টায় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। সাংবাদিকতার প্রতীক হিসেবে কলম, টেলিভিশন, রেডিও, ক্যামেরা, টেলিভিশনের বুম বা মাইক্রোফোন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর লোগোসহ নানা প্ল্যাকার্ড নিয়ে বাদ্য বাজনার তালে তালে নেচে গেয়ে শোভাযাত্রা শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এর আগে বুধবার (৩০ এপ্রিল) প্রেস ক্লাব ভবন আলোকসজ্জাকরণসহ নানা সাজে সাজানো হয়।
আরো পড়ুন:
সিরাজগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান, সম্পাদক শরীফুল
পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর খান আর নেই
শোভাযাত্রা শেষে প্রেস ক্লাবের ভিআইপি মিলনায়তনে চলে শুভেচ্ছা বিনিময় পর্ব। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের পর প্রেস ক্লাবের প্রয়াত সদস্যদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। তারপর প্রেস ক্লাবের নির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। পরে পাবনা প্রেস ক্লাব সভাপতি আখতারুজ্জামান আখতারের সভাপতিত্বে ও সাহিত্য সাংস্কৃতিক সম্পাদক ইয়াদ আলী মৃধা পাভেলের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন প্রেস ক্লাব সম্পাদক জহুরুল ইসলাম।
অন্যান্যের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন, পাবনা জেলা প্রশাসক মফিজুল ইসলাম, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড.
শুভেচ্ছা পর্ব শেষে পাবনা প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এ যাবত পর্যন্ত দায়িত্ব পালনকারী সভাপতি ও সম্পাদকদের সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়। যারা প্রয়াত হয়েছেন তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেন। পরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটেন অতিথিরা। শেষে উপস্থিত সবাইকে মিষ্টি মুখ করানো হয়। দুইদিনব্যাপী আয়োজনের শেষ দিন শুক্রবার (২ মে) সন্ধ্যায় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়েছে।
১৯৬১ সালের ১ মে পাবনা শহরে পাবনা প্রেস ক্লাবের গোড়াপত্তন ঘটে। প্রেস ক্লাব প্রতিষ্ঠার বছরেই ৮ ও ৯ মে পাবনায় অনুষ্ঠিত হয় পূর্ব পাকিস্তান মফস্বল সাংবাদিক সম্মেলন। যে সভা থেকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায় পূর্ব পাকিস্তান মফস্বল সাংবাদিক সমিতি। যা বর্তমানে বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি হিসেবে পরিচিত।
পাবনা প্রেস ক্লাব প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়ে সেদিন সংবাদপত্রে মফস্বলে কর্মরত প্রতিনিধিদের পেশার স্বীকৃতি ঘটেছিল। এখন ঢাকার বাইরে অনেকে এটাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়ে স্বচ্ছল জীবন যাপন করছেন। তাই অনেক প্রবীণ সাংবাদিক পাবনা প্রেস ক্লাবকে মফস্বল সাংবাদিকতার বাতিঘর হিসেবে চিহিৃত করেছেন। পাবনা প্রেস ক্লাবের অতীত ঐতিহ্য ও বিশাল ইতিহাস থাকলেও আজও পাবনা প্রেস ক্লাবের নিজস্ব ভবন হয়নি। পরিত্যক্ত সম্পত্তির উপর গড়ে ওঠা এই ক্লাবটির শরীর শীর্ণ হলেও মর্যাদা ও আভিজত্যে অনন্য।
ঢাকা/শাহীন/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব দ কত র র রহম ন সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
সমবায়ভিত্তিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল দেশ গড়া সম্ভব
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “সমবায়ভিত্তিক অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে একটি আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।”
তিনি বলেন, “বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সমবায় খাতকে আধুনিক ও গতিশীল করতে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আমি বিশ্বাস করি, কৃষি, মৎস্য, পশুপালন, সঞ্চয় ও ঋণদান এবং কুটিরশিল্প প্রভৃতি ক্ষেত্রে সমবায়ভিত্তিক অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে একটি আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।”
আরো পড়ুন:
মানবাধিকার কমিশনকে শক্তিশালী ও কার্যকর করতে নতুন অধ্যাদেশ অনুমোদন
নির্বাচন বানচালের যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা হবে: প্রধান উপদেষ্টা
শনিবার (১ নভেম্বর) ‘৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “সাম্য ও সমতায়, দেশ গড়বে সমবায়’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে প্রতি বছরের মতো এবারো ১ নভেম্বর, ২০২৫ যথাযোগ্য মর্যাদায় দেশব্যাপী ‘৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস’ উদ্যাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষে আমি সকল সমবায়ী ও দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।”
তিনি বলেন, “দেশ ও জনগণের উন্নয়নে গৃহীত যেকোনো কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়নে সামাজিক সম্পৃক্ততা নিশ্চিত অপরিহার্য। সমবায়ের অমিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে এ কাজ আমরা অনায়াসে করতে পারি। সমবায় সমিতিগুলো শুধু আর্থিক প্রতিষ্ঠানই নয় বরং সমাজের নানাবিধ সমস্যা দূর করতে বহুমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “দেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, দক্ষ জনশক্তি তৈরি ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে সমবায় আন্দোলনের বিকল্প নেই। অন্তর্বর্তী সরকার একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়ভিত্তিক ও টেকসই সমাজ প্রতিষ্ঠার পথে এগিয়ে যেতে চায়। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সমবায়ের ভূমিকা অপরিসীম।”
তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আসুন, সমবায়ের চেতনাকে ধারণ করে সাম্য ও সমতায় আমরা সকলে মিলে গড়ে তুলি নতুন বাংলাদেশ।”
প্রধান উপদেষ্টা ‘৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস, ২০২৫’ উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন। খবর বাসসের।
ঢাকা/সাইফ