পাকিস্তানি ভূখণ্ডে ভারতের হামলার নিন্দা গণসংহতি আন্দোলনের
Published: 8th, May 2025 GMT
‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে ভারত যেভাবে পাকিস্তানি ভূখণ্ডে হামলা শুরু করেছে, তার নিন্দা জানিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন। তারা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সামরিক উত্তেজনা নিয়ে গভীর উদ্বেগও প্রকাশ করেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে গণসংহতি আন্দোলন বলেছে, এই দুই দেশের মধ্যকার চলমান সামরিক বিরোধ নিরসন করে তাদের আলোচনায় অংশ নেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সংহতির ডাক দিন।
আজ বৃহস্পতিবার গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান এক যৌথ বিবৃতিতে এসব বিষয় উল্লেখ করেছেন।
বিবৃতিতে জোনায়েদ সাকি ও আবুল হাসান বলেন, ইতিহাস ও ভবিষ্যৎ বিবেচনায় বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত ও পাকিস্তানের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। এ কারণেই বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে তাঁরা উদ্বিগ্ন। প্রতিবেশী দেশগুলোকে তাঁরা আরেকটি যুদ্ধে জড়াতে দেখতে চান না। তাঁরা ভারত ও পাকিস্তানের সেই মানুষদের পাশে আছেন, যাঁরা শান্তি, মর্যাদা ও স্থিতিশীলতা চান, সহিংসতা নয়।
গণসংহতি আন্দোলন বলেছে, একটি যুদ্ধ যেন জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে দুই দেশের সাধারণ মানুষের ওপর। কোটি কোটি সাধারণ মানুষের এই যুদ্ধ থেকে পাওয়ার কিছুই নেই। আছে শুধু ভয়, ধ্বংস আর অপূরণীয় ক্ষতির আশঙ্কা।
ভারতের এই হামলা একটা বিপজ্জনক সংঘাতের শুরু করতে পারে, যা ভারত আর পাকিস্তান ছাড়াও এই গোটা ভৌগোলিক অঞ্চলের সামগ্রিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি অশনিসংকেত বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, আরও গুরুতর যুদ্ধে জড়িয়ে না পড়ে এখনই এর রাশ টেনে ধরে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের জন্য দুই দেশের প্রতি আহ্বান জানান তাঁরা।
অন্তর্বর্তী সরকারকে আন্তর্জাতিক সংহতির ডাক দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে গণসংহতি আন্দোলন বলেছে, বাংলাদেশের মানুষ এই মুহূর্তে যে রাজনৈতিক উত্তরণ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, সেখানে সবার ঐক্যবদ্ধতা অত্যন্ত জরুরি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিবিসির বিশ্লেষণ: শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় কেন ভারতকে বিব্রত করবে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ভারতকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিবিসির গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স রিপোর্টার অ্যানবারাসান ইথিরাজান।
তিনি লিখেছেন, এখন আশা করা হচ্ছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হাসিনাকে ফেরানোর জন্য প্রত্যর্পণের অনুরোধ পাঠাবে। ২০২৪ সালের আগস্টে দেশ ছাড়ার পর থেকে তিনি ভারতে বসবাস করছেন।
আরো পড়ুন:
শেখ হাসিনার রায় নিয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া
বিচার স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিকমানের, প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই: জামায়াত
ঢাকার আগের দাবিগুলোর জবাব ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে দেয়নি। দুই দেশের মধ্যে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তিও রয়েছে।
তবে আইনি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি মনে হয় হাসিনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা সৎউদ্দেশ্যে করা হয়নি, তাহলে ভারত সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারে।
ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়ে তিনি ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। ভারতে তাকে ফেরত না পাঠানোর ব্যাপারে দেশটির সর্বদলীয় রাজনৈতিক পর্যায়েও এক ধরনের ঐকমত্য রয়েছে।
দিল্লির কাছে বাংলাদেশ শুধু প্রতিবেশী নয়, এটি কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য।
অ্যানবারাসান ইথিরাজান লিখেছেন, ভারত যেন টানটান করে বাঁধা দড়ির ওপর হাঁটছে; কারণ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে অস্বীকার করলে তা কূটনৈতিক অবজ্ঞা হিসেবে দেখা যেতে পারে, যা দুই দেশের সম্পর্ককে আরো খারাপ করতে পারে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে মামলায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এর আগে গত ১৩ নভেম্বর রায় ঘোষণার জন্য আজকের তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত।
ঢাকা/রাসেল