‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে ভারত যেভাবে পাকিস্তানি ভূখণ্ডে হামলা শুরু করেছে, তার নিন্দা জানিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন। তারা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সামরিক উত্তেজনা নিয়ে গভীর উদ্বেগও প্রকাশ করেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে গণসংহতি আন্দোলন বলেছে, এই দুই দেশের মধ্যকার চলমান সামরিক বিরোধ নিরসন করে তাদের আলোচনায় অংশ নেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সংহতির ডাক দিন।

আজ বৃহস্পতিবার গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান এক যৌথ বিবৃতিতে এসব বিষয় উল্লেখ করেছেন।

বিবৃতিতে জোনায়েদ সাকি ও আবুল হাসান বলেন, ইতিহাস ও ভবিষ্যৎ বিবেচনায় বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত ও পাকিস্তানের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। এ কারণেই বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে তাঁরা উদ্বিগ্ন। প্রতিবেশী দেশগুলোকে তাঁরা আরেকটি যুদ্ধে জড়াতে দেখতে চান না। তাঁরা ভারত ও পাকিস্তানের সেই মানুষদের পাশে আছেন, যাঁরা শান্তি, মর্যাদা ও স্থিতিশীলতা চান, সহিংসতা নয়।

গণসংহতি আন্দোলন বলেছে, একটি যুদ্ধ যেন জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে দুই দেশের সাধারণ মানুষের ওপর। কোটি কোটি সাধারণ মানুষের এই যুদ্ধ থেকে পাওয়ার কিছুই নেই। আছে শুধু ভয়, ধ্বংস আর অপূরণীয় ক্ষতির আশঙ্কা।

ভারতের এই হামলা একটা বিপজ্জনক সংঘাতের শুরু করতে পারে, যা ভারত আর পাকিস্তান ছাড়াও এই গোটা ভৌগোলিক অঞ্চলের সামগ্রিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি অশনিসংকেত বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, আরও গুরুতর যুদ্ধে জড়িয়ে না পড়ে এখনই এর রাশ টেনে ধরে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের জন্য দুই দেশের প্রতি আহ্বান জানান তাঁরা।

অন্তর্বর্তী সরকারকে আন্তর্জাতিক সংহতির ডাক দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে গণসংহতি আন্দোলন বলেছে, বাংলাদেশের মানুষ এই মুহূর্তে যে রাজনৈতিক উত্তরণ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, সেখানে সবার ঐক্যবদ্ধতা অত্যন্ত জরুরি।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জাতিসংঘের সম্মেলন রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের বড় সুযোগ সৃষ্টি করবে, আশা নিরাপত্তা উপদেষ্টার

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান বলেছেন, রোহিঙ্গাবিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন জাতিসংঘের উদ্যোগে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর আগে কক্সবাজারের অনুষ্ঠেয় সম্মেলনটি জাতিসংঘের একটি বৃহত্তর সম্মেলনের প্রস্তুতির অংশবিশেষ। এই সম্মেলন রোহিঙ্গাদের জন্য এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য এ সমস্যার একটি স্থায়ী ও প্রকৃত সমাধান খুঁজে বের করার পথনির্দেশিকা দেওয়ার একটি বড় সুযোগ।

২৫ আগস্ট কক্সবাজারে ‘অংশীজন সংলাপ: রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে আলোচনার জন্য প্রাপ্ত বার্তা’ শীর্ষক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ নিয়ে ঢাকায় থাকা কূটনীতিকদের এ বিষয়ে আজ রোববার সকালে ব্রিফ করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি তুলে ধরে কক্সবাজারের সম্মেলনে যোগ দিয়ে সফল করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

ব্রিফিংয়ে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাস্ট্র, চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ দেশ এবং জোট মিলিয়ে ৫০টি মিশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

কূটনীতিকদের ব্রিফিং শেষে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান বলেন, একসময় রোহিঙ্গা ইস্যুটি আন্তর্জাতিক আলোচনার এজেন্ডা থেকে প্রায় বাদ পড়ে যাচ্ছিল। এই পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা গত বছর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজনের জন্য সব সদস্যরাষ্ট্রকে আহ্বান জানিয়েছিলেন। এই আহ্বানে তাৎক্ষণিকভাবে ও সর্বসম্মতিক্রমে সাড়া পাওয়া যায় এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ এই সম্মেলন আহ্বানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। বিশ্বের ১০৬টি দেশ এই সম্মেলনকে স্পন্সর করেছে। এখন যথেষ্ট পরিমাণ আন্তর্জাতিক সমর্থন রয়েছে।

খলিলুর রহমান আরও বলেন, সম্মেলনটি রোহিঙ্গাদের জন্য এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য এই সমস্যার একটি স্থায়ী ও প্রকৃত সমাধান খুঁজে বের করার পথনির্দেশিকা দেওয়ার একটি বড় সুযোগ। এই কারণে রোহিঙ্গাদের কণ্ঠস্বর, তাদের কথা, তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা এবং তাদের স্বপ্নগুলোকে সে সম্মেলনে তুলে ধরার প্রচেষ্টা চলছে।

খলিলুর রহমান আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন, জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্রগুলোই এ ধরনের সম্মেলনে অংশ নেয়। রোহিঙ্গারা তো আর সদস্য নয়। কিন্তু কাউকে তো তাদের ভয়েসটা নিয়ে যেতে হবে। আমরা এ ধরনের প্রক্রিয়ায় সে কাজটা করছি। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে যথেষ্ট সাড়া পাচ্ছি।’

ব্রিফিংয়ে অংশ নেওয়া এক রাষ্ট্রদূত জানান, কক্সবাজার সম্মেলনের শিডিউল দেওয়া হয়েছে। এতে যোগ দিতে আহ্বান জানানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ