লিওনেল মেসিকে কেন্দ্র করে মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) বেশি বয়সীদের মিলনমেলা বসিয়েছে ইন্টার মায়ামি। আর্জেন্টাইন তারকার সঙ্গে দলটি নিয়ে এসেছে বার্সেলোনার সাবেক ফুটবলার লুইস সুয়ারেজ, জর্দি আলবা ও সের্হিও বুসকেতসকে। এঁদের সবার বয়সই ৩৫ পেরিয়ে গেছে।

ইউরোপ মাতানোর পর যাঁরা অবসর–পরবর্তী সময় কাটানোর জন্যই যেন যুক্তরাষ্ট্রের লিগে খেলছেন। ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে থাকা খেলোয়াড় নিয়ে দল সাজালে কেমন হয়, সেটিই দেখতে পাচ্ছেন এমএলএসের দর্শকেরা।

আজ বাংলাদেশ সময় সকালে কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে মেসির মায়ামি ৩-১ গোলে হেরেছে কানাডিয়ান ক্লাব ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপসের কাছে। তাতে দুই লেগ মিলিয়ে ৫-১ গোলে হেরে মহাদেশীয় এই প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় নিতে হয়েছে মায়ামিকে। এমন বাজে অবস্থার জন্য মেসিদেরই দুষছেন কেউ কেউ।

‘মেসিদের যে মেয়াদ শেষ’—সেটা আকার-ইঙ্গিতে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সাবেক ডিফেন্ডার ওয়ারেন বার্টন, ‘ভ্যাঙ্কুভার দেখিয়ে দিল মায়ামির দুর্বলতা কোথায়। তারা তো দৌড়াতেই পারে না, ঠিকমতো রক্ষণও সামলাতে পারে না।’

আগের মতো আর ফর্মও নেই মেসিদের। এ মৌসুমে মেজর সকার লিগে এই আর্জেন্টাইনের গোল মাত্র তিনটি। আর সুয়ারেজের একটি। ভ্যাঙ্কুভারের সঙ্গে তো দৌড়িয়ে পেরে উঠতে পারেননি মেসি–সুয়ারেজরা। দুই দলের মধ্যে বড় তফাতটা বয়সের। মায়ামির নিয়মিত একাদশে তরুণের চেয়ে বুড়োদের দাপটই বেশি। যেখানে ভ্যাঙ্কুভার তরুণের গুরুত্ব দিয়েই দল সাজায়। সর্বশেষ দুই দেখায় দুই দলের গতিতেও তাই বড় হেরফের দেখা যায়।

ভ্যাঙ্কুভারের কোচ জ্যাসপার সোরেনসেন ম্যাচের পর মায়ামিকে খোঁচা মেরেছেন এভাবে, ‘আমার মনে হয় এটা বলা ঠিক হবে যে আমাদের একটি তরুণ দল আছে এবং এমন একটি দল, যারা দৌড়াতে এবং দাপটের সঙ্গে খেলতেও পারে।’

সামনে মায়ামির জন্য আরও কঠিন সময় অপেক্ষা করছে। জুনে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে খেলতে হবে মেসিদের। সেখানে মিসরের আল আহলি, পর্তুগালের পোর্তো, ব্রাজিলের পালমেইরাসের মতো ক্লাবের মুখোমুখি হতে হবে। যে মায়ামি ভ্যাঙ্কুভারের বিপক্ষে দুই ম্যাচে ৫ গোল হজম করে তারা ক্লাব বিশ্বকাপে কেমন করবে, সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।

মেসিরা মায়ামিতে আসার পর থেকেই তাঁদের নিয়ে নানা আলোচনা। এমএলএসকে অনেকেই বুড়ো খেলোয়াড়দের সময় কাটানোর লিগ হিসেবে গণ্য করেন। সর্বশেষ ক্লাবটির কোচের দায়িত্ব নেন মেসির সাবেক সতীর্থ হাভিয়ের মাচেরানো। তাঁকে নিয়েও অনেক কথা হয়। কেউ এমএলএসকে মেয়াদ উত্তীর্ণ ফুটবলারদের লিগ বলেও রসিকতা করেন। এখন মেসি–সুয়ারেজদের কারণে লিগের জৌলুস বাড়লেও তাঁদের মহাদেশীয় প্রতিযোগিতার ব্যর্থতায় ‘বয়স্ক–পুনর্বাসন কেন্দ্র’ কথাটা এমএলএসের পাশে আরও জেঁকে বসতে পারে। যা লিগের ভবিষ্যৎ বিবেচনায় ক্ষতিকর দিক।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মেসিকে শাস্তির নামে ‘বিশ্রাম’ দিয়েছে এমএলএস

এমএলএস অল-স্টার গেমে না খেলার কারণে শাস্তি হিসেবে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছিলেন ইন্টার মায়ামি তারকা লিওনেল মেসি। সেই নিষেধাজ্ঞার জেরে গত রোববার সিনসিনাটির বিপক্ষে ম্যাচে দর্শকের ভূমিকায় ছিলেন এই আর্জেন্টাইন মহাতারকা।

মেসিবিহীন সেই ম্যাচে সিনসিনাটির বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করেছিল মায়ামি।
তবে সেদিন খেলতে না পারায় মেসি নাকি বেশ ক্ষুব্ধ ছিলেন।

এমনকি সাংবাদিকদের সামনেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মায়ামি কোচ হাভিয়ার মাচেরানো। তবে সেই মাচেরানোই এবার অন্য কথা বলছেন। এই শাস্তি মেসির জন্য শাপেবর হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মাচেরানো।

আরও পড়ুননিষেধাজ্ঞায় খেলতে পারেননি মেসি, খেপেছেন কোচ২৭ জুলাই ২০২৫

লিগস কাপে আগামীকাল মেক্সিকান ক্লাব অ্যাটলাসের বিপক্ষে ম্যাচ সামনে রেখে মাচেরানো বলেছেন, ‘আশা করি, লিও (মেসি) দারুণভাবে উজ্জ্বীবিত থাকবে। সত্যি বলতে, আমরা এই নিষেধাজ্ঞা আশা করিনি। তবে প্রতিটি খারাপ জিনিসেরও ভালো দিক থাকে। সত্যি কথা বলতে, টানা কয়েকটি ম্যাচ খেলার পর তাকে বাধ্যতামূলক বিশ্রাম দিতে হতো। (শাস্তিটা) যা তার জন্য ভালো হয়েছে। এখন সে নতুন করে লিগস কাপ ও এমএলএসের জন্য প্রস্তুত হতে পারবে।’

সেদিন এভাবেই একসঙ্গে বসে খেলা দেখেন মেসি ও দি পল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মেসিকে শাস্তির নামে ‘বিশ্রাম’ দিয়েছে এমএলএস